সাটুরিয়ায় আওয়ামী লীগের ৪ জন গ্রেপ্তার, ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করায় গ্রেপ্তার আরও ৪
Published: 8th, July 2025 GMT
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরপর থানা থেকে তাঁদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সাটুরিয়া থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার আসামিদের থানা প্রাঙ্গণ থেকে প্রিজন ভ্যানে মানিকগঞ্জ সদর থানায় নেওয়ার সময় তাঁদের আত্মীয়স্বজনেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে সাটুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.
সাটুরিয়া থানা–পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে পৃথক অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন ওরফে বাকা (৫৬), উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল খালেক (৪৫), সাটুরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন (৫৪) ও উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী গোলাম রাব্বি (২৬)।
ছাত্রলীগের কর্মী গোলাম রাব্বির বাড়ি সাটুরিয়া থানাসংলগ্ন উত্তর কাউন্নারা গ্রামে। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা থানা প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। একইভাবে অন্য তিন আসামির স্বজনেরাও থানা ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। এতে থানার আশপাশে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সদর থানায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় আত্মীয়স্বজনেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, আজ দুপুরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার চার আসামি, ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে গ্রেপ্তার চারজনসহ মোট আটজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঝিনাইদহে এসআই মিরাজুল হত্যা: চারজনের মৃত্যুদণ্ড, চারজনের যাবজ্জীবন
ঝিনাইদহের ডাকবাংলো পুলিশ ক্যাম্পের সাবেক ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) মিরাজুল ইসলাম হত্যা মামলায় চারজনকে মৃত্যুদণ্ড ও চারজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মাহাবুব আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ আদালত পুলিশের পরিদর্শক মোক্তার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আমজাদ হোসেনকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য সাত আসামি পলাতক।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন রাজবাড়ীর নিমতলা এলাকার আমজাদ হোসেন, লিয়াকত হোসেন, দক্ষিণ দৌলতদিয়ার আক্কাস আলী ও ফরিদপুরের ভাটি লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলম শেখ। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন ফরিদপুরের শোভারামপুর গ্রামের শাহীন, গোয়ালচামট গ্রামের মোহাম্মদ সাগর, টাপাখোলা গ্রামের নুরু খাঁ ও যশোরের শেখহাটি খাঁপাড়ার মনির হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট রাতে ঝিনাইদহ শহরের বাস মালিক সমিতি অফিসের সামনে একটি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ দেখে আরোহীরা পালিয়ে যান। এ সময় দেখা যায় মোটরসাইকেলটি ডাকবাংলো পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ উপপরিদর্শক মিরাজুল ইসলামের। কিন্তু তখন মিরাজুলের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ জানতে পারে, ওই দিন সন্ধ্যায় মিরাজুল ইসলাম ইফতার করে প্রয়োজনীয় কাগজ, নিজের নামে ইস্যুকৃত পিস্তল, গুলি, ম্যাগাজিনসহ অন্যান্য কাগজ নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে ঝিনাইদহ শহর থেকে কর্মস্থলে রওনা হন। পরদিন সকালে ভেটেরিনারি কলেজের পূর্ব পাশের পানিভর্তি ডোবায় মিরাজুল ইসলামের হাত–পা বাঁধা মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় সদর থানায় অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করে পুলিশ। এজাহারে বলা হয়, মিরাজুল ইসলামের কাছে থাকা অস্ত্র ও মালামাল ছিনিয়ে নিতে তাঁকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। ২০১২ সালের ২৮ জানুয়ারি ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।