বিশ্বকাপ ক্রিকেটের ইতিহাসে যুক্ত হলো আরও একটি নাম-ইতালি। ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে ইতালি ক্রিকেট দল। নেদারল্যান্ডসের হেগে আজ ইউরোপ অঞ্চলের বাছাইপর্বের শেষ দিনে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করে প্রথমবার বিশ্বকাপে উঠেছে ইতালি।

আগামী বছর ভারত ও শ্রীলঙ্কায় যৌথভাবে আয়োজিত হতে যাওয়া বিশ্বকাপে ইউরোপ থেকে জায়গা করেছে নেদারল্যান্ডসও। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ১৫টি দল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলা নিশ্চিত করেছে।

বাছাইয়ের চূড়ান্ত পর্বের মাধ্যমে ইউরোপ থেকে বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ ছিল দুটি দলের। গত এক সপ্তাহ ধরে নেদারল্যান্ডসের মাটিতে সে দুটি জায়গার জন্য লড়েছে মোট ৫টি দল। নেদারল্যান্ডস ও ইতালি ছাড়া অন্য তিনটি দল স্কটল্যান্ড, জার্সি ও গার্নসি। আজ বাছাইয়ের শেষ দিনে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারে ইতালি। প্রথমে ব্যাট করে ইতালি ৭ উইকেটে ১৩৪ রান তুললে ডাচরা ২০ বল হাতে রেখেই লক্ষ্যে পৌঁছে যায়।

তবে নেদারল্যান্ডসের কাছে হারলেও নেট রান রেটের কারণে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থান নিশ্চিত করে ইতালি। লিগ পদ্ধতির এই বাছাইপর্বে ৪ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৬ পয়েন্ট পেয়েছে নেদারল্যান্ডস। ইতালি ও জার্সি দুই দলের পয়েন্টই ৫ করে। তবে ইতালির রান রেট (‍+০.

৬১২) জার্সির (‍+০.৩০৬) চেয়ে বেশি হওয়ায় তারাই দ্বিতীয় হয়েছে।

২০০৭ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর পর এখন পর্যন্ত ২৪টি দল এই টুর্নামেন্টে খেলেছে। ২০২৬ আসরের মাধ্যমে ইতালি হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপের ২৫তম দল। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিলে হতে যাওয়া টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ইউরোপ থেকে খেলবে মোট চারটি দল। এর মধ্যে সাবেক চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড সর্বশেষ আসরের পারফরম্যান্স এবং আয়ারল্যান্ড র‍্যাঙ্কিংয়ের ভিত্তিতে আগেই জায়গা নিশ্চিত করেছে।

ইতালি ও নেদারল্যান্ডসের আগে ২০২৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করেছে আমেরিকা অঞ্চল থেকে কানাডা। এখনো বাছাইপর্বের মাধ্যমে ৫টি দলের টিকিট কাটা বাকি। সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে জিম্বাবুয়েতে আফ্রিকান অঞ্চলের বাছাই থেকে আসবে ২টি দল, অক্টোবরে ওমানে এশিয়া ও পূর্ব এশিয়া প্যাসিফিকের বাছাই থেকে আসবে বাকি ৩টি দল।

প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে জায়গা করা ইতালি ১৯৯৫ সালে আইসিসির সহযোগী সদস্য হলেও ক্রিকেটে নিয়মিত হয়েছে গত এক দশকে। বর্তমানে আইসিসি টি-টোয়েন্টি র‍্যাঙ্কিংয়ের ২৮তম স্থানে থাকা দলটিকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন জো বার্নস, যাঁর আছে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে ২৩ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর ব শ বক প ইউর প

এছাড়াও পড়ুন:

সিনিয়র ফুটবলারদের আরেকটা সুযোগ দেওয়া উচিত: ঋতুপর্ণা চাকমা

বাংলাদেশের ফুটবলের পোস্টার গার্ল ঋতুপর্ণা চাকমা। রাঙামাটির মগাছড়ি গ্রামের ঋতু, ফুটবলবোদ্ধাদের চোখে বাংলাদেশের মেসি। আগামী মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠেয় নারী এশিয়ান কাপ ফুটবলে বাংলাদেশ যে টিকিট কেটেছে, তার মূল কারিগর ২১ বছর বয়সী এ উইঙ্গার। মিয়ানমারে এএফসি উইমেন্স এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে দৃষ্টিনন্দন ৫ গোল করেন তিনি। যদিও কারও সঙ্গে তুলনায় যেতে চান না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনে অধ্যয়নরত ঋতু। মিয়ানমার থেকে ফিরে সোমবার সকালে ভুটান গেছেন লিগে খেলতে। সেখান থেকে নিজের পারফরম্যান্স, বাংলাদেশের অর্জন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনাসহ নানা বিষয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: চারদিক থেকে প্রশংসায় ভাসছেন। কেমন লাগছে, প্রথমবার এশিয়ান কাপে খেলতে যাচ্ছেন?

