পুরোনো ঢাকার মিটফোর্ড (স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ) হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে (৩৯) নৃশংসভাবে হত্যার মামলায় পরিবারের দেওয়া তিন আসামির নাম বাদ দিয়ে নতুন তিনজনের নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন যুবদল সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না। এ সময় তিনি জানতে চান, কোনো ঘটনা ঘটলে তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এক বছরে হাজারো নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়েছে কিন্তু প্রশাসন কি তাদের বিষয়ে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে? 

শনিবার (১২ জুলাই) নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল। 

আবদুল মোনায়েম মুন্না অভিযোগ করে বলেন, ‘‘আমরা জানতে চাই, কারা, কী উদ্দেশ্যে তিন আসামিকে বাদ দিয়ে নতুন করে অন্য তিনজনকে আসামি করল?’’

দুই দিন আগের ঘটনা কেন শুক্রবার প্রচার হলো, এর পেছনে কারা জড়িত, সেটিও খুঁজে বের করার দাবি জানান তিনি। 

সংবাদ সম্মেলনে লাল চাঁদের বড় বোনের মেয়ে বীথি আক্তারের বরাত দিয়ে যুবদল সভাপতি বলেন, ‘‘পরিবার জানিয়েছে, তারা আসামি হিসেবে নাম দিয়েছে এমন তিনজনকে মামলার এজাহার থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজে যাদের দেখা গেছে, তাদের মামলার প্রধান আসামি করা হয়নি। এর কারণ বোধগম্য নয়।’’

একটি সুযোগসন্ধানী বিশেষ গোষ্ঠী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিলেকটিভ প্রতিবাদ করে বিএনপির বিরুদ্ধে বিবৃতি দিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘‘গতকাল খুলনায় যুবদলের বহিষ্কৃত একজন নেতাকে গুলি করে ও রগ কেটে হত্যা করা হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা জাতীয় গণমাধ্যমে এ নিয়ে কোনো প্রতিবাদ লক্ষ করা যাচ্ছে না। চাঁদপুরে খুতবা দেওয়ার সময় একজন ইমামের ওপর নারকীয় কায়দায় প্রাণনাশের লক্ষ্যে হামলা করা হয়েছে। রগ কেটে হত্যা করা একটি বিশেষ সংগঠনের দীর্ঘদিনের সহিংস রাজনৈতিক চর্চার এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। গতকালের দুটো ঘটনায় তারা জড়িত ছিল।’’

বর্তমানে প্রশাসনিক ব্যর্থতার কারণে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিপর্যস্ত বলেও মন্তব্য করেন তিনি। 

‘‘আমরা দায় অস্বীকার করিনি। কোনো ঘটনা ঘটলে তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিয়েছি। গতকাল ৫ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত এক বছরের মধ্যে হাজারো নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করেছি। কিন্তু প্রশাসন কি তাদের বিষয়ে যথাযথ আইনি বা প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়েছে?’’ জানতে চান যুবদল সভাপতি। 

ঢাকা/তারা//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব যবস থ ক র কর

এছাড়াও পড়ুন:

ঘাতক যতই প্রভাবশালী হোক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি খেলাফত মজলিসের

পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতাল এলাকায় বীভৎস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ঘাতক যতই প্রভাবশালী হোক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের। এই হত্যাকাণ্ড জাহেলি যুগের বর্বরতাকেও হার মানিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আহমদ আবদুল কাদের এসব কথা বলেন। দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

খুনিদের শাস্তির দাবি জানিয়ে আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ‘গত বুধবার রাজধানীর মিটফোর্ডে যে রোমহর্ষ ও বীভৎস হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে, তা জাহেলি যুগের বর্বরতাকে হার মানিয়েছে। একজন জীবন্ত মানুষকে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রস্তারাঘাতে হত্যা করা হচ্ছে, আর লোকজন দাঁড়িয়ে তা দেখছে। সন্ত্রাসীদের হাতে কোনো মারণাস্ত্র না থাকলেও নির্মম ঘটনায় কেউ বাধা দিতে এগিয়ে আসেনি। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই। ঘাতক যতই প্রভাবশালী হোক, দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।’

খেলাফত মজলিসের মহাসচিব বলেন, ‘হত্যাকাণ্ড–পরবর্তীতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্লিপ্ত ভূমিকা হতাশাজনক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘটনাটি ভাইরাল হওয়ার দুই দিন পর প্রশাসনের টনক নড়ে। ইতিমধ্যে মূল অপরাধীদের বাদ দিয়ে মামলার অভিযোগ এসেছে। যৌথ বাহিনীর টহল চললেও এখন দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। এভাবে একটি দেশ চলতে পারে না।’

আধিপত্যবাদী ও চাঁদাবাজদের নিপীড়ন জনগণ আর সহ্য করবে না বলে মন্তব্য করেন আহমদ আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘ঘাতক ও নিহত ব্যক্তি উভয়েই স্থানীয় যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয় উঠে এসেছে। এভাবে প্রায় এক বছর নিজেদের অন্তর্দ্বন্দ্বে বিএনপিসহ তাদের অঙ্গসংগঠনের শতাধিক নেতা-কর্মী প্রাণ হারিয়েছেন।

আহত ও জখম হয়েছে অসংখ্য সাধারণ মানুষ। ৫ আগস্ট–পরবর্তীতে এগুলো কখনো মেনে নেওয়া যায় না। হত্যা, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলবাজি রাজনীতির কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ হতে হয়েছে, ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। তাই আধিপত্যবাদী ও চাঁদাবাজদের সাবধান হয়ে যেতে হবে। জনগণ আগের মতো নিপীড়ন মুখ বুঝে আর সহ্য করবে না। দেশপ্রেমিক ইসলামি শক্তি ঐক্যবদ্ধ আছে। আমরা সবার মধ্যে সুস্থ রাজনীতির চর্চা দেখতে চাই।’

খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা আজিজুল হকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রতিবাদ সমাবেশে দলটির নায়েবে আমির মাওলানা আহমদ আলী কাসেমী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় আইনবিষয়ক সম্পাদক শায়খুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী উত্তর সভাপতি মাওলানা সাইফুদ্দিন আহমদ খন্দকার, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিসের কেন্দ্রীয় সভাপতি রায়হান আলী প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