হবিগঞ্জে তরুণকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে বড় ভাই আটক
Published: 14th, October 2025 GMT
হবিগঞ্জে এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে তাঁর বড় ভাইকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ মঙ্গলবার ভোরে শহরের গরুর বাজার এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়।
নিহত তরুণের নাম মনির মিয়া (১৯)। আটক ব্যক্তির নাম রনি মিয়া। তাঁরা গরু বাজার–সংলগ্ন মোকামবাড়ি এলাকার খালেক মিয়ার ছেলে।
এর আগে গতকাল সোমবার রাতে শহরের গরুর বাজার এলাকার নিজ বাড়িতে নিহত হন মনির। পরিবারের দাবি, বড় ভাই রনি মিয়ার চাপাতির কোপে প্রাণ হারিয়েছেন মনির।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ১০টার দিকে তুচ্ছ ঘটনায় মনিরের সঙ্গে রনির ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে একটি চাপাতি দিয়ে ছোট ভাই মনিরকে কোপ দেয় রনি। এতে মনির গুরুতর আহত হন। মুমূর্ষু অবস্থায় হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দীন শাহীন প্রথম আলোকে বলেন, তুচ্ছ ঘটনার জেরে মাদকাসক্ত ভাইয়ের হাতে নিহত হয়েছেন মনির। অভিযুক্ত ভাইকে আটক করা হয়েছে এবং তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মাদাগাস্কারে রাষ্ট্রক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিল সেনাবাহিনী
জেন-জিদের বিক্ষোভের মুখে মাদাগাস্কার ছেড়ে পালিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশটির রাষ্ট্রক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে সেনাবাহিনী। আজ মঙ্গলবার দেশটির সেনাবাহিনীর এক কর্মকর্তা এ কথা জানান। মাদাগাস্কারের জাতীয় রেডিওতে কর্নেল মাইকেল র্যান্ড্রিয়ানিরিনা বলেন, ‘আমরাই ক্ষমতা গ্রহণ করেছি।’
জেন-জিদের বিক্ষোভে সেনাবাহিনীর যে অংশ সমর্থন দিয়েছিল, তার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কর্নেল মাইকেল র্যান্ড্রিয়ানিরিনা। তিনি বলেন, সেনাবাহিনী দেশটির সব সরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম বাতিল করছে। তবে সংসদের নিম্নকক্ষ বা জাতীয় পরিষদ বহাল থাকবে। এর আগে অবশ্য ডিক্রি জারি করে জাতীয় সংসদ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা।
ফ্রান্সের সম্প্রচারমাধ্যম রেডিও আরএফআই গতকাল সোমবার এক প্রতিবেদনে দাবি করে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে এক গোপন চুক্তি করেছেন রাজোয়েলিনা। ফরাসি সামরিক বিমানে করে তাঁকে দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। জেন-জি প্রজন্মের ব্যাপক বিক্ষোভ ও সেনাবাহিনীর একাংশের বিদ্রোহের মুখে দেশ ছাড়লেও পদত্যাগে অস্বীকৃতি জানাচ্ছেন রোজোয়েলিনা।
এদিকে রাজোয়েলিনা বলেছেন, নিজের জীবনের হুমকির কারণে তিনি একটি নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। মাদাগাস্কারের একজন বিরোধী দলের কর্মকর্তা, সেনাবাহিনীর একটি সূত্র এবং এক বিদেশি কূটনীতিক রয়টার্সকে জানিয়েছেন, রাজোয়েলিনা রোববার ফরাসি সামরিক বিমানে দেশ ছেড়ে গেছেন।
দেশটিতে ২৫ সেপ্টেম্বর পানি ও বিদ্যুৎ–সংকটের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু হয়, যা দ্রুত রূপ নেয় দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, মৌলিক সেবার অভাবসহ বৃহত্তর অসন্তোষের এক গণ–অভ্যুত্থানে। এই বিক্ষোভকে নেপাল, মরক্কোসহ অন্যান্য দেশে শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক বিক্ষোভের প্রতিফলন হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আজও রাজধানী আন্তানানারিভোর ১৩ মে স্কয়ারে হাজারো বিক্ষোভকারী নেচে–গেয়ে স্লোগান দিতে দিতে রাজোয়েলিনার বিরুদ্ধে মিছিল করেন। দ্বৈত নাগরিকত্ব ও সাবেক ঔপনিবেশিক শক্তি ফ্রান্সের সমর্থন পাওয়ায় মাদাগাস্কারকে ‘ফরাসি দালাল’ বলে আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভকারীরা নানা ব্যানারও প্রদর্শন করেন। অনেক বিক্ষোভকারী হাতে ছিল মাদাগাস্কারের জাতীয় পতাকা ছিল। একপর্যায়ে কর্নেল মাইকেল র্যান্ড্রিয়ানিরিনা মঞ্চে উঠে জিজ্ঞেস করেন, ‘আপনারা কি সামরিক হস্তক্ষেপ মেনে নিতে প্রস্তুত?’ এরপরই জনতা উল্লাসধ্বনিতে ফেটে পড়ে।
আরও পড়ুনমাদাগাস্কারে বিক্ষোভের মুখে গোপনে দেশ ছেড়েছেন প্রেসিডেন্ট২১ ঘণ্টা আগেতরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে গত শনিবার সমর্থন দেয় ক্যাপস্যাট নামের একটি বিদ্রোহী সেনা ইউনিট। পরদিন এই ইউনিটের পক্ষ থেকে মাদাগাস্কারের পুরো সামরিক বাহিনীর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এর পর থেকে প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা মূলত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
মাদাগাস্কারের জনসংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। এর তিন-চতুর্থাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, স্বাধীনতার পর ১৯৬০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মাথাপিছু জিডিপি ৪৫ শতাংশ কমে গেছে।
আরও পড়ুনমাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্টের দেশত্যাগের আগে–পরে যা হলো৩ ঘণ্টা আগে