শরীয়তপুরে জুলাই যোদ্ধাদের ফুল দেওয়া হলো পিওনকে দিয়ে!
Published: 5th, August 2025 GMT
শরীয়তপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে আহত জুলাই যোদ্ধাদের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের অফিস সহকারী (পিওন) দিয়ে ফুল দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এতে ক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন আহত জুলাই যোদ্ধারা।
জেলা প্রশাসকের দাবি, নেজারত ডেপুটি কালেক্টরের (এনডিসি) নেতৃত্বে ফুল দেওয়া হয়েছে এবং অভিযোগ সঠিক নয়।
জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শহীদ পরিবার ও জুলাই যোদ্ধাদের নিয়ে মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকালে পৌরসভার সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইলোরা ইয়াসমিনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম ও সিভিল সার্জন ডা.
অনুষ্ঠানে জুলাই শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। পরে আন্দোলনে শহীদ হওয়া ১৪ জনের পরিবার ও ৮৩ জন আহতদের মধ্যে রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও উপহার সামগ্রী প্রদান করা হয়।
জুলাই যোদ্ধাদের অভিযোগ, ১৪ জন শহীদের পরিবারের হাতে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশ সুপার নিজে উপহার তুলে দিলেও ভিন্নতা দেখা যায় আহতদের উপহার ও ফুলেল শুভেচ্ছা দেওয়ার ক্ষেত্রে। তাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের পিওন দিয়ে ফুল দেওয়া হয়।
ফাতেমা ইয়াসমিন নামে নারী জুলাই যোদ্ধা বলেন, “ডিসি বা ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে আমাদের ফুল দেওয়ার কথা ছিল। তারা আমাদের ডিসি অফিসের পিয়ন দিয়ে ফুল ও উপহার দিয়েছেন। এর আগেও জেলা প্রশাসন আমাদের জুলাই কন্যাদের উপহার দিয়েছেন পিয়ন দিয়ে, তারা ফুল অনেকের হাতের উপর ফেলে দিয়েছে। আমরা কখনোই তাদের থেকে সম্মান পাইনি। তাদের মনোভাব স্বৈরাচারী।”
নারী জুলাই যোদ্ধা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, “এখানে আমাদের সঙ্গে বৈষম্য করা হয়েছে। যারা শহীদ হয়েছেন তারা আমাদেরই সহযোদ্ধা। তাদের পরিবারের হাতে ডিসি নিজে সম্মাননা তুলে দিয়েছেন এটি বেশ ভালো, তবে আমাদের বেলায় কেন আলাদাভাবে দিচ্ছে। এখানে প্রশ্ন থেকেই যায়।”
জুলাই যোদ্ধা আব্দুর রহমান ডালিম বলেন, “আমরা জানতাম আমাদের জেলা প্রশাসক ফুলেল শুভেচ্ছা ও উপহারসামগ্রী তুলে দেবেন। জেলা প্রশাসক সেই জায়গায় ব্যর্থ হয়েছেন। এটি আসলেই দুঃখজনক। এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে এটাই আমরা চাই।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, “এনডিসির নেতৃত্বে ফুল দেয়া হয়েছে এবং তিনি নিজেই ছিলেন। যারা অভিযোগ করেছেন, তাদের অভিযোগ সঠিক নয়।”
ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র আম দ র উপহ র
এছাড়াও পড়ুন:
শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিঙ্গাইরের ৭৭ মণ্ডপে অনুদান বিতরণ
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইর উপজেলার ৭৭টি পূজামণ্ডপে ২০ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে সিঙ্গাইর পৌর এলাকার আঙ্গারিয়ায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে এ সহায়তা তুলে দেন বাংলাদেশে বেলারুশের অনারারি কনসাল ও লেদার ইন্ডাস্ট্রিজ অব বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অনিরুদ্ধ কুমার রায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ২৫ বছর ধরে মা শ্রীমতী গীতা রায়ের নামে দুর্গোৎসবে আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছেন অনিরুদ্ধ কুমার রায়।
সহায়তা পাওয়ার পর তারেবপুর ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর শ্রীশ্রী সর্বজনীন দুর্গামন্দিরের সভাপতি মহানন্দ কীর্তনীয়া বলেন, পূজায় মণ্ডপে প্রতিমা তৈরিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র কেনাকাটায় বেশ খরচ হয়। এই সহায়তা পূজায় কাজে আসবে।
সিঙ্গাইর পৌর এলাকার আঙ্গারিয়া এলাকায় বাসিন্দা ও জয়মণ্টপ ইউনিয়নের বানিয়ারা পঞ্চায়েত দুর্গামন্দিরের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্র সরকার (৬০) বলেন, ‘আর ১০ দিন পরই দুর্গোৎসব। মণ্ডপে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। তবে এখনো মা দুর্গাসহ অন্যান্য প্রতিমা সাজানো হয়নি। রংতুলির কাজ হয়নি। এই আর্থিক সহায়তা মা দুর্গার গয়না ও শাড়ি কিনতে সহায়তা করবে।’
অনিরুদ্ধ কুমার রায় বলেন, মা দুর্গা যেমন মহাশক্তির প্রতীক, সব অশুভশক্তি ও শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করার প্রতীক; তেমনি পৃথিবীর প্রত্যেক মা বুক দিয়ে তাঁর সন্তানদের আগলে রাখেন। সন্তানেরও কর্তব্য মাকে ভক্তি, শ্রদ্ধা ও সেবা করা। সেই সঙ্গে মায়ের অপূরণীয় ঋণের কিছুটা হলেও পরিশোধের চেষ্টা করা। মায়ের প্রতি ভক্তি ও শ্রদ্ধার জায়গা থেকেই তিনি এই সহায়তা দিয়ে আসছেন।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব রথীন্দ্রনাথ দত্তের সঞ্চালনায় এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মানোয়ার হোসেন মোল্লা। এ ছাড়া বক্তব্য দেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সত্যেনকান্ত পণ্ডিত ভজন, সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জে ও এম তৌফিক আজম, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান, উপজেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইতি রানী সাহা প্রমুখ।