রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ আগামীকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে। এদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে। এ উপলক্ষে আজ বুধবার সন্ধ্যার আগেই ভোটকেন্দ্র প্রস্তুত করেছে নির্বাচন কমিশন। সন্ধ্যার আগে নির্বাচন কমিশনের একটি প্রতিনিধিদল প্রতিটি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছে।

আজ সন্ধ্যার আগে জামাল নজরুল একাডেমিক ভবন ও স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ভবন পরিদর্শন করছিলের রাকসুর নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মোহাম্মদ আবদুল হান্নান, অধ্যাপক আমিনুল হক ও অধ্যাপক পারভেজ আজহারুল হক। এ সময় মোহাম্মদ আবদুল হান্নান বলেন, ‘আমাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এখন কেন্দ্রগুলো পরিদর্শন করলাম। সব কেন্দ্রও প্রস্তুত হয়েছে।’ অধ্যাপক আমিনুল হক বলেন, প্রতিটি কেন্দ্রে সিসিটিভি থাকবে। একজন শিক্ষার্থী ভোট দিতে সময় পাবেন ১০ মিনিট।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ভবনের একটি কেন্দ্রে ভোট দেবেন মাদার বখশ হলের শিক্ষার্থীরা। এই কেন্দ্রে ভোটার ১ হাজার ৮৭১ জন। ভেতরে তিনটি সারি করা হয়েছে। এই সারিতে একসঙ্গে ৬০ জন শিক্ষার্থী ভোট দিতে পারবেন। সাদা কাপড় মুড়িয়ে বুথ করা হয়েছে।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া নির্বাচনে মোট ভোটার ২৮ হাজার ৯০১ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১৭ হাজার ৫৯৬ ও নারী ভোটার ১১ হাজার ৩০৫ জন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে হল রয়েছে ১৭টি। এর মধ্যে ছাত্র হল ১১টি এবং ছাত্রী হল ৬টি। ভোট গ্রহণ শেষে রাকসুর কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ে ভোট গণনা করা হবে। ভোটের ফলাফল ঘোষণা করা হবে কাজী নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে।

ভোট গ্রহণ যে ৯টি ভবনে হবে, সেগুলো হলো সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মমতাজউদ্দিন ও ড.

মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ একাডেমিক ভবন; সত্যেন্দ্রনাথ বসু, জাবির ইবনে হাইয়ান, স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ও জামাল নজরুল বিজ্ঞান ভবন এবং জুবেরী ভবন।

কোথায় কারা ভোট দেবেন

সৈয়দ ইসমাঈল হোসেন সিরাজী ভবনে ভোট দেবেন দুটি হলের ভোটাররা। জুলাই-৩৬ হলের ২ হাজার ৪৭২ শিক্ষার্থী ১২৮ নম্বর কক্ষে এবং রোকেয়া হলের ২ হাজার ১৭৩ শিক্ষার্থী ভোট দেবেন ১২২ নম্বর কক্ষে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ভবনের ১৪৬ নম্বর কক্ষে তাপসী রাবেয়া হলের ১ হাজার ২৪১ শিক্ষার্থী, ১১৯ নম্বর কক্ষে বেগম খালেদা জিয়া হলের ১ হাজার ২৭৫ শিক্ষার্থী এবং ১২৩ নম্বর কক্ষে রহমতুন্নেসা হলের ১ হাজার ৭৬৬ শিক্ষার্থী ভোট দেবেন।

মমতাজউদ্দিন ভবনের ১৫৬ নম্বর কক্ষে ভোট দেবেন মন্নুজান হলের ছাত্রীরা। এখানে ভোটারসংখ্যা ২ হাজার ৩৭৮। ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ ভবনের ১৫০ নম্বর গ্যালারিতে শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১ হাজার ৯৬৩ ভোটার ভোট দেবেন। সত্যেন্দ্রনাথ বসু ভবনে ভোট দিতে পারবেন দুটি হলের ভোটাররা। এর মধ্যে ১৩৩ নম্বর কক্ষে ভোট দেবেন শেরেবাংলা ফজলুল হক হলের ৯৯৩ জন এবং ২০৮ নম্বর কক্ষে মতিহার হলের ১ হাজার ৮৭১ শিক্ষার্থী ভোট দেবেন।

জাবির ইবনে হাইয়ান ভবনের ১৩৩ নম্বর কক্ষে শহীদ হবিবুর রহমান হলের ২ হাজার ৪৪৬ শিক্ষার্থী এবং ১০১ নম্বর কক্ষে শহীদ শামসুজ্জোহা হলের ১ হাজার ৩০৪ শিক্ষার্থী ভোট দিতে পারবেন। স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু ভবনে দুটি হলের শিক্ষার্থীরা ভোট দেবেন। এর মধ্যে টিচার্স লাউঞ্জ কক্ষে ভোট দেবেন মাদার বখশ হলের ১ হাজার ৮৭৪ শিক্ষার্থী। একই ভবনের ১০৫ নম্বর কক্ষে ভোট দেবেন হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের ১ হাজার ৮৬১ শিক্ষার্থী।

জামাল নজরুল ভবনের সিএসএলের ১২৫ নম্বর কক্ষে বিজয়-২৪ হলের ১ হাজার ৫২৯ শিক্ষার্থী এবং ১১৬ নম্বর কক্ষে নবাব আবদুল লতিফ হলের ১ হাজার ১১৩ শিক্ষার্থী ভোট দিতে পারবেন। জুবেরী ভবনে ভোট দিতে পারবেন দুই হলের শিক্ষার্থীরা। ভবনের হলরুমে (পূর্বে) ভোট দেবেন সৈয়দ আমীর আলী হলের ১ হাজার ২৩৩ শিক্ষার্থী। হলরুম (পশ্চিমে) ভোট দেবেন শাহ মখদুম হলের শিক্ষার্থীরা। এখানে ভোটার ১ হাজার ৪০৯ জন।

ভোট পর্যবেক্ষণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কমিটি

রাকসু, হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নির্বাচনের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার জন্য এ কমিটি কাজ করবে। আজ দুপুরে এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ও ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম। তিনি ১৯৬৮ সালে শাহ্ মখদুম হল ছাত্র সংসদে সহসাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়েছিলেন।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মামনুনুল কেরামত, ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নূরুল হোসেন চৌধুরী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক এম নজরুল ইসলাম, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ জাবিদ হোসেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান, আইন বিভাগের অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দিকা, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন, ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক শেহনাজ ইয়াসমিন।

এসব তথ্য নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ইফতিখারুল আলম মাসউদ জানান, নির্বাচনের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ এবং প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার জন্য উপাচার্য এই কমিটি গঠন করেছেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ভ গ র অবসরপ র প ত হল র শ ক ষ র থ র হল র ১ হ জ র ভ ট গ রহণ ন দ রন থ প রস ত ত ম হ ম মদ ল ইসল ম প রব ন রব ন দ অবস থ নজর ল ভবন র

এছাড়াও পড়ুন:

রাকসু নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে ১০ সদস্যের কমিটি

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু), হল সংসদ ও সিনেট ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করতে ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত এই কমিটি নির্বাচনের প্রকৃত অবস্থা তুলে ধরার জন্য কাজ করবে। কমিটির সভাপতি হিসেবে আছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম।

আরো পড়ুন:

রাকসু: আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ক্যাম্পাসে ছাত্রদল নেতা আমান

‘রাকসু নির্বাচনে গুজব প্রতিরোধে কাজ করছে সাইবার ইউনিট’

বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইফতিখারুল আলম মাসউদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, রাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক মামনুনুল কেরামত, ইতিহাস বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক নূরুল হোসেন চৌধুরী, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক এম. নজরুল ইসলাম, ভূতত্ত্ব ও খনিবিদ্যা বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান, আইন বিভাগের অধ্যাপক বেগম আসমা সিদ্দিকা, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক মাহমুদা খাতুন, ইংরেজি বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক শেহনাজ ইয়াসমিন এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সৈয়দ জাবিদ হোসেন।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এম রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমরা নির্বাচন কেন্দ্রগুলোতে পরিদর্শন করবো। সেখানে কোনো ধরনের কারচুপি হচ্ছে কিনা সেগুলো দেখব। আমাদের মূল কাজ হলো নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া নিশ্চিত করা এবং কেন্দ্রে কোনো প্রকার সমস্যা যাতে সৃষ্টি না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া।”

ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাকসু নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে ১০ সদস্যের কমিটি