দুর্নীতিতে তিনবার চ্যাম্পিয়নদের দেশের মানুষ আর ভোট দেবে না, বিএনপির উদ্দেশে এমন মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

আজ শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে গুণবতী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন।

দেশের মানুষ জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখতে চায় উল্লেখ করে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো মেধাবীদের জায়গা। মেধাবীরা কখনো ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। ডাকসু, জাকসু, রাকসু, চাকসুসহ সব ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলাফল দেখলেই বোঝা যায়, দেশের মানুষের চিন্তার পরিবর্তন হয়েছে। দেশের মানুষের সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়েছে, রুচির পরিবর্তন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ আর কোনো মাস্তানকে ভোট দেবে না, চাঁদাবাজকে ভোট দেবে না, দখলবাজদের ভোট দেবে না। মানুষ এখন জামায়াতকে ক্ষমতায় দেখতে চায়।

বাংলার মানুষ আর স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দেবে না উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘জুলাই সনদ স্বাক্ষরের সময় আমার পাশের চেয়ারটিতে ছিলেন বিএনপির মহাসচিব। তাঁরা জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে হঠাৎ করে বলছেন, যে সনদে স্বাক্ষর করেছেন, সেটা তাঁরা মানেন না। তাঁরা সংস্কার চান না। সংস্কার না চাওয়ার মানে হচ্ছে আবার অন্যায়ভাবে ভোট ডাকাতি করে এবং ভোটবিহীন নির্বাচন করে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের একটা পথ এবং জানালা খোলা রাখা। এটা জুলাই শহীদদের প্রতি বেইমানি। আমরা বলছি, বাংলাদেশকে আর পেছনে নিয়ে যাওয়া যাবে না। প্রয়োজন হলে আবার জুলাই যোদ্ধাদের ডাক দেওয়া হবে, আবার ৫ আগস্টের আবির্ভাব হবে।’

বিএনপি এখন জনপ্রিয় দল নয়, উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ছিল বড় ও জনপ্রিয় দল। বিএনপি এখনো বড় দল, তবে জনপ্রিয় নয়। কর্মকাণ্ডের কারণে মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। আগামী নির্বাচন হবে চাঁদাবাজ ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে। আগামী নির্বাচন হবে সবার মতপ্রকাশের নির্বাচন। জামায়াত ক্ষমতায় এলে এ দেশের মানুষ এক নতুন বাংলাদেশ দেখবে। যেখানে কোনো সন্ত্রাস থাকবে না, দুর্নীতি থাকবে না।

আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে স্বৈরাচারের শুধু পতন নয়, বিতাড়নও হয়েছে। মানুষ আশা করেছিল, এবার সত্যিকারের পরিবর্তন হবে, নেতারা শোধরাবে। জুলাই বিপ্লবের পরে অন্তর্বর্তী সরকার যেটি গঠিত হয়েছিল আমাদের সহযোগিতায়—তারা তিনটি কাজের কথা বলেছিল। তারা বলেছিল, যারা খুন করেছে, লুটপাট করেছে, তাদের বিচার দৃশ্যমান করা হবে। সেই বিচারের কিছুটা আমরা দেখতে পাচ্ছি। ১৭ তারিখ রায় হতে পারে। কিন্তু এই সরকার জনগণের প্রত্যাশা অনেকটাই পূরণ করতে পারেনি।’

গুণবতী ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মো.

আবু ইউসুফের সভাপতিত্বে ও উপজেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য মঞ্জুর আহমেদের সঞ্চালনায় জনসভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মু. মাহফুজুর রহমান ও জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহাব উদ্দিন। জনসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিশে শুরা সদস্য আইয়ুব আলী ফরায়েজী, ইউনিয়ন ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সালেহ, চৌদ্দগ্রাম পৌর জামায়াতের আমির মোহাম্মদ ইব্রাহিম, উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মু. বেলাল হোসাইন প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ম ন ষ আর উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আয়োজনে চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের এ কথা বলেন। আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।

আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, ‘পত্রিকায় দেখলাম, নিরাপত্তা উপদেষ্টা ভারতে গিয়েছেন। সেখানে কী আলোচনা হয়েছে—সংবাদ সম্মেলন করে সরকারকে তা জাতির কাছে পরিষ্কার করতে হবে। জীবন দিয়ে, রক্ত দিয়ে ভারতের আধিপত্যবাদকে বাংলার মানুষ এই দেশ থেকে তাড়িয়েছে। ভারতের আধিপত্যবাদ ও বশ্যতা বাংলার মানুষ আর কখনোই গ্রহণ করবে না। এই অন্তর্বর্তী সরকার যদি ভারতের অন্যায় কোনো আবদারে এবং অন্যায় সিদ্ধান্তের প্রতি নতি স্বীকার করতে চায়, তাহলে আপনাদের পরিণতিও শুভ হবে না। জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না।’

অন্তর্বর্তী সরকার বিএনপির ফাঁদে পা দিয়েছে উল্লেখ করে জামায়াতের নায়েবে আমির বলেন, ‘একটি দল সংস্কার চাচ্ছে না। তারা পুরোনো বস্তাপচা নিয়মে নির্বাচন করতে পাঁয়তারা করছে। অন্তর্বর্তী সরকারও ওই দলের ফাঁদে পা দিয়েছে। সরকারের সিদ্ধান্তে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। যদি সংস্কার না হয়, শহীদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করা হবে। সে জন্য আমরা গণভোটের কথা বলেছি। সরকার গণভোট দেবে বলেছে, কিন্তু প্যাঁচ লাগিয়ে দিয়েছে। সেটা হচ্ছে, গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হবে। তাদের বুঝতে হবে, এই দুটো নির্বাচন এক জিনিস নয়। কিন্তু ওই দলটি আলাদা গণভোট চায় না। কারণ, ডাকসু, চাকসু, জাকসু ও রাকসুর নির্বাচনের ফলাফল। জনগণ সংস্কারের পক্ষে। জাতীয় নির্বাচনের আগে যদি গণভোট হয়, তাহলে শতকরা ৮০ ভাগ লোক আমাদের পক্ষে রায় দেবে বলে আমি বিশ্বাস করি।’

চৌদ্দগ্রামের শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বিশেষ অতিথি কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির মুহাম্মদ শাহজাহান। আরও উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, চৌদ্দগ্রাম পৌর আমির মাওলানা মু. ইব্রাহীম, ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় মাদ্রাসাবিষয়ক সম্পাদক আলাউদ্দিন, কুমিল্লা জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্নীতিতে ৩ বার চ্যাম্পিয়ন দলকে জনগণ আর ভোট দেবে না: তাহের
  • আগামী নির্বাচন ও বাংলাদেশকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে: আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের