বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচেই হোঁচট খেল জার্মানি। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তারা ২-০ গোলে হেরে গেছে স্লোভাকিয়ার কাছে। আর এ হার তাদের ২০২৬ বিশ্বকাপ অভিযানে শুরুর দিকেই বড় ধাক্কা দিলো।

ডেভিড হানকো আর ডেভিড স্ট্রেলেকের গোলে এগিয়ে যায় স্লোভাকিয়া। যারা শেষবার বিশ্বকাপ খেলেছিল ২০১০ সালে। জার্মানির রক্ষণভাগের একের পর এক ভুল কাজে লাগিয়ে দুই গোল তুলে নেয় স্বাগতিকরা। আর ম্যাচে ফেরার কোনো উপায় খুঁজে পায়নি চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।

আরো পড়ুন:

ভিনিসিয়ুসের অন্তিম মুহূর্তের গোলে হাঁপ ছেড়ে বাঁচল ব্রাজিল

সবার আগে ২০২৬ বিশ্বকাপে জায়গা করে নিলো জাপান

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি, এর আগে কখনোই বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে বাইরে গিয়ে হারেনি জার্মানি। ৫২ ম্যাচে সেই রেকর্ড ভাঙল স্লোভাকিয়ার মাঠে। সব মিলিয়ে ১০৪টি বাছাই ম্যাচে এটি তাদের মাত্র চতুর্থ হার। আরও অবাক করা বিষয় হলো— ১১৭ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচে টানা তিন পরাজয়ের মুখ দেখল জার্মানি।

কোচ জুলিয়ান নাগেলসমান ও তার নতুন গড়া দলের জন্য এটি এক বড় আঘাত। নিউক্যাসলের নতুন স্ট্রাইকার নিক উল্টেমাডে মাত্র তৃতীয় ম্যাচ খেললেন জার্মানির হয়ে। আর ডানপাশে অভিষেক হলো ২১ বছর বয়সী ননামদি কলিন্সের। কিন্তু প্রত্যাশা মেলেনি কারও কাছ থেকে।

হার নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেন নাগেলসমান। তার ভাষায়, দলটিতে মাঠে ছিল না প্রয়োজনীয় আবেগ আর জয়ের মানসিকতা। এমনকি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন, দক্ষতার চেয়ে হয়তো একনিষ্ঠতা ও লড়াকু মানসিকতাই বেশি দরকার। তার কথায়, “হয়তো আমাদের দক্ষ খেলোয়াড়দের ওপর কম নির্ভর করে, এমন খেলোয়াড় বেছে নিতে হবে যারা নিজেদের সবটুকু উজাড় করে দেবে। আজকে তাতে ভালো ফল আসত।”

এখন বাছাইপর্বে প্লে-অফ এড়াতে শেষ পাঁচ ম্যাচের সবগুলোতেই জয় পেতে হবে জার্মানিকে।

ম্যাচের শুরুটা অবশ্য ছিল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। স্লোভাকিয়ার তরুণ লিও সাওয়ার কাছ থেকে প্রথম বিপদ আসে। তবে জার্মান গোলরক্ষক অলিভার বাউমান তা ঠেকান। অন্যদিকে জার্মানির হয়ে প্রথম সুযোগ পান ম্যাক্সিমিলিয়ান মিটেলস্টেড। কিন্তু তার শক্তিশালী শট দুর্দান্ত ভঙ্গিতে ঠেকিয়ে দেন স্লোভাক গোলকিপার মার্টিন ডুব্রাভকা।

ধীরে ধীরে খেলায় চাঙ্গা হয়ে ওঠে স্বাগতিকরা। অ্যান্টোনিও রুডিগারের ভুলে সাওয়ার একবার একেবারেই গোলমুখে চলে গিয়েছিলেন। তবে জোনাথান টাহ সেই শট ব্লক করেন। এর আগেই লিয়ন গোরেৎস্কার শটও ঠেকিয়েছিলেন ডুব্রাভকা।

লিভারপুল তারকা ফ্লোরিয়ান ভার্টজ চমৎকার ফুটওয়ার্কে দুর্দান্ত সুযোগ তৈরি করেছিলেন। কিন্তু সেখানেও নায়ক হয়ে ওঠেন স্লোভাক গোলকিপার।

অবশেষে ৪২ মিনিটে আসে গোল। ডেভিড স্ট্রেলেকের কাটব্যাকে বল পান হানকো, এক টাচে বল জালে জড়ান তিনি। বিরতিতে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় স্লোভাকিয়া।

৫৫ মিনিটে আরও বড় ধাক্কা খায় জার্মানি। এবার নিজেই জাদু দেখান স্ট্রেলেক। রক্ষণভাগ কাটিয়ে দুর্দান্ত শটে বল জড়িয়ে দেন জালের উঁচু কোণে।

এরপর সময় গড়ালেও জার্মানির আক্রমণ ছিল নিস্তেজ। যোগ করা সময়ে স্টানিস্লাভ লোবোটকা প্রায় আত্মঘাতী গোল করে বসেছিলেন। তবে আবারও স্লোভাক নায়ক হয়ে দাঁড়ালেন ডুব্রাভকা। তার হাতেই রক্ষা পেল ক্লিন শিট।

শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গেই স্লোভাকিয়ার মাঠে গর্জে ওঠে উল্লাস। আর হতাশ মুখে ড্রেসিংরুমে ফেরে জার্মানির খেলোয়াড়রা। যাদের সামনে এখন বাছাই অভিযানে টিকে থাকতে বাকি ম্যাচগুলোতে মরিয়া লড়াই ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব শ বক প ব ছ ই ফ টবল ব ছ ইপর ব ব শ বক প প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা

জাপানে পড়াশোনা করার আগ্রহ থাকতে পারে অনেকের। এ আগ্রহে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য দারুণ এক সুযোগ নিয়ে এসেছে দেশটির হোনজো ফাউন্ডেশন। এ ফাউন্ডেশনের হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপ ২০২৬-এ আবেদন শুরু হয়েছে। এই মর্যাদাপূর্ণ জাপানি বৃত্তির মাধ্যমে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স ও পিএইচডি প্রোগ্রামে ভর্তি হওয়া যাবে। এতে রয়েছে আংশিক অর্থায়নের বৃত্তির পাশাপাশি মাসিক ভাতা, যা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে সাহায্য করবে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য এই আন্তর্জাতিক বৃত্তি মূলত তাঁদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্ন পূরণের পাশাপাশি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষার্থীদের সাহায্য করার লক্ষ্যেই প্রদান করা হয়। পাশাপাশি এটি জাপান এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় ও পারস্পরিক সম্পর্ক জোরদার করতে সাহায্য করবে।

হোনজো ফাউন্ডেশন স্কলারশিপের উদ্দেশ্য—

১৯৯৬ সালের ২৫ ডিসেম্বর জাপানের শিক্ষা মন্ত্রণালয় আনুষ্ঠানিকভাবে হোনজো ফাউন্ডেশনকে আন্তর্জাতিক বৃত্তি সংস্থা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেন টাউন লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা মাসানরি হোনজো। তিনি ফাউন্ডেশনের প্রাথমিক মূলধন হিসেবে ২০ কোটি ইয়েন নগদ অর্থ এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের ১০ লাখ শেয়ার দান করেন এ বৃত্তির জন্য। হোনজো ফাউন্ডেশন উন্নয়নশীল দেশের সেই সব শিক্ষার্থীকে সাহায্য করে, যাঁরা ভবিষ্যতে নিজেদের দেশকে উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি জাপানি শিক্ষার্থীরাও বিদেশে পড়াশোনার জন্য এ বৃত্তি পেয়ে থাকেন, যা বৈশ্বিক সংযোগ ও আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে।

আবেদনে যোগ্যতার শর্ত

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তির জন্য আবেদনকারীদের নিচের শর্তগুলো পূরণ করতে হবে—

—জাপান ব্যতীত সব দেশের শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

—আবেদনকারীকে ২০২৬ সালের এপ্রিল মাসে শুরু হওয়া কোনো গ্র্যাজুয়েট প্রোগ্রামে ভর্তি হতে হবে বা ভর্তির পরিকল্পনা থাকতে হবে।

—বর্তমান শিক্ষার্থী, যাঁরা এখনো ভর্তি হননি বা কর্মরত, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন, যদি তাঁরা এপ্রিল ২০২৬-এ ভর্তি হওয়ার পরিকল্পনা করেন।

—যাঁরা ২০২৫ সালের শরৎকালীন সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন, তাঁরাও এই বৃত্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।

—প্রফেশনাল গ্র্যাজুয়েট স্কুলে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সাধারণত যোগ্য নন, তবে বৈধ গবেষণা পরিকল্পনা জমা দিতে পারলে তাঁরা আবেদন করতে পারবেন।

বয়সসীমা

—পিএইচডি প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩৫ বছর।

—মাস্টার্স প্রোগ্রামের জন্য সর্বোচ্চ ৩০ বছর।

—পড়াশোনা শেষ করার পর নিজ দেশের উন্নয়নে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার থাকতে হবে।

—আন্তর্জাতিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার প্রতি আগ্রহী হতে হবে এবং ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও অ্যালামনাই নেটওয়ার্কে অংশগ্রহণ করতে হবে।

—দৈনন্দিন কথোপকথনের মতো জাপানি ভাষায় কথা বলার দক্ষতা থাকতে হবে, কারণ, সাক্ষাৎকার কেবল জাপানি ভাষায় হবে।

বৃত্তির সুবিধা

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তি শিক্ষার্থীদের জন্য ব্যাপক আর্থিক ও একাডেমিক সহায়তা প্রদান করে:

১। পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ।

২। মাসিক ভাতা।

—১ বা ২ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ৩০ হাজার ইয়েন।

—৩ বছরের কোর্সের জন্য ২ লাখ ১০ হাজার ইয়েন।

—৪ বা ৫ বছরের কোর্সের জন্য ১ লাখ ৮০ হাজার ইয়েন।

—জাপানে যাওয়ার জন্য ট্রাভেল গ্র্যান্ট দেওয়ার সুযোগ থাকতে পারে।

—আর্থিক দুশ্চিন্তা ছাড়াই পড়াশোনায় সম্পূর্ণ মনোযোগ দেওয়ার সুযোগ।

—জাপানের সংস্কৃতিময় জীবনযাত্রা উপভোগের পাশাপাশি পড়াশোনার সুযোগ।

—বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গ্লোবাল নেটওয়ার্কে যুক্ত হওয়ার সুযোগ।

হোনজো আন্তর্জাতিক বৃত্তিতে শিক্ষার্থীরা পূর্ণ টিউশন ফি মওকুফ পাবেন এবং পাবেন মাসিক ভাতা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নর্ডিক স্কলারশিপে সম্পূর্ণ অর্থায়নে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডির সুযোগ
  • সেন্ট যোসেফের উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি, নিয়ম প্রকাশ
  • জাপানে মাস্টার্স ও পিএইচডির সুযোগ, ১-৪ বছর পর্যন্ত আর্থিক সুবিধা