মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে করা মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের চার নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এরপর থানা থেকে তাঁদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনায় আরও চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় সাটুরিয়া থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, সন্ধ্যায় গ্রেপ্তার আসামিদের থানা প্রাঙ্গণ থেকে প্রিজন ভ্যানে মানিকগঞ্জ সদর থানায় নেওয়ার সময় তাঁদের আত্মীয়স্বজনেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সকালে সাটুরিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.

আব্বাছ উদ্দিন বাদী হয়ে মোট পাঁচজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতনামা ৩০ থেকে ৪০ জনকে আসামি করে মামলা করেন। গ্রেপ্তার চারজন হলেন উত্তর কাউন্নারা গ্রামের আছর উদ্দিন (৫০), তাঁর স্ত্রী রোজিনা বেগম (৪৫), ছেলে রিফাত ইসলাম (১৭) ও পুত্রবধূ আজরিন আক্তার (১৯)।

সাটুরিয়া থানা–পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেলে পৃথক অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁরা হলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন ওরফে বাকা (৫৬), উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল খালেক (৪৫), সাটুরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন (৫৪) ও উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মী গোলাম রাব্বি (২৬)।

ছাত্রলীগের কর্মী গোলাম রাব্বির বাড়ি সাটুরিয়া থানাসংলগ্ন উত্তর কাউন্নারা গ্রামে। তাঁকে গ্রেপ্তারের পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা থানা প্রাঙ্গণে ভিড় করেন। একইভাবে অন্য তিন আসামির স্বজনেরাও থানা ফটকের সামনের সড়কে অবস্থান নেন। এতে থানার আশপাশে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এবং সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের সদর থানায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় আত্মীয়স্বজনেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাটুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, আজ দুপুরে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার চার আসামি, ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা ও সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগে গ্রেপ্তার চারজনসহ মোট আটজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে কেমন খেলল আনচেলত্তির ব্রাজিল

গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন ‘ফর্ম’ বা ‘আইডিয়াজ’-এর কথা। তাঁর মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি চিরস্থায়ী, নিখুঁত ও আদর্শ রূপ আছে। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি, তা আসলে সেই নিখুঁত রূপেরই অনুকরণ। যেমন কালো রঙের একটা নিখুঁত ধারণা আমাদের মনের ভেতরে আছে বলেই আমরা চারপাশে কালো রঙের নানা রূপ দেখি। বাস্তবে আমরা যে কালো দেখি, সেটা আসলে সেই নিখুঁত কালোরই প্রতিলিপি।

ফুটবলকে যদি প্লেটোর এই ধারণার আলোকে দেখি, তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৃষ্টি ‘জোগো বনিতো’কে নিখুঁত ফুটবল বলা যায়। আমরা যে ফুটবলের নান্দনিকতা, কৌশল আর সৌন্দর্য দেখি, তা মূলত সেই নিখুঁত ফুটবলেরই প্রতিফলন। আমাদের চোখ সব সময় সেই আদর্শ ফুটবল খুঁজে বেড়ায়। কোথাও তার আভাস পেলেই আমরা উল্লসিত হয়ে উঠি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা থাকে ব্রাজিলের কাছেই, যারা নিজেরাও অনেক আগেই সেই খেলা পেছনে ফেলে এসেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে আবারও সামনে এসেছে ‘জোগো বনিতো’র আলাপ। সেদিন ৯০ মিনিট ধরে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। এরপরই কিছু সংবাদমাধ্যম ও সমর্থক প্রশ্ন তোলে—ব্রাজিলের ‘জোগো বনিতো’ কি আবার ফিরে এল? তবে প্লেটোর ফর্মের যুক্তি মেনে নিলে, সেই নিখুঁত রূপ আসলে কোথাও নেই।

আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যা বললেন ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি১০ অক্টোবর ২০২৫

বরং মনে হয়, ব্রাজিলও হয়তো ভুলে গেছে সেই রূপটা কেমন ছিল। কিন্তু হারানো ঐতিহ্যের প্রতি টানই মাঝেমধ্যে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই খেলার কথা। ‘জোগো বনিতো’র আলোচনাটা সরিয়ে রাখলেও, সেদিন ৫–০ গোলে জেতার পথে ব্রাজিলের ফুটবল সত্যিই ছিল চোখধাঁধানো। অনেক দিন পর সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন। যদিও পরের ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে সেই ব্রাজিলকে পাওয়া গেল সামান্যই।

প্রথমার্ধে ২–০ গোলে এগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। আনচেলত্তি এ ম্যাচে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবু প্রশ্ন উঠতেই পারে—আসল ব্রাজিল কোনটা? দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া দল, নাকি জাপানের বিপক্ষে এগিয়েও হেরে যাওয়া দল? হয়তো আসল ব্রাজিলকে খুঁজতে হবে এই দুই রূপের মাঝামাঝি কোথাও।

ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি

সম্পর্কিত নিবন্ধ