মেঘনায় নৌ পুলিশের অভিযানে ২৮ জেলে গ্রেপ্তার
Published: 14th, October 2025 GMT
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে মাছ শিকাররত ২৮ জেলেকে গ্রেপ্তার করেছে নৌ পুলিশ। এসময় প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার মিটার নিষিদ্ধ কারেন্ট জাল এবং ছয়টি ইঞ্জিনচালিত মাছ ধরার নৌকা জব্দ করে তারা।
রবিবার রাত থেকে সোমবার (১৩ অক্টোবর) ভোর পর্যন্ত উপজেলার মেঘনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে এই অভিযান চালায় মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা। পরে জব্দকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
আরো পড়ুন:
ঝালকাঠিতে ইলিশ ধরায় ৩ জেলের কারাদণ্ড
নদীতে বড়শি দিয়ে মাছ শিকার, ৬ জেলেকে জরিমানা
নৌ পুলিশ সূত্র জানায়, মৎস্য সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনে ছয়টি পৃথক মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার বিকেলে গ্রেপ্তার জেলেদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মো.
আকতার হোসেন (২৮), মো. লিটন ডালী (৪৫), মো. নুরে আহম্মদ বেপারী (৪০), মো. হাসান বেপারী (৩৪), মো. নান্টু ডালী (৩৫), মো. রিপন মিয়া ডালী (৩৪), মো. বিল্লাল ডালী (২০) এবং মো. আবু হানিফ ডালী (২০)।
মোহনপুর নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. মোহাম্মদ আলী বলেন, “মা ইলিশ রক্ষায় আমরা প্রতিদিন নদীতে টহল ও অভিযান পরিচালনা করছি। কেউই আইন ভঙ্গ করে নদীতে মাছ ধরতে পারবেন না। নিষিদ্ধ সময়ে মাছ ধরলে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সরকার ঘোষিত ২২ দিনের মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের অংশ হিসেবে নদীজুড়ে প্রশাসনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।”
ঢাকা/অমরেশ/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ভারতের ৩টি কফ সিরাপ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কতা
ভারতে শিশুদের জন্য তৈরি তিনটি কফ সিরাপে দূষিত উপাদান শনাক্ত হওয়ার পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) সেগুলোর ব্যবহারে সতর্কতা জারি করেছে। সেই সঙ্গে বিভিন্ন দেশের কর্তৃপক্ষকে তাদের নিজ নিজ দেশে ওই তিনটি কফ সিরাপ ব্যবহারের বিষয়ে কোনো তথ্য পেলে তা জানাতে বলা হয়েছে।
ডব্লিউএইচও বলেছে, দূষিত ওই তিনটি কফ সিরাপ হলো স্রেসান ফার্মাসিউটিক্যালসের কোল্ডরিফ, রেডনেক্স ফার্মাসিউটিক্যালসের রেসপিফ্রেশ টিআর এবং শেপ ফার্মার রিলাইফ। এগুলোর নির্দিষ্ট কয়েকটি ব্যাচের কফ সিরাপে মাত্রাতিরিক্ত দূষিত উপাদান পাওয়া গেছে।
জাতিসংঘের সংস্থাটি বলেছে, দূষিত পণ্যগুলো গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং জীবনকে হুমিকর মুখে ঠেলে দিতে পারে।
ভারতের ওষুধ তদারক কর্তৃপক্ষ সেন্ট্রাল ড্রাগস স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) ডব্লিউএইচও–কে জানিয়েছে, এই কফ সিরাপ পানে সম্প্রতি মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওরা জেলায় যে শিশুদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের সবার বয়স পাঁচ বছরের কম।
