চাঁদাবাজি ও দখলবাজি করলে পুলিশে দেওয়া হবে: বিএনপি নেতা আযম খান
Published: 6th, July 2025 GMT
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান বলেছেন, দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি ও দখলবাজি করার অভিযোগ প্রমাণিত হলে শুধু দল থেকে বহিষ্কার নয়, তাঁকে ধরে পুলিশে দেওয়া হবে। গতকাল শনিবার বিকেলে টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার গড়বাড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে কাঁকড়াজান ইউনিয়ন বিএনপির কর্মিসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
আযম খান বলেন, ‘শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন, কিন্তু দেশকে নিঃস্ব করে দিয়ে গেছেন। ১৭ বছর বাংলাদেশে একটি কালো অধ্যায় ছিল। তিনি যেমন করে আমাদের ভোটের অধিকার ও গণতন্ত্র হরণ করেছিলেন, ঠিক তেমনিভাবেই বাংলাদেশের সম্পদও লুটে নিয়েছিলেন। দেশের ব্যাংকগুলোকে খালি করে দিয়েছিলেন। পৃথিবীর ইতিহাসে এটি একটি বিরল ঘটনা যে একটি সরকারের উদ্যোগে একটি দেশ লুট হয়ে যায়! সরকারি হিসাব অনুযায়ী, ব্যাংক থেকে ২৮ লাখ কোটি টাকা লুট হয়ে গেছে। এই পরিমাণ টাকা কাছাকাছি পাঁচ বছরের বাংলাদেশের বাজেট। অন্যদিকে বেসরকারি হিসাবে প্রায় ৪০ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। অর্থাৎ দেশটাকে একেবারে দেউলিয়া করে জনগণের আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে বন বিভাগের দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্ব প্রসঙ্গে বিএনপির এই নেতা বলেন, বন বিভাগের কর্মকর্তাদের স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই—যে জায়গায় বন করতে চান, তা আপনাদের নয়; ওই জমিগুলো সখীপুরের মানুষের। যারা ওই জমিতে শত শত বছর ধরে বসবাস করছেন। আপনারা বনের জায়গায় বনায়ন করেন, আমরা এতে সহযোগিতা করব। কিন্তু সখীপুরের মানুষের বসবাসের জমি ও চাষের জমিতে বনায়ন করতে দেওয়া হবে না। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এই এলাকার মানুষের মরণফাঁদ আটিয়া বন অধ্যাদেশ ৮২ নামের কালো অধ্যাদেশটি বাতিলের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।
কর্মিসভায় উপজেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান সাজুর সভাপতিত্বে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল বাছেত, পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মীর আবুল হাশেম, এস এম সবুর রেজা, আকবর হোসেন, কাঁকড়াজান ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক আমীর হামজা, সদস্যসচিব মোজাম্মেল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন। এ সময় স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
আমাদের স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা আজো পূরণ হয়নি: সারজিস আলম
৫ আগস্ট এই দেশকে নিয়ে যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে আশা-আকাঙ্ক্ষা ছিল, তা এখনো পূরণ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
রবিবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজশাহীতে এনসিপির জুলাই পথযাত্রা শেষে নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। সমাবেশে পার্টির অন্য কেন্দ্রীয় নেতারাও ছিলেন।
সারজিস আলম বলেন, “২০২৪ এর জুলাইয়ের পর নতুন জুলাই এসেছে। কিন্তু আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। মনের ভেতরে এখনো আফসোস কাজ করে। গত ৫ আগস্টে এই দেশকে নিয়ে যে স্বপ্নগুলো দেখেছিলাম, সেগুলো এখনো পূরণ হয়নি। কিন্তু যে শহীদরা জীবন দিয়ে গেল, যে সহযোদ্ধারা রক্ত দিল, তাদের আমানত আমরা খেয়ানত করতে পারি না। তাই যতদিন না আমাদের দেখা স্বপ্নগুলো পূরণ হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত আমাদের এই জুলাই চলবে। আমাদের এই লড়াই চলবে। এই উদ্দেশ্যে ৬৪টি জেলায় আমরা যাচ্ছি।”
আরো পড়ুন:
একটি দলের কারণে মৌলিক সংস্কার আটকে যাচ্ছে: আখতার
চিপায় পড়ে ডিসি-এসপিরা ভাল ব্যবহার করছেন: হাসনাত
তিনি বলেন, “আওয়ামী লীগের সময় আমরা দেখেছি। আপনি সবাইকে নিয়ে কথা বলেন, কিন্তু শেখ হাসিনাকে নিয়ে কথা বলা যাবে না। শেখ হাসিনা ফেরেস্তাদেরও ওপরে। ঠিক এই কারণে ফেরেস্তো থেকে ফেরাউন, ফেরাউন থেকে স্বৈরাচার হয়ে উঠেছে। আগামীর বাংলাদেশে যত বড়ই দল হোক, যত বড় নেতা কিংবা নেত্রী হোক, কাউকেই প্রশ্নের উর্দ্ধে রাখা হবে না।”
পুলিশ-প্রশাসনকে সতর্ক করে তিনি আরো বলেন, “বাংলাদেশের প্রশাসন থেকে পুলিশ, ডিসি থেকে এসপি, ওসি থেকে ইউএনও সবাইকে একটা কথা স্পষ্ট করে বলে রাখি, যদি আপনি জেলা-উপজেলার ডিসি, এসপি, ওসি বা ইউএনও হয়ে উঠতে পারেন, তাহলে ভাল। আর যদি আপনি কোনো দলের হয়ে ওঠেন, তাহলে আওয়ামী লীগের কথা স্মরণ করুন। আপনার অবস্থাও ওই একই রকম হবে। কোনো চাটুকারের আর জায়গা হবে না এই বাংলাদেশে।”
এই ছাত্রনেতা বলেন, “এই উত্তরাঞ্চলে আমরা এতদিন যে বৈষম্যের শিকার হয়েছি, আগামীতে যে দলই ক্ষমতায় আসুক না কেন, যদি সেটা এনসিপিও হয়, আমরা এই বৈষম্য মেনে নেব না। চাঁদাবাজ, দখলবাজের বড় পরিচয় সে চাঁদাবাজ, দখলবাজ। যে সিন্ডিকেট চালায়, তার সবচেয়ে বড় পরিচয় সে রক্তচোষা। এদের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে হবে। এদের ছেড়ে দিলে হাসিনার মতো আরো স্বৈরাচার এই দেশে তৈরি হবে। আগামীর বাংলাদেশে আর কোনো স্বৈরাচার তৈরি হতে দেব না।”
এ সময় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্য সচিব আখতার হোসাইন, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ মুখ্য, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দিন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম-সদস্য সচিব ডা. তাসনিম জারা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/কেয়া/মেহেদী