ঋতুপর্ণা চাকমা: প্রথমবারের মতো নারী এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করেছি– এটা আমাদের জন্য অনেক বড় অর্জন। অনেক ভালো লাগার বিষয়। এর আগে দু’বার আমরা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবার লক্ষ্য ছিল দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে এশিয়ার বড় মঞ্চে খেলার। সেই স্বপ্ন আমাদের পূরণ হয়েছে। দুটি সাফ চ্যাম্পিয়ন দলেরই সদস্য ছিলাম। সেই হিসেবে এবার এশিয়ান কাপে যাওয়াটা আমার জন্য বিশেষ কিছু।

সমকাল: এমন অর্জনের উদযাপন কি কম হলো? রাতে ঢাকায় পৌঁছে সকালেই ভুটান গেলেন।

ঋতুপর্ণা: হাতিরঝিলে এমন সংবর্ধনা অপ্রত্যাশিত ছিল। বাফুফে এত কষ্ট করে মধ্যরাতে আমাদের জমকালো সংবর্ধনা দিয়েছে। সে জন্য তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আসলে হাতে সময় ছিল না; ভুটানে লিগ খেলতে আসতে হয়েছে। 

সমকাল: মিয়ানমারের বিপক্ষে বাঁ পায়ে দ্বিতীয় গোলটি করেছিলেন। ভেবেছিলেন, গোল হবে?
 
ঋতুপর্ণা: আমি যে গোলগুলো করি, প্রায় সবই ডি-বক্সের বাইরে থেকে। এই পজিশন থেকে গোল করতে আমার ভালো লাগে। ফলে আত্মবিশ্বাস তো ছিলই।

সমকাল: মাঝে কোচ পিটার বাটলারের সঙ্গে আপনিসহ সিনিয়র খেলোয়াড়দের একটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। সাবিনাসহ বেশ কয়েকজন মিয়ানমারে ছিলেন না। তাতে খেলায় কোনো প্রভাব পড়েছে?

ঋতুপর্ণা: আমি চাই, আমাদের ক্যাপ্টেন (সাবিনা খাতুন) এবং বাকি যে সিনিয়র ফুটবলাররা আছেন, তাদের আবার দলে নেওয়া হোক। একটা সুযোগ দেওয়া হোক। পুরো সিনিয়র টিম যদি থাকে, তাহলে আমাদের জন্য ভালো হবে। আমাদের বন্ডিংটা অনেক ভালো। এই যে আমরা এশিয়ান কাপে কোয়ালিফাই করলাম, আমি মনে করি তাদেরও (সিনিয়র) টিমে থাকার দরকার ছিল।

সমকাল: মিয়ানমারে আপনার করা গোলগুলো দর্শনীয় ছিল। নিজের গোলের ভিডিও দেখেন?

ঋতুপর্ণা: হাজারবার দেখেছি। ম্যাচ শেষ করে রুমে এসে গোলের ভিডিও ক্লিপগুলো দেখেছি। নিজেও অবাক হয়েছি (হাসি...)।

সমকাল: অনেকেই আপনাকে বাংলাদেশের মেসি সম্বোধন করেন...

ঋতুপর্ণা: আমি আসলে কারও সঙ্গে নিজেকে তুলনা করি না। মেসি তো মেসিই। তাঁর সঙ্গে কারও তুলনা হয় না। এটা বেশি বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে। এই ফাঁকে একটা কথা বলি, আমি কিন্তু সিআর সেভেনের (ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো) ভক্ত। তাঁর মতো স্পট কিক নিতে আমার ভালো লাগে। 

সমকাল: এশিয়ান কাপের বাকি ১০ মাস। এই সময়টা কতটা চ্যালেঞ্জের?

ঋতুপর্ণা: এই সময়টা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জের। অস্ট্রেলিয়ায় এশিয়ান কাপে ভালো করতে হলে আমাদের এই কয়েক মাস কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। বড় বড় দেশের সঙ্গে ম্যাচ খেলতে হবে। প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারলে আমাদের শক্তি ও দুর্বলতাগুলো বুঝতে পারব। অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার আগে দুয়েকটা টিমের সঙ্গে  ম্যাচ খেলতে পারলে আমাদের জন্য অনেক ভালো হতো। আর তা যদি র‍্যাঙ্কিংয়ে বড়  কোনো দলের বিপক্ষে খেলতে পারি, তাহলে খুবই ভালো। 

সমকাল: এশিয়ান কাপ থেকে আটটি দলের বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ থাকবে। নিজেদের সম্ভাবনা দেখছেন?

