শেষ পর্যন্ত আমরা যদি গাজায় ফিলিস্তিনি বিজয়ের কথা বলি, তবে এটি ফিলিস্তিনি জনগণের, তাঁদের অবিনাশী মনোবল এবং দল, মতাদর্শ ও রাজনীতির ঊর্ধ্বে থাকা গভীর শিকড়যুক্ত প্রতিরোধের এক গৌরবোজ্জ্বল সাফল্য।

দশকের পর দশক ধরে প্রচলিত ধারণা ছিল যে ফিলিস্তিনের ওপর ইসরায়েলি দখলদারির ‘সমাধান’ কেবল একটি সুশৃঙ্খল আলোচনানির্ভর প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সম্ভব। ‘শুধু সংলাপই শান্তি আনতে পারে’—এই বাক্য রাজনৈতিক অঙ্গন, একাডেমিক প্ল্যাটফর্ম, গণমাধ্যম এবং অনুরূপ সব জায়গায় অবিরাম প্রচারিত হয়েছে।

এ ধারণাকে কেন্দ্র করে একটি বিশাল শিল্পগোষ্ঠীর জন্ম হয়, যা নাটকীয়ভাবে বিস্তৃত হয় ইয়াসির আরাফাতের নেতৃত্বাধীন প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) এবং ইসরায়েল সরকারের মধ্যে অসলো চুক্তি স্বাক্ষরের সময় ও তার পরবর্তী বছরগুলোতে।

‘শান্তি’র অবসান

সমস্যা কখনোই ‘সংলাপ’, ‘শান্তি’ এমনকি ‘বেদনাদায়ক আপস’-এর মৌলিক ধারণার সঙ্গে ছিল না, যা ১৯৯৩ থেকে ২০০০-এর দশকের শুরুর দিক পর্যন্ত ‘শান্তিপ্রক্রিয়া’র সময়টিতে নিরন্তর প্রচার করা হয়; বরং পুরো সংঘাতের রূপ নির্ধারিত হয়েছে এই শব্দগুলো এবং অনুরূপ অন্যান্য পরিভাষার সংজ্ঞা ও বাস্তব প্রয়োগের মাধ্যমে।

ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘শান্তি’ মানে ছিল এমন এক আনুগত্যশীল ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব, যারা নির্দিষ্ট সীমানার মধ্য থেকে আলোচনা করতে এবং আন্তর্জাতিক আইনের বাধ্যবাধকতার বাইরে কাজ করতে রাজি থাকবে।

একইভাবে ‘সংলাপ’ও কেবল তখনই গ্রহণযোগ্য ছিল, যখন ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব সশস্ত্র প্রতিরোধ পরিত্যাগ করবে, নিরস্ত্র হবে, ইসরায়েলের কথিত ইহুদি রাষ্ট্র হিসেবে ‘অস্তিত্বের অধিকার’ স্বীকার করবে এবং ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নির্ধারিত ভাষা মেনে চলবে।

আসলে ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব যখন সশস্ত্র প্রতিরোধ আনুষ্ঠানিকভাবে ত্যাগ করে এবং জাতিসংঘের নির্দিষ্ট কয়েকটি প্রস্তাবের সীমিত ব্যাখ্যা মেনে নেওয়ার পর, তখনই কেবল ওয়াশিংটন আরাফাতের সঙ্গে ‘সংলাপে’ রাজি হয়। এই নিম্নস্তরের আলোচনাগুলো তিউনিসিয়ায় অনুষ্ঠিত হয় এবং এতে অংশ নেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিকটপ্রাচ্যবিষয়ক সহকারী সচিব রবার্ট পেলেট্রু।

আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতিতে কে জিতল—ইসরায়েল নাকি হামাস?১০ অক্টোবর ২০২৫

