কুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যার মামলায় আরও ৬ জন গ্রেপ্তার
Published: 5th, July 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলায় মা ও দুই সন্তানকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যার মামলায় আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। আজ শনিবার ঢাকার বনশ্রী এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার মাহমুদুল হাসান আজ বেলা দুইটার দিকে প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, তিন খুনের ঘটনায় ছয়জনকে ঢাকার বনশ্রী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের পর তাঁরা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন। ঘটনার বিস্তারিত বিকেল ৫টায় ঢাকার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হবে বলে জানান তিনি। পরে গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানায় হস্তান্তর করা হবে।
আরও পড়ুনকুমিল্লায় মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যার ৩৯ ঘণ্টা পর মামলা, আটক ২২ ঘণ্টা আগেএদিকে, গতকাল শুক্রবার রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে দুজনকে আটক করা হয়। তাঁদেরও হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ দুপুরে তাঁদের কুমিল্লার আদালতে পাঠানো হয়। এ ঘটনা এখন পর্যন্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
হত্যাকাণ্ডের প্রায় ৩৯ ঘণ্টা পর গতকাল মধ্যরাতে থানায় মামলা হয়। মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে, অজ্ঞাতনামা আরও ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে কড়ইবাড়ি গ্রামে একই পরিবারের তিনজনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
আরও পড়ুনমুঠোফোন চুরিকে কেন্দ্র করে খেপিয়ে তোলা হয় এলাকাবাসীকে০৩ জুলাই ২০২৫নিহত ব্যক্তিরা হলেন খলিলুর রহমান ওরফে জুয়েলের স্ত্রী রোকসানা বেগম ওরফে রুবি (৫৩), ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) ও মেয়ে তাসপিয়া আক্তার ওরফে জোনাকি (২৯)। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন রোকসানার আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৭)। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে রাতে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গতকাল রাত ৯টার দিকে নিহত রোকসানার বড় মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। রাত ১২টার দিকে সেটি মামলা হিসেবে নেয় পুলিশ। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে স্থানীয় আকুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লালকে। এ ছাড়া মামলায় ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বাচ্চু মিয়া এবং স্থানীয় ব্যবসায়ী বাছির উদ্দিনকেও আসামি করা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লায় মা-দুই সন্তানকে পিটিয়ে হত্যার ২৪ ঘণ্টায়ও মামলা হয়নি
কুমিল্লার মুরাদনগরে মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন ডেকে এনে মা ও তার দুই সন্তানকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার ২৪ ঘণ্টা পরও থানায় মামলা হয়নি। পুলিশ বলছে, পরিবারের লোকজনকে ঘটনার পর থেকে খোঁজা হচ্ছে। আজ দুপুরের মধ্যে হয়তো পরিবারের লোকজন থানায় মামলা করবেন। কেউ না আসলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে। সমকালকে এসব তথ্য জানান বাঙরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজুর রহমান।
এদিকে কুমেক হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ সূত্রে জানা যায়, আজ দুপুর ১২টার দিকে তিনজনের মরদেহের ময়নাতদন্ত শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মুরাদনগর উপজেলার বাঙ্গরা বাজার থানার কড়ইবাড়ী গ্রামে এলাকাবাসী একটি মোবাইল ছিনতাই ও মাদক ‘ব্যবসার’ অভিযোগ তুলে মা ও তার দুই সন্তান পিটিয়ে হত্যা করে।
নিহতরা হলেন, ওই গ্রামের জুয়েল মিয়ার স্ত্রী রোকসানা আক্তার রুবি (৫৮), তার ছেলে ছেলে মো. রাসেল (৩৫) ও মেয়ে জোনাকি আক্তার (৩২)। হামলায় আহত হয়েছেন রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৫। তাকে শংকাটাপন্ন অবস্থায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কুমেক) ভর্তি করা হয়েছে।
বাঙরা বাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাহফুজুর রহমান সমকালকে বলেন, এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা আছে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে রুবির মেয়ের জামাই মনির হোসেনের সহযোগী মারুফ স্থানীয় স্কুল শিক্ষক রুহুল আমিনের একটি মোবাইল ছিনতাই করে। এ ঘটনার জেরে বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া এবং আকাবপুর ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল রুবিকে জিজ্ঞাসা করতে গেলে তাদের ওপর হামলা করা হয়। এতে এলাকায় চরম উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ সময় ইউপি চেয়ারম্যান শিমুল বিল্লাল এবং ইউপি সদস্য বাচ্চু মিয়া দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। খবর পেয়ে এলাকার শতাধিক লোক ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদেরকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই রুবি, তার ছেলে রাসেল এবং মেয়ে জোনাকি নিহত হয়। আহত হয় আরেক মেয়ে রুমা আক্তার।