জ‌্যোতি বাকরুদ্ধ! রাবেয়া মাটিতে বসেই পড়লেন! নাহিদা হাঁটু মুড়ে বসা। ওদিকে বাকিরা কেউ ক‌্যাপ দিয়ে মুখ ঢাকছেন। কেউ হাত দিয়ে। 

সীমানায় কিছুক্ষণ আগেই স্বর্ণা আক্তার এক ক‌্যাচ নিয়ে বাংলাদেশকে উল্লাসে ভাসিয়েছিলেন। জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করলেন। কিছুক্ষণ পরই আরেকটি লোপ্পা ক‌্যাচ তার হাত ফসকে বেরিয়ে গেল। অবিশ্বাসের চোখে যেন গোটা দল ওই মুহূর্তে থমকে গেল। 

শুধুই কী একটা ক‌্যাচ? গোটা ম‌্যাচটাই যে গেল ফসকে। ইংল‌্যান্ডের পর দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিশ্বকাপে হারানোর খুব কাছে চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু কয়েকটি ক‌্যাচ হাতছাড়া, ফিল্ডিংয়ে আরেকটু প্রাণবন্তের অভাব, রান আউটের একাধিক সুযোগ নিতে না পারায় চড়া মূল‌্য দিতে হলো বাংলাদেশকে। 

স্রেফ হৃদয় ভেঙেছে গোটা দল। অথচ বিশাখাপত্তমে আজ নতুন এক ইতিহাসই লিখতে পারত বাংলাদেশ। খুব কাছে গিয়েও পারল না নিগার সুলতানার দল। জয় না পাওয়ায় আক্ষেপ আছে দলনেতা জ‌্যোতির। আছে কষ্ট। তবে নিজের দলকে নিয়ে বেশ গর্বিতও তিনি। জানেন, সামনে ভালো কিছু এই দলটাই উপহার দেবে। 

‘‘পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যদি আমরা ফিল্ডিংয়ে আরও ভালো প্রচেষ্টা করতে পারতাম এবং ক্যাচ ধরতে পারতাম, তাহলে ফলাফল আমাদের পক্ষে আসত। তবুও, আমার মনে হয়, আমাদের হতাশ বা হৃদয় ভাঙা উচিত নয়।  কারণ ‘দ‌্য শো মাস্ট গো অন’। আমাদের এখান থেকে ইতিবাচক দিকগুলি এগিয়ে নিয়ে পরবর্তী ম্যাচগুলিতে যাওয়া উচিত।’’

বাংলাদেশ আগে ব‌্যাটিং করে স্বর্ণার রেকর্ড গড়া ফিফটিতে ২৩২ রানের পুঁজি গড়ে। ৭৮ রানের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকার ৫ উইকেট নিয়েও বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ম‌্যাচ হেরেছে। শেষ ১২ বলে ১৩ রান দরকার ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার। হাতে ছিল ৩ উইকেট। 

ইনিংসে ৪৯তম ওভারের পঞ্চম বলে ডি ক্লার্কের ক্যাচ ছাড়েন স্বর্ণা আক্তার। শেষ ওভারে দরকার হয় ৮ রানের। নাহিদার করা প্রথম বলেই চার হাঁকান ক্লার্ক। সমীকরণ নেমে আসে ৫ বলে ৪।শেষ পর্যন্ত তিন বল বাকি থাকতে সেই ক্লার্কই ছক্কা হাঁকিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় নিশ্চিত করেন।

শেষ দিকে রোমাঞ্চ ছড়ালেও বাংলাদেশের অধিনায়ক মনে করেন ব‌্যাটিংয়ে আরো ভালোর করার সুযোগ ছিল, ‘‘আমার মনে হয় মোট দাগে আমাদের ১৫-২০ রান কম ছিল। যদি আমাদের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা স্ট্রাইক রোটেশনের উপর মনোযোগ দিত, তাহলে আমরা সেখানে আরও ১৫-২০ রান যোগ করতে পারতাম। কারণ ২৫০ রানের স্কোর হলে খেলাটাই ভিন্ন রকমের হতে পারত। যেমন, ২০০+ একটি ভালো স্কোর, সেই জায়গা থেকে, আমি বলব যে আমাদের ২০ রান কম ছিল।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রশিবিরের প্যানেলের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রশিবির-সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’-এর বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটার দিকে ছাত্রদল এবং ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ প্যানেলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এ সময় ‘বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেলের কয়েকজন প্রার্থীও সঙ্গে ছিলেন।

লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে প্রজেকশন মিটিং করে। সেখানে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করে প্রচারণা চালানো হয়েছে, যা আচরণবিধির লঙ্ঘন।

অভিযোগ দেওয়ার সময় ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের পক্ষে ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন, জিএস প্রার্থী শাফায়েত হোসেন, এজিএস প্রার্থী আইয়ুবুর রহমান; সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ প্যানেলের পক্ষে জিএস প্রার্থী মো. সাকিব মাহমুদ এবং বিনির্মাণ শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী আবির বিন জাবেদ ও এজিএস প্রার্থী পলাশ দে উপস্থিত ছিলেন।

জানতে চাইলে ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের ভিপি প্রার্থী সাজ্জাদ হোসেন হৃদয় বলেন, ‘চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশের পর থেকেই সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট নিয়মিতভাবে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে আসছে। এ পর্যন্ত আমরা মোট আটটি অভিযোগ করেছি। কিন্তু কমিশন এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।’ তিনি আরও বলেন, ‘রাতে অভিযোগ জানানোর পর কমিশন আমাদের জানিয়েছে, আজ মঙ্গলবার বেলা একটার মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিবির–সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী সাঈদ বিন হাবিব সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘প্রজেকশন মিটিং তো মূলত ভোট চাওয়ার জন্যই করা হয়। আমরা নিয়ম মেনেই পাঁচটি নারী হলে এবং কেন্দ্রীয়ভাবে একটি প্রজেকশন মিটিং করেছি। জিরো পয়েন্টে যে প্রজেকশন মিটিং হয়েছে, সেটির জন্য কমিশনের অনুমতি ছিল।’

চাকসু নির্বাচনী আচরণবিধির ৪(খ) ধারায় বলা আছে, প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত হওয়ার দিন থেকে ভোটের ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত প্রচারণা চালানো যাবে। তবে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা ৩০ মিনিট পর্যন্তই প্রচার কার্যক্রম সীমিত রাখতে হবে। সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাস এলাকায় কোনো ধরনের সাউন্ড সিস্টেম বা মাইক ব্যবহার করা যাবে না, যাতে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত না ঘটে।

এ ছাড়া ৬(ঘ) ধারায় বলা আছে, একজন প্রার্থী বা একটি প্যানেলের পক্ষে প্রতিটি হলে সর্বোচ্চ একটি এবং বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে সর্বমোট তিনটি প্রজেকশন মিটিং করা যাবে। একই সঙ্গে ৬(ঞ) ধারায় উল্লেখ রয়েছে, সভা-সমাবেশে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস বা অডিটরিয়ামের ভেতরে সাউন্ড সিস্টেম ব্যবহার করা যাবে, তবে কোনো অবস্থাতেই সন্ধ্যার পর ব্যবহার করা যাবে না।

জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, অভিযোগের বিষয়ে আজ মঙ্গলবার বেলা একটায় আচরণবিধি কমিটির বৈঠক হবে। সেখানে উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাড়ে তিন দশক পর আগামীকাল বুধবার চাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হবে। একই সঙ্গে হবে হল সংসদের নির্বাচনও। গতকাল ছিল নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার শেষ দিন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