স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম থেকে শুরু করে বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ, ব্যাংকিং সেবা—এমনই বেশকিছু জনপ্রিয় অনলাইন পরিষেবা গতকাল সোমবার কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ ছিল।

অ্যামাজনের গুরুত্বপূর্ণ ক্লাউড নেটওয়ার্কে (অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেস বা এডব্লিউএস) বড় বিঘ্ন ঘটায় এ বিপত্তি দেখা দেয়। এ অবস্থায় ১০ ঘণ্টা পরও এ সেবা পুরোপুরি সচল করতে কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল প্রতিষ্ঠানটি।

গতকালের এ ঘটনা আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যামাজনের ওপর এখনো অনলাইন দুনিয়া কতটা নির্ভরশীল।

ওই বিপর্যয়ের প্রভাব পড়েছে অ্যামাজন প্রাইম ভিডিও ও ডিজনি প্লাসের মতো স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম, সেই সঙ্গে পারপ্লেক্সিটি এআই, ফোর্টনাইট গেম, এয়ারবিএনবি, স্ন্যাপচ্যাট ও ডুওলিঙ্গোর মতো পরিষেবায়।

ইউরোপে মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক এবং বার্তা আদান–প্রদানের অ্যাপ সিগন্যাল ও হোয়াটসঅ্যাপে সমস্যা দেখা গেছে বলে জানায় ওয়েবসাইট ‘ডাউনডিটেক্টর’।

অনেকে অ্যামাজনের ই–কমার্স সাইটসহ বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রবেশের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়ার কথা জানিয়েছেন। লয়েড’সসহ বেশ কয়েকটি ব্যাংকের পরিষেবা বাধাগ্রস্ত হয়েছে।

আরও পড়ুনঅ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসেসে ত্রুটি, বিভ্রাটের মুখে শতাধিক অ্যাপ ও ওয়েবসাইট১৪ ঘণ্টা আগে

তবে অ্যামাজন জানিয়েছে, সমস্যায় পড়া ক্লাউড পরিষেবা এডব্লিউএস ‘ঘটনার আগের অবস্থায়’ ফিরেছে। ত্রুটির কারণে যে ‘ডেটা জট’ দেখা দিয়েছে, সেটা কাটতে কিছু সময় লাগবে।

এদিকে ডাউনডিটেক্টরে এডব্লিউএস–সংক্রান্ত অভিযোগের সংখ্যা দ্রুত কমে এলেও কিছু সমস্যা থেকেই যায়।

গতকাল ভোরের দিকে বিপর্যয়ের বিশাল ধাক্কা নথিভুক্ত করে ডাউনডিটেক্টর। এর ৯ ঘণ্টা পর আরও বড় বিপর্যয়ের কথা জানানো হয়। ওয়েবসাইটটি জানায়, তারা মোট ১ কোটি ১০ লাখের বেশি সমস্যার রিপোর্ট পেয়েছে।

আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপ, সিগন্যাল, টেলিগ্রাম—কোনটি বেশি নিরাপদ৩১ জানুয়ারি ২০২৩

পরে হালনাগাদ বিবৃতিতে অ্যামাজন জানায়, সমস্যা সমাধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তারা এমন বিঘ্নের জন্য অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসের ‘লোড ব্যালান্সার হেলথ’–বিষয়ক একটি সমস্যাকে দায়ী করেছে।

বিশ্বের ক্লাউড অবকাঠামো বাজারের প্রায় এক–তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করে এডব্লিউএস। এর ওপর লাখো ওয়েবসাইট ও অ্যাপ্লিকেশন নির্ভরশীল।

আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপ ও সিগন্যালে নির্দিষ্ট সময় পর আপনা–আপনি বার্তা মুছে যাবে০১ জুন ২০২১.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য ম জন পর ষ ব সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

নাসার চন্দ্রযান তৈরিতে মাস্কের প্রতিষ্ঠানের দেরি, অন্য প্রতিষ্ঠানের উন্মুক্ত হচ্ছে চুক্তি

মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার আগামী চন্দ্রাভিযানের জন্য চন্দ্রযান তৈরির কথা ছিল ইলন মাস্কের মালিকানাধীন মহাকাশ সংস্থা স্পেসএক্সের। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির বিলম্বের কারণে নাসা এ– সংক্রান্ত চুক্তিটি নতুন দরদাতাদের জন্য উন্মুক্ত করতে যাচ্ছে। গতকাল সোমবার সংস্থাটি এ ঘোষণা দিয়েছে।

নাসার এই সিদ্ধান্তের ফলে জেফ বেজোসের মালিকানাধীন ব্লু অরিজিনের মতো মহাকাশ সংস্থা অর্ধশতাব্দীর মধ্যে প্রথমবারের মতো মহাকাশচারীদের চাঁদে অবতরণের জন্য চন্দ্রযান তৈরির সুযোগ পেতে যাচ্ছে।

আরও পড়ুনচন্দ্র অভিযানে দেরি করবে নাসা০৭ ডিসেম্বর ২০২৪

নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শন ডাফি ফক্স নিউজের ‘ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘আমি এই চুক্তিটি আবার উন্মুক্ত করার প্রক্রিয়ায় আছি। আমার ধারণা, ব্লু অরিজিনের মতো কোম্পানিগুলো এতে অংশ নেবে। হয়তো অন্যরাও আসবে।’

২০৩০ সালের মধ্যে মানুষকে চাঁদে পাঠানোর নিজস্ব পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছে চীন। এমন পরিস্থিতিতে নাসার আর্টেমিস চন্দ্র অভিযান কর্মসূচি দ্রুত এগিয়ে নিতে এবং স্পেসএক্সকে স্টারশিপ চন্দ্রযান তৈরিতে অগ্রগতির জন্য উৎসাহিত করতে সংস্থাটির অভ্যন্তরে কয়েক মাস ধরে চাপ বাড়ছিল। এই চাপের মধ্যেই নতুন করে চন্দ্রযান নির্মাণের চুক্তি উন্মুক্ত করার ঘোষণা দিলেন শন ডাফি।

নাসার চন্দ্র অভিযান সংক্রান্ত কৌশলে এটি অনেক বড় পরিবর্তন। দুই বছরের মধ্যেই নির্ধারিত সময়ে চাঁদে অবতরণের লক্ষ্য সামনে রেখে কারা চন্দ্রযান তৈরি করবে, তা নিয়ে নতুন প্রতিযোগিতা শুরু হতে যাচ্ছে। ব্লু অরিজিন এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অন্যদিকে লকহিড মার্টিন জানিয়েছে, তারা একটি দল গঠন করে নাসার প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে।

আরও পড়ুনইলন মাস্কের স্পেসএক্স স্টারশিপের পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন সম্পন্ন১৪ অক্টোবর ২০২৫

২০২১ সালে একটি চুক্তির অধীন স্টারশিপ চন্দ্রযান তৈরির জন্য স্পেসএক্সকে বেছে নিয়েছিল নাসা। ওই চুক্তির বর্তমান মূল্য ৪৪০ কোটি ডলার। লক্ষ্য ছিল ২০২৭ সালের মধ্যে মানুষকে চাঁদে পাঠানো। তবে নাসার উপদেষ্টারা মনে করছেন, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কারণে এ সময়সীমা কয়েক বছর পিছিয়ে যেতে পারে।

স্পেসএক্সের চাঁদে অবতরণ যান তৈরির বিষয়ে নাসার ভারপ্রাপ্ত প্রধান শন ডাফি বলেন, তাঁরা অসাধারণ সব কাজ করছে; কিন্তু নির্ধারিত সময়সীমা থেকে পিছিয়ে আছে।

শন ডাফি আরও বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চান, ২০২৯ সালে হোয়াইট হাউসে তাঁর মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই যেন এই অভিযান সম্পন্ন হয়।

তবে নাসার এ ঘোষণায় কোনো উদ্বেগ প্রকাশ করেননি স্পেসএক্সের সিইও ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক পোস্টে তিনি বলেন, মহাকাশশিল্পের অন্য কোম্পানির তুলনায় স্পেসএক্স বজ্রগতিতে এগোচ্ছে। স্টারশিপই শেষ পর্যন্ত পুরো চন্দ্র অভিযান সম্পন্ন করবে।

আরও পড়ুনচন্দ্র মিশনের জন্য নতুন ১০ নভোচারীর নাম ঘোষণা করল নাসা২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