ঋতুপর্ণা: এটা এখনও বলতে পারছি না। পরিস্থিতি কখন কোনো দিকে যাবে, সেটা সময়ই বলে দেবে। আমরা সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করব। এখন যেভাবে সেরাটা দিয়ে যাচ্ছি, ভবিষ্যতেও তা দিয়ে যাব। এশিয়ান কাপে প্রতিপক্ষ কারা হবে, তা এখনও জানি না। শুধু এশিয়ান কাপ নয়, বাংলাদেশকে অলিম্পিকের মতো বিশ্বমঞ্চে নিয়ে যেতে চাই।  

সমকাল: মিয়ানমার ম্যাচের পর কোচ বলেছিলেন, ভুটান লিগের চেয়েও বড় লিগে খেলার যোগ্য আপনি ...

ঋতুপর্ণা: ভুটানের লিগ খারাপ না। ভুটানে লিগ হয়, আমাদের দেশে তো সেটাও হয় না। ভুটানে ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে সংগঠক সবাই পেশাদার। কোচ বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যে কিংবা ইউরোপে খেলার যোগ্য আমি। তাঁর প্রশংসায় আমি খুশি। তবে কোনো প্রস্তাব পাইনি (হাসি ...)।

সমকাল: এশিয়ান কাপের আগে বাফুফের কাছে কোনো প্রত্যাশা আছে?

ঋতুপর্ণা: আমাদের আবাসন ব্যবস্থাপনার উন্নতি দরকার। পাশাপাশি ট্রেনিং সুবিধা বাড়ানো উচিত। বিদেশে গিয়ে ক্যাম্প করলে সবচেয়ে ভালো হয়। যেমন, ভাইয়েরা (পুরুষ জাতীয় দল) ম্যাচের আগে বিদেশি গিয়ে ক্যাম্প করেন। আমাদের কখনও নিয়ে যাওয়া হয়নি। যে কোনো দেশে নিয়ে গেলে মেয়েদের মনের শক্তি ও স্পিরিট বেড়ে যাবে বলে মনে করি। 

সমকাল: খেলার পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন, মানিয়ে চলতে পারছেন?

ঋতুপর্ণা: সমস্যা কিছুটা তো হয়ই। খেলার জন্য নিয়মিত ক্লাস করতে পারি না। রাতে ক্যাম্পে একটু সুযোগ পাই পড়ার। সত্যি করে বললে, খেলাধুলা আর পড়াশোনা একসঙ্গে চালিয়ে যাওয়া খুব কষ্টের (হাসি ...)। 

সমকাল: শুনেছি মায়ের জন্য আপনার মন খারাপ ...

ঋতুপর্ণা: খেলার আগে কিংবা পরে যখনই সময় পাই মায়ের সঙ্গে কথা বলি। মা ছয়-সাত মাস ধরে অসুস্থ। কিন্তু আমার মা জানে না তাঁর কী রোগ। তিনি চিকিৎসা নিচ্ছেন। আমি মাঠে নামি আমার মায়ের জন্য, দেশের জন্য। মায়ের কথা চিন্তা করেই খেলি। 

সমকাল : আপনার মায়ের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ঋতুপর্ণা: সমকালকেও ধন্যবাদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ন ডরাই’ এর বিনিময়ে বাংলাদেশে প্রথমবার মুক্তি পাচ্ছে নেপালি ছবি
  • তিন কারণে পণ্য রপ্তানিতে আগের মতোই প্রণোদনা পাবেন ব্যবসায়ীরা
  • ‘আঞ্চলিক প্রতিপক্ষ’ সৌদি আরবের সঙ্গে বৈঠকে ইরান
  • স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে ২০২৬ টি-২০ বিশ্বকাপের পথে ইতালি
  • স্কটল্যান্ডকে হারিয়ে ২০২৬ টি-২০ বিশ্বকাপে এক পা ইতালির 
  • বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ স্থগিত করে শ্রীলঙ্কা সফরের আলোচনা করছে ভারত
  • প্রথমবার মেয়ের সঙ্গে গাইলেন ন্যান্সি
  • সিনিয়র ফুটবলারদের আরেকটা সুযোগ দেওয়া উচিত: ঋতুপর্ণা চাকমা
  • আইপিওর অর্থ এসএমইতে বিনিয়োগ করবে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক