রাতের অন্ধকারে ভারতে আওয়ামী লীগ নেতা, সীমান্ত পেরিয়েই গ্রেপ্তার
Published: 8th, July 2025 GMT
৫ আগস্টের পর থেকে ছিলেন আত্মগোপনে। সম্প্রতি সেই গোপন ঠিকানা অভ্যুত্থানকারীদের নজরে এসেছিল। এসেছিল হুমকি। আর তারপরেই প্রাণভয়ে রাতের অন্ধকারে ভারতে পলায়ন। তবে শেষ রক্ষা হলো না। বিএসএফের গুলির মুখে প্রাণ হাতে নিয়ে সীমান্ত পেরিয়ে নিরাপদে ভারতে পৌঁছে যাবার পরেও শেষমেশ পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন পাবনার এক আওয়ামী লীগ নেতা।
পশ্চিমবঙ্গ পুলিশ সূত্রে জানানো হয়েছেম সোমবার গভীর রাতে মুর্শিদাবাদ জেলার রানীতলা থানার পুলিশ হরিরামপুর ঘাট সংলগ্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম সোহেলকে। ৪৫ বছর বয়সী সোহেল বাংলাদেশের পাবনা জেলার পাবনা সদর থানার অন্তর্গত কাছারিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
জানা গেছে, এই নজরুল বাংলাদেশের সাবেক ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের জেলা পরিষদের নেতা। এমনকি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ট বলেও জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
পশ্চিমবঙ্গের নাগরিককে এনআরসির নোটিশ ধরালো আসাম সরকার!
রাশমিকার সঙ্গে জুটি বাঁধতে বিজয়ের কেন আপত্তি?
গোপন সূত্রে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে রানীতলা থানার ওসি অর্জিত ঘোষের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল এই অভিযান চালায়। নজরুল ইসলামকে আটক করার পর, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর থেকে তিনি চরম প্রতিহিংসার শিকার। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে তার উপর হামলা, নিপীড়ন শুরু হয়—ঘরবাড়ি ভাঙচুর, শারীরিক নিগ্রহ, এমনকি প্রাণনাশের হুমকি পর্যন্তও দেওয়া হয়।
পুলিশের কাছে তিনি বলেন, “আমি এলাকায় থাকলে মেরে ফেলা হতো। শেখ হাসিনা যেহেতু ভারতে আশ্রয় নিয়েছেন, আমিও সেই পথেই এসেছি নিজের প্রাণ বাঁচাতে।”
পুলিশের কাছে সোহেল আরো জানান, তার এই গোপন অনুপ্রবেশের মূল উদ্দেশ্য রাজনৈতিক আশ্রয় গ্রহণ।
এই ঘটনায় গোটা সীমান্ত জুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর মধ্যে তৎপরতা বেড়েছে। একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের এইভাবে অনুপ্রবেশ প্রশাসনিক মহলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। সূত্রের খবর, গোয়েন্দা বিভাগ এবং কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা সংস্থাও ইতিমধ্যে বিষয়টি খতিয়ে দেখা শুরু করেছে।
গ্রেপ্তারকৃত সোহেলের বিরুদ্ধে ১৪ ফরেনারস্ আইন, পাসপোর্ট আইনসহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোহেলকে মঙ্গলবার লালবাগ মহকুমা আদালতে তোলা হবে বলে রানীতলা থানার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
কাজ না করেই অর্ধেক টাকা তুলে নেন ঠিকাদার
সড়কে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের প্রতিবাদে গাজীপুরের কাপাসিয়ায় মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী। এমনকি ওই সড়কের কাজ না করেই অর্ধেক টাকা উঠিয়ে নেওয়ার অভিযোগ করেন তারা। গতকাল সোমবার দুপুরে সদর ইউনিয়নের সূর্য নারায়ণপুর এলাকার কর্মসূচিতে শতাধিক মানুষ অংশ নেন। তারা সড়কটির কাজ যথাযথভাবে করার দাবি জানান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সূর্য নারায়ণপুরের আব্দুর রশিদের বাড়ি থেকে বক্তারটেক পর্যন্ত ২৮০ ফুট দীর্ঘ রাস্তাটিতে ইট বিছিয়ে (সলিং) ৮ ফুট চওড়া করার কথা। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয়ের অধীনে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পের আওতায় এ কাজের প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা। সদর ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আল আমিন পালোয়ান এ কাজের ঠিকাদার। কিন্তু এলাকাবাসী সড়কটিতে নিম্নমানের ইট ব্যবহার ও বালু না দিয়েই কাজ শুরুর অভিযোগ করেছেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আল আমিন পালোয়ান একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। যে কারণে গত সরকারের আমলে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ না করেই টাকা আত্মসাৎ করেছেন। গণঅভ্যুত্থানের পর একাধিক মামলায় আসামি হয়ে পালিয়ে যান। কিন্তু সম্প্রতি এলাকায় এসে ওই সড়কের কাজ না করেই অর্ধেক টাকা উঠিয়ে নিয়েছেন। নিম্নমানের সামগ্রী বসানোর প্রতিবাদ করলে এলাকাবাসীর বিরুদ্ধে চাঁদা দাবির গুজব ছড়িয়েছেন তিনি। এমনকি নানা মাধ্যমে আল আমিন হুমকিও দিচ্ছেন।
সেখানে বক্তব্য দেন অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা মঈনুল ইসলাম, ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল বাসার কাজল, মো. রানা শেখ প্রমুখ। তাদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে আল আমিন পালোয়ানের নম্বরে কল দিয়েও সংযোগ মেলেনি।
কাপাসিয়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. তামান্না তাস্নীম বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সরেজমিন পরিদর্শনে যেতে বলেছেন। তিনি এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।