ওই কফ সিরাপে সহনীয় মাত্রার চেয়ে প্রায় ৫০০ গুণ বেশি ডাইথাইলিন গ্লাইকোল পাওয়া গেছে। ডাইথাইলিন গ্লাইকোল একটি বিষাক্ত দ্রাবক। এটির মাত্রাতিরিক্ত উপস্থিতি কফ সিরাপগুলোকে দূষিত করেছে।
দূষিত এই ওষুধগুলো ভারত থেকে অন্য কোথাও রপ্তানি করা হয়নি। অবৈধ পথে দেশের বাইরে পাঠানোর কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি।সিডিএসসিওসিডিএসসিও বলেছে, দূষিত এই ওষুধগুলো ভারত থেকে অন্য কোথাও রপ্তানি করা হয়নি। অবৈধ পথে দেশের বাইরে পাঠানোর কোনো প্রমাণও পাওয়া যায়নি।
এর আগে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে ভারতের মধ্যপ্রদেশের একটি জেলায় আচমকা একের পর এক শিশু মারা যেতে থাকে। স্থানীয় স্বাস্থ্যকর্মীরা হন্যে হয়ে এর কারণ খুঁজতে থাকেন।
আরও পড়ুনগাম্বিয়ায় ৬৬ শিশুর মৃত্যুর ঘটনায় ভারতীয় কোম্পানির কাশির সিরাপ নিয়ে তদন্ত০৬ অক্টোবর ২০২২অন্তত ১৯ শিশুর মৃত্যু হয়েছিল এবং সেটা হয়েছিল একটি চেনা কফ সিরাপ খাওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে। তখন বলা হয়েছিল, মারা যাওয়া শিশুদের বয়স এক থেকে ছয় বছরের মধ্যে।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা খাওয়ার পানি থেকে শুরু করে মশার কামড়ের শঙ্কা পর্যন্ত সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে থাকেন।
তারপর জানা গেল, এই শিশুদের সবারই কিডনি বিকল হয়ে গিয়েছিল। তারা সবাই যে কফ সিরাপটি খেয়েছিল, সেটার নাম কোল্ডরিফ।
জাতিসংঘের সংস্থাটি বলেছে, দূষিত পণ্যগুলো গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং গুরুতর অসুস্থতা প্রাণহানির কারণ হতে পারে।কর্মকর্তারা কফ সিরাপটি পরীক্ষা করতে চেন্নাইয়ে একটি সরকারি পরীক্ষাগারে পাঠান। সেখান থেকে কয়েক সপ্তাহ পর নিশ্চিত করা হয় যে কফ সিরাপটিতে ৪৮ দশমিক ৬ শতাংশ ডাইথাইলিন গ্লাইকোল আছে। এই বিষাক্ত দ্রাবকটি শিল্পকারখানায় ব্যবহৃত হয়। এটি মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে শরীরে প্রবেশ করলে সচরাচর কিডনি বিকল হয়ে যায়।
শুধু মধ্যপ্রদেশে নয়, প্রতিবেশী রাজস্থান রাজ্যেও দুই শিশুর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়। অভিযোগ আছে, তারাও স্থানীয়ভাবে তৈরি একটি কাশির সিরাপ খেয়েছিল।
আরও পড়ুনভারতীয় সিরাপ কেলেঙ্কারি: ভেজাল কোথায়, বলতে পারে আড়ালের ‘সূত্র’২৪ মে ২০২৩ভারতে তৈরি কফ সিরাপে থাকা বিষাক্ত দ্রাবক ডাইথাইলিন গ্লাইকোল বছরের পর বছর ধরে বহু শিশুর মৃত্যুর কারণ হয়েছে। ২০২৩ সালে গাম্বিয়ায় ৭০টি এবং উজবেকিস্তানে ১৮ শিশুর মৃত্যুর কারণ হিসেবে ভারতের তৈরি কফ সিরাপের কথা এসেছিল।
তার আগে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারির মধ্যে ভারত–নিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরে কফ সিরাপ খেয়ে অন্তত ১২ শিশুর মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ উঠেছিল।
তাদের সবার বয়স পাঁচ বছরের কম ছিল। সে সময় সেখানে কফ সিরাপ সেবনে আরও বেশি শিশুর মৃত্যুর হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন আন্দোলনকর্মীরা।
আরও পড়ুন ৯৯ শিশুর মৃত্যুর পর সব সিরাপ বন্ধ করল ইন্দোনেশিয়া২০ অক্টোবর ২০২২আরও পড়ুনমধ্যপ্রদেশে একের পর এক শিশুর মৃত্যু, আবারও কফ সিরাপের মরণফাঁদ০৯ অক্টোবর ২০২৫