ইসরায়েল কখনোই কঠোর শর্ত ছাড়া ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ‘সংলাপে’ বসেনি। ফলে আরাফাত তাঁর জনগণের ক্ষতির বিনিময়ে একের পর এক একতরফা ছাড় দিতে বাধ্য হন। শেষ পর্যন্ত অসলো চুক্তি ফিলিস্তিনিদের কোনো মৌলিক সুফল এনে দেয়নি; ইসরায়েল কেবল স্বীকৃতি দিয়েছিল ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে (পিএ), সমগ্র ফিলিস্তিন বা ফিলিস্তিনের জনগণকে নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পিএ দুর্নীতির আশ্রয়স্থলে পরিণত হয় এবং এর অস্তিত্ব ইসরায়েলি দখলের অস্তিত্বের সঙ্গেই ওতপ্রোতভাবে জড়িত হয়ে পড়ে।

অন্যদিকে ইসরায়েল কোনো নিয়ন্ত্রণ ছাড়াই ফিলিস্তিনি শহরগুলোতে অভিযান চালিয়েছে, নির্বিচার গণহত্যা করেছে, গাজায় বিধ্বংসী অবরোধ আরোপ করেছে, কর্মীদের হত্যা করেছে এবং নারী ও শিশুদেরসহ অসংখ্য ফিলিস্তিনিকে বন্দি করেছে। প্রকৃতপক্ষে, ‘সংলাপ’, ‘শান্তি’ ও ‘বেদনাদায়ক আপস’-এর যুগে ১৯৬৭ সালের দখলের পর থেকে ফিলিস্তিনি ভূমির সর্ববৃহৎ সম্প্রসারণ ও কার্যত সংযুক্তকরণ সংঘটিত হয়েছে।

গাজা কেন ব্যতিক্রম

এই সময়কালে একটি ব্যাপক ঐকমত্য গড়ে ওঠে যে ‘সহিংসতা’—অর্থাৎ ইসরায়েলি সহিংসতার জবাবে ফিলিস্তিনিদের সশস্ত্র প্রতিরোধ ছিল একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। পিএর নেতা মাহমুদ আব্বাস ২০০৮ সালে এটিকে ‘নিরর্থক’ বলে আখ্যায়িত করেন।

পরবর্তী সময়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে পিএর নিরাপত্তা বাহিনীর বড় অংশকেই ইসরায়েলের প্রতি যেকোনো ধরনের প্রতিরোধ, সশস্ত্র বা নিরস্ত্র দমন করতে কাজে লাগান।

যদিও জেনিন, তুলকারেম, নাবলুস ও পশ্চিম তীরের অন্যান্য অঞ্চল ও শরণার্থীশিবিরগুলো কোনোভাবে প্রতিরোধের কিছু সীমিত ক্ষেত্র তৈরি করতে সক্ষম হয়, ইসরায়েল ও পিএর যৌথ প্রচেষ্টা প্রায়ই এসব উদ্যোগকে ধ্বংস করে দেয় বা অন্তত উল্লেখযোগ্যভাবে দুর্বল করে ফেলে।

তবে গাজা সব সময়ই ছিল ব্যতিক্রম। এই উপত্যকার সশস্ত্র আন্দোলন ১৯৫০-এর দশকের গোড়ার দিক থেকেই অব্যাহত আছে—প্রথমে ফেদায়িন আন্দোলন, পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন সমাজতান্ত্রিক ও ইসলামি প্রতিরোধগোষ্ঠীর মাধ্যমে। এই অঞ্চল সব সময়ই নিয়ন্ত্রণের বাইরে থেকেছে, প্রথমে ইসরায়েলের পরে পিএরও।

যুদ্ধবিরতি শুরুর পর উত্তর গাজায় নিজ ঠিকানায় ফিরছেন হাজার হাজার ফিলিস্তিনি.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র সশস ত র

এছাড়াও পড়ুন:

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ৪১ পদের চাকরি, করুন আবেদন

ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে জনবল নিয়োগে আবেদন চলছে। এই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মোট ৪১টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রকৃত বাংলাদেশি নাগরিকেরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন এসব পদের জন্য।

পদের নাম ও সংখ্যা—

১. পদের নাম: সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ৫
গ্রেড: ১৩
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: (ক). স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি; (খ) কম্পিউটার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত; (গ) সাঁটলিপিতে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ৭০ শব্দ এবং বাংলায় ৪৫ শব্দ; (ঘ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ৩০ ও বাংলায় ২৫ শব্দ।
(ঙ) কম্পিউটারে word processingসহ ই-মেইল ও ফ্যাক্স পরিচালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

