সন্ত্রাস ও অর্থের প্রভাবমুক্ত রাজনীতির প্রত্যয় এনসিপির: নওগাঁয় আখতার
Published: 6th, July 2025 GMT
রাজনীতির মাঠে সন্ত্রাস, পেশিশক্তি ও অর্থের দাপট বন্ধ করে একটি কল্যাণমুখী, মানবিক ও জনগণভিত্তিক রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন।
আজ রোববার বেলা ১১টায় নওগাঁ শহরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।
আখতার বলেন, ‘আমরা এমন একটি রাজনীতি চাই, যেখানে নেতৃত্ব আসবে মানুষের ভালোবাসা ও আস্থার মাধ্যমে। যেখানে দেশ ও জনগণের কল্যাণ থাকবে কেন্দ্রে। সন্ত্রাস, অর্থ বা গায়ের জোরের কোনো স্থান থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত রাজনীতি হলো ত্যাগ ও জনসেবার জায়গা থেকে পরিচালিত। নেতৃত্বে প্রতিযোগিতা থাকতে পারে, ভালো কাজের প্রতিযোগিতা থাকতেও পারে, কিন্তু সেখানে হিংসা, দ্বন্দ্ব, বিভাজন এবং প্রভাব খাটানোর সংস্কৃতি চলতে পারে না। এনসিপি এ মূল্যবোধেই বিশ্বাস করে।’
‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ শীর্ষক ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে আখতার হোসেন নওগাঁ সফর করেন। এই পদযাত্রা উপলক্ষে শহরে প্রবেশের সময় সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ ও আগ্রহের কথা তুলে ধরেন তিনি।
আখতার বলেন, পদযাত্রা চলাকালে নওগাঁ শহরে জনসাধারণের ঢল নামে। স্লোগানে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে শহর। এতে বোঝা যায় মানুষ নতুন রাজনৈতিক ধারার খোঁজে আছে। তারা আগের মতো আর বিভ্রান্ত হতে চায় না।
তবে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, নওগাঁ শহরের অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোর অবস্থা অত্যন্ত করুণ। একটি সম্ভাবনাময় জেলা হিসেবে নওগাঁর উন্নয়ন খুবই জরুরি। এখানকার অবকাঠামোগত সংকট, বেকারত্ব এবং জীবনমানের চ্যালেঞ্জগুলোকে গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আখতার হোসেন জানান, নওগাঁতে এনসিপির বার্তা ব্যাপকভাবে পৌঁছেছে এবং নানান শ্রেণি-পেশার মানুষের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। শুধু তরুণ নয়, প্রবীণ, মধ্যবয়সী, নারী-পুরুষ, এমনকি শহীদ পরিবারের সদস্যরাও আমাদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন। এনসিপি যে কেবল তরুণদের দল, নওগাঁ সফর সে ভুল ধারণা ভেঙে দিয়েছে।
এনসিপির এই নেতা বলেন, রিকশাচালক, কৃষক, শ্রমিক থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত আমাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিকে আপন করে নিচ্ছেন। এটা আমাদের বড় অনুপ্রেরণা।
আখতার হোসেন জানান, ইতোমধ্যে নওগাঁয় এনসিপির একটি সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তা দ্রুত মাঠপর্যায়ে কাজ শুরু করেছে। স্থানীয় নেতাকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে তারা গ্রাম থেকে শহর প্রত্যন্ত অঞ্চলেও সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছান এবং দেশের নতুন ভবিষ্যৎ নির্মাণে এনসিপির বার্তা তুলে ধরেন।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই, এনসিপি হবে সাধারণ মানুষের প্ল্যাটফর্ম। যারা নিঃস্বার্থভাবে দেশকে ভালোবাসেন, পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেন তাদের জন্য এই দল হবে নতুন আশ্রয়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র জন ত এনস প আখত র হ স ন এনস প র র জন ত
এছাড়াও পড়ুন:
মেয়েকে নৌকায় বসিয়ে নদীতে ডুব দিয়ে আর উঠতে পারেননি তিনি
চার বছর বয়সী মেয়ে রুসফিয়াকে নিয়ে বাড়ির পাশের করতোয়া নদীতে গোসল করতে গিয়েছিলেন মাসুম আল মামুন (৪২)। নদীর ধারে বেঁধে রাখা নৌকায় মেয়েকে বসিয়ে রেখে পানিতে ডুব দিয়েছিলেন তিনি। বেশ কিছুক্ষণ বাবাকে উঠতে না দেখে দৌড়ে বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি মাকে জানায় রুসফিয়া। পরে শুরু হয় খোঁজাখুঁজি। পরে প্রায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর উদ্ধার হয়েছে মাসুমের লাশ।
রোববার বিকেলে পঞ্চগড় পৌরসভার আহমদনগর এলাকাসংলগ্ন করতোয়া নদীতে এ ঘটনা ঘটে। মৃত মাসুম আল মামুনের বাড়ি আহমদনগর এলাকায়। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। পেশায় তিনি ব্যবসায়ী ছিলেন।
নিহত মাসুম আল মামুনের মামাতো ভাই জাফর আহমদ বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নদীতে নেমে তাঁকে খুঁজতে শুরু করেন। পরে বিকেল ছয়টার দিকে পানির নিচে মাসুমকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তিনি বলেন, তাঁরা শুনেছেন মাসুমের হৃদ্রোগ ছিল। পানিতে ডুব দেওয়ার পর তাঁর হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে তাঁরা ধারণা করছেন।
পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায় বলেন, ‘খবর পেয়ে বিকেল পাঁচটার দিকে আমরা নিখোঁজ ওই ব্যক্তিকে উদ্ধারে নদীতে নামি। এ সময় আমাদের সঙ্গে স্থানীয় লোকজনও নদীতে নেমেছিলেন। প্রায় ৪৫ মিনিট খোঁজাখুঁজির পর হঠাৎ করেই স্থানীয় একজনের পায়ে মানুষের শরীরের মতো কিছু একটা লাগে। পরে সেখান থেকে মাসুম আল মামুনের লাশ খুঁজে পাই। পরে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।’
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লা হিল জামান বলেন, এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর (ইউডি) মামলা ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশ হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে।