নরসিংদীতে সিসা তৈরির কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে সাত শ্রমিক দগ্ধ
Published: 12th, October 2025 GMT
নরসিংদীতে পুরোনো ব্যাটারি থেকে সিসা তৈরির একটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডে সাত শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। আজ রোববার সকালে সদর উপজেলার পাঁচদোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
দগ্ধ তিন শ্রমিককে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তাঁরা হলেন নরসিংদী সদর উপজেলার দক্ষিণ শীলমান্দি এলাকার মোজাম্মেল হোসেন (১৯), হোসেন আলী (২৪) ও তাইজুল ইসলাম (২৫)। এ ছাড়া নরসিংদী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরেছেন অপর চার শ্রমিক সোয়েব (১৮), শাহানূর (২১), সুমন (২২) ও জুয়েল (২০)। তবে তাঁদের ঠিকানা পাওয়া যায়নি।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার সকালে কারখানাটির ভেতরে কাজ চলার সময় আগুন লাগে। এ সময় সাত শ্রমিক দগ্ধ হন। স্থানীয় লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে নরসিংদী সদর হাসপাতালে নেন। চারজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তিনজনকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ফরিদা গুলশানারা কবির জানান, পাঁচদোনা থেকে দগ্ধ সাতজনকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে মোজাম্মেল হোসেনের শরীরের ৭০ শতাংশ, তাইজুল ইসলামের ৬০ শতাংশ এবং হোসেন আলীর ৫০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। তাঁদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ঘটনাস্থলে কাউকে পাওয়া হয়নি।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমদাদুল হক বলেন, অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ঘটনায় পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সম্পদ ও সন্তান লাভের জন্য প্রার্থনা
জীবনের এমন অনেক মুহূর্ত আসে যখন মনে হয়, সবকিছু যেন থমকে দাঁড়িয়েছে। আয়ের উৎস শুকিয়ে যাওয়া, পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকা বা জীবনে বরকতের অভাব—এসব চাপে মানুষের মন ভারী হয়ে ওঠে। ইসলামে এমন সময়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
এমন একটি দোয়া মহানবী মুহাম্মদ (সা.) তাঁর সেবক আনাস ইবনে মালিক (রা.)-এর জন্য করেছিলেন। এই দোয়া শুধু ধন-সম্পদ ও সন্তানের বৃদ্ধি চায় না, বরং সবকিছুতে আল্লাহর বরকত কামনা করে।
দোয়ার উৎস ও প্রেক্ষাপটহাদিসে বর্ণিত, আনাস (রা.)-এর মা উম্মে সুলাইম নবীজিকে বলেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আপনার এই সেবক আনাসের জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করুন।’ তখন নবীজি (সা.) দোয়া করেন: ‘আল্লাহুম্মা আকসির মালাহু ওয়া ওয়ালাদাহু, ওয়া বারিক লাহু ফীমা আ'তাইতাহু।’
এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং পৌত্রাদি মিলিয়ে তিনি ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।আরও পড়ুনতাকওয়া মুমিনের সবচেয়ে বড় সম্পদ৩০ জুন ২০২৫অর্থাৎ, হে আল্লাহ! তার ধন-সম্পদ ও সন্তান বাড়িয়ে দাও এবং তুমি যা দান করেছ, তাতে তার জন্য বরকত দান করো। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৪)
আনাস (রা.) তখন মাত্র দশ বছরের একটি ছেলে, যিনি নবী (সা.)-এর সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। এই দোয়ার ফলাফল অবিশ্বাস্য: আনাস (রা.) ১০৩ বছর বেঁচে ছিলেন এবং তাঁর তিনি পৌত্রাদি মিলিয়ে ১২০-এরও বেশি সন্তান লাভ করেন (সহিহ মুসলিম থেকে বর্ণিত)। তাঁর জীবন ছিল বরকতের জীবন্ত উদাহরণ।
দোয়ার উদ্দেশ্য শুধু ধন নয়, বরকতএই দোয়ার সৌন্দর্য এতে যে এটি ধন-সম্পদের পাশাপাশি বরকতের জন্য প্রার্থনা করে। ইসলামে ধনকে শুধু সঞ্চয় নয়, বরং আল্লাহর নেয়ামত হিসেবে দেখা হয়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯)
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে ধর্মের দাবি১৯ মে ২০২৫ধন বেড়ে গেলেও যদি বরকত না থাকে, তাহলে তা ধুলোর মতো উড়ে যায়।’সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৪৩৯আধুনিক জীবনে এর প্রাসঙ্গিকতা আরও বেশি। অর্থনৈতিক সংকট, চাকরির অনিশ্চয়তা বা পরিবারের চাপে অনেকে কষ্ট পান। কিন্তু এই দোয়া স্মরণ করিয়ে দেয় যে, সত্যিকারের সমৃদ্ধি আল্লাহর রহমতে। সন্তানের ক্ষেত্রেও তাই—সন্তান লাভের সঙ্গে তাদের সুস্থতা, শান্তি ও ইমানের বরকত চাওয়া জরুরি।
আজকের দিনে, যখন পরিবারের আকার ছোট হচ্ছে এবং অর্থের চাপ বাড়ছে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধর্মীয় অনুশীলন (যেমন দোয়া) মানসিক চাপ কমায় এবং জীবনে ইতিবাচকতা বাড়ায়। ইসলামি ঐতিহ্যে এই দোয়া শুধু ব্যক্তিগত নয়, পরিবারের জন্যও ব্যবহার করা যায়।
দোয়ার সঙ্গে সদকা দেওয়া, কোরআন তিলাওয়াত এবং হালাল উপার্জনের চেষ্টা করুন—এগুলো বরকতের দরজা খোলে।
আরও পড়ুনসন্তান প্রতিপালনে মহানবী (সা.)-এর ১০টি নির্দেশনা২০ আগস্ট ২০২৫