আরও পড়ুনধান গবেষণা ইনস্টিটিউটে ১০ম–সহ বিভিন্ন গ্রেডে নিয়োগ, পদ ৪৯০৭ অক্টোবর ২০২৫

২. পদের নাম: কম্পিউটার অপারেটর
পদসংখ্যা: ২
গ্রেড: ১৩
বেতন স্কেল: ১১,০০০-২৬,৫৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: (ক) কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক (সম্মান) বা সমমানের ডিগ্রি; এবং (খ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে প্রতি মিনিটে বাংলায় ২৫ শব্দ এবং ইংরেজিতে ৩০ শব্দের গতিসহ সংশ্লিষ্ট Standard Aptitude Test উত্তীর্ণ হতে হবে।
৩. পদের নাম: অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক
পদসংখ্যা: ১২
গ্রেড: ১৬
বেতন স্কেল: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; (খ) কম্পিউটার প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত; (গ) কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ২০ ও বাংলায় ২০ শব্দ; (ঘ) কম্পিউটারে word processingসহ ই-মেইল ও ফ্যাক্স পরিচালনার দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৪. পদের নাম: অফিস সহায়ক
পদসংখ্যা: ২২
গ্রেড: ২০
বেতন স্কেল: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা
আবেদনের যোগ্যতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড থেকে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

আরও পড়ুনবাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে চাকরি, নবমসহ বিভিন্ন গ্রেডে নিয়োগ১১ অক্টোবর ২০২৫

বয়সসংক্রান্ত তথ্য

প্রার্থীদের বয়স ১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে ১৮ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে। তবে সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর এবং অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক পদের জন্য বিভাগীয় প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৪০ বছর পর্যন্ত শিথিলযোগ্য। বয়স প্রমাণের ক্ষেত্রে কোনো এফিডেভিট গ্রহণযোগ্য হবে না।

আবেদনের প্রক্রিয়া

আগ্রহী প্রার্থীদের টেলিটকের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করতে হবে। অন্য কোনো মাধ্যমে প্রেরিত আবেদনপত্র গ্রহণ করা হবে না।

আবেদনের গুরুত্বপূর্ণ তারিখ

অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ ও আবেদন ফি জমা দেওয়া শুরু হবে ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা থেকে। আবেদন শেষ হবে আগামী ১৪ অক্টোবর ২০২৫, বিকেল ৫টায়। আবেদনপত্র সাবমিট করার পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে।

আবেদন ফি

ক্রমিক নম্বর ১-৩ পদের জন্য ১১২/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ) এবং ক্রমিক নম্বর ৪ পদের জন্য ৫৬/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)। অনগ্রসর প্রার্থীদের জন্য সব পদের আবেদন ফি ৫৬/- টাকা (সার্ভিস চার্জসহ)।

পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান

লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান পরবর্তী সময় যোগ্য প্রার্থীদের মুঠোফোনে এসএমএসের মাধ্যমে এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের ওয়েবসাইটে জানানো হবে। প্রবেশপত্র ওয়েবসাইট থেকে ডাউনলোড করা যাবে। আবেদনপত্রে উল্লিখিত মুঠোফোন নম্বরটি সর্বদা সক্রিয় রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে প্রার্থীদের।

আরও পড়ুনঅ্যামাজনে ছয় ক্যাটাগরিতে ইন্টার্নশিপ, প্রোগ্রাম শেষে দীর্ঘমেয়াদি ক্যারিয়ারের সুযোগ২ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হামাসকে নিরস্ত্র করার প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের, কিন্তু কীভাবে তা বললেন না
  • শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের আদেশ
  • জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা স্থগিত, কারণ অনিবার্য
  • জুলাই সনদ বাস্তবায়ন: গাঠনিক ক্ষমতারূপে গণভোট
  • ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে ৪১ পদের চাকরি, করুন আবেদন
  • ফিক্সিংয়ে জড়িতরাও কি থাকবেন বিপিএলে