ভারতের গুজরাটে ভদোদরার পাদ্রা তালুকায় গম্ভীরা-মুজপুর সেতুর একটি অংশ ধসে পড়েছে। বুধবার সকালে ব্যস্ততম সড়কে হঠাৎ ধসে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।

বুধবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  এ সময় অন্তত তিনজন নিহত হন এবং কয়েকটি গাড়ি মহিসাগর (মাহি) নদীতে পড়ে যায়। আহত হয়েছেন আরও অন্তত তিনজন।

ভেঙে পড়া এ সেতুটি ভদোদরা ও আনন্দ জেলাকে সংযুক্ত করেছে। এটি ভেঙে পড়ায় দুটি ট্রাক, একটি বোলেরো এসইউভি এবং একটি পিকআপ ভ্যান পানিতে তলিয়ে যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হঠাৎ বিকট শব্দ শোনা যায়, তারপরই সেতুর একটি অংশ ভেঙে যানবাহনগুলো পানিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে দমকল বাহিনী, স্থানীয় পুলিশ ও ভদোদরা জেলা প্রশাসন উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারাও উদ্ধারকাজে যোগ দেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনার পর প্রশাসন এলাকা ঘিরে রেখেছে। এ ছাড়া সেতুধসের কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, মধ্য গুজরাটকে সৌরাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত ছিল। এক বাসিন্দা বলেন, অনেকবার সতর্ক করার পরও সেতুর ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা উপেক্ষা করা হয়েছে। এটি শুধু দুর্ঘটনার জন্য নয়, আত্মহত্যার জায়গা হিসেবেও কুখ্যাত।

কংগ্রেস নেতা অমিত চাভদা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, আনন্দ ও ভদোদরা জেলার মূল গম্ভীরা সেতু ধসে পড়েছে। এসময় অনেক গাড়ি নদীতে পড়েছে। এতে বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। প্রশাসনকে দ্রুত উদ্ধার অভিযান চালিয়ে বিকল্প রাস্তা চালু করতে হবে।

প্রশাসন জানিয়েছে, শিগগির এলাকার অন্যান্য সেতুরও টেকনিক্যাল পরিদর্শন ও নিরাপত্তা অডিট করা হবে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের বিপক্ষে দুই ম্যাচে কেমন খেলল আনচেলত্তির ব্রাজিল

গ্রিক দার্শনিক প্লেটো বলেছিলেন ‘ফর্ম’ বা ‘আইডিয়াজ’-এর কথা। তাঁর মতে, প্রতিটি জিনিসের একটি চিরস্থায়ী, নিখুঁত ও আদর্শ রূপ আছে। আমরা পৃথিবীতে যা দেখি, তা আসলে সেই নিখুঁত রূপেরই অনুকরণ। যেমন কালো রঙের একটা নিখুঁত ধারণা আমাদের মনের ভেতরে আছে বলেই আমরা চারপাশে কালো রঙের নানা রূপ দেখি। বাস্তবে আমরা যে কালো দেখি, সেটা আসলে সেই নিখুঁত কালোরই প্রতিলিপি।

ফুটবলকে যদি প্লেটোর এই ধারণার আলোকে দেখি, তবে ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের সৃষ্টি ‘জোগো বনিতো’কে নিখুঁত ফুটবল বলা যায়। আমরা যে ফুটবলের নান্দনিকতা, কৌশল আর সৌন্দর্য দেখি, তা মূলত সেই নিখুঁত ফুটবলেরই প্রতিফলন। আমাদের চোখ সব সময় সেই আদর্শ ফুটবল খুঁজে বেড়ায়। কোথাও তার আভাস পেলেই আমরা উল্লসিত হয়ে উঠি। যদিও শেষ পর্যন্ত সেই প্রত্যাশা থাকে ব্রাজিলের কাছেই, যারা নিজেরাও অনেক আগেই সেই খেলা পেছনে ফেলে এসেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ ঘিরে আবারও সামনে এসেছে ‘জোগো বনিতো’র আলাপ। সেদিন ৯০ মিনিট ধরে অসাধারণ ফুটবল খেলেছিল ব্রাজিল। এরপরই কিছু সংবাদমাধ্যম ও সমর্থক প্রশ্ন তোলে—ব্রাজিলের ‘জোগো বনিতো’ কি আবার ফিরে এল? তবে প্লেটোর ফর্মের যুক্তি মেনে নিলে, সেই নিখুঁত রূপ আসলে কোথাও নেই।

আরও পড়ুনদক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দিয়ে যা বললেন ব্রাজিল কোচ আনচেলত্তি১০ অক্টোবর ২০২৫

বরং মনে হয়, ব্রাজিলও হয়তো ভুলে গেছে সেই রূপটা কেমন ছিল। কিন্তু হারানো ঐতিহ্যের প্রতি টানই মাঝেমধ্যে আমাদের মনে করিয়ে দেয় সেই খেলার কথা। ‘জোগো বনিতো’র আলোচনাটা সরিয়ে রাখলেও, সেদিন ৫–০ গোলে জেতার পথে ব্রাজিলের ফুটবল সত্যিই ছিল চোখধাঁধানো। অনেক দিন পর সমর্থকেরা হয়তো খেলা দেখে তৃপ্তির ঢেকুর তুলেছিলেন। যদিও পরের ম্যাচে জাপানের বিপক্ষে সেই ব্রাজিলকে পাওয়া গেল সামান্যই।

প্রথমার্ধে ২–০ গোলে এগিয়েও শেষ পর্যন্ত ৩–২ গোলে হেরে যায় ব্রাজিল। আনচেলত্তি এ ম্যাচে দলে অনেক পরিবর্তন এনেছিলেন। তবু প্রশ্ন উঠতেই পারে—আসল ব্রাজিল কোনটা? দক্ষিণ কোরিয়াকে উড়িয়ে দেওয়া দল, নাকি জাপানের বিপক্ষে এগিয়েও হেরে যাওয়া দল? হয়তো আসল ব্রাজিলকে খুঁজতে হবে এই দুই রূপের মাঝামাঝি কোথাও।

ব্রাজিল কোচ কার্লো আনচেলত্তি

সম্পর্কিত নিবন্ধ