খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে র‍্যাগিং, মারামারি, ধর্ম অবমাননা ও মাদকসহ শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে ১২ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া সাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক নাজমুস সাদাত সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ৯ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শৃঙ্খলা বোর্ডের ২৭তম সভায় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ছাত্রবিষয়ক পরিচালকের দপ্তর থেকে প্রকাশিত অফিস আদেশে বলা হয়েছে, অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের স্থায়ী ও সাময়িক বহিষ্কার, আর্থিক জরিমানা এবং মুচলেকা দেওয়ার মতো বিভিন্ন শাস্তি দেওয়া হয়েছে। শিক্ষকের ওপর হামলার অভিযোগে বাংলা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন নোমানকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার, তাঁর সনদ বাতিল এবং ক্যাম্পাসে আজীবন প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনার পর মানবিক বিবেচনায় তাঁর সনদ বাতিলের সিদ্ধান্তটি শর্তসাপেক্ষে স্থগিত করা হয়েছে। মাদক সেবন, বেচাকেনার অভিযোগে অর্থনীতি ডিসিপ্লিনের হাসান হাওলাদার এবং গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের আমিনুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় আইন ডিসিপ্লিনের জাহিদুল ইসলামকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই ঘটনায় আইন ডিসিপ্লিনের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মেহেরাফ হোসেন ও আমিনুল এহসানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আচরণবিধি পরিপন্থী কোনো কাজে সম্পৃক্ত না হওয়ার শর্তে অভিভাবকসহ মুচলেকা দিতে বলা হয়েছে।

ফেসবুকে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের রাসেল শেখকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই অভিযোগে একই ডিসিপ্লিনের তনয় রায়কে দুই বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। র‍্যাগিংয়ের ঘটনায় গণিত ডিসিপ্লিনের কে এম রাউফুল আলমকে (অর্ণব) ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই ডিসিপ্লিনের রিমন মিয়া, আহসান হাবীব ও সালমান হোসেনকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অভিভাবকসহ মুচলেকা দিতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া ক্যাম্পাসে মারামারির ঘটনায় শিক্ষা ডিসিপ্লিনের উমর ফারুক ও সাদমান উদ দৌলাকে চলতি টার্মের জন্য একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ব্যবসায় প্রশাসন ডিসিপ্লিনের মনিরুজ্জামান রিয়াদ ও শিক্ষা ডিসিপ্লিনের জিয়াদ আল সামসকে পাঁচ হাজার টাকা করে জরিমানা এবং অভিভাবকসহ মুচলেকা দিতে বলা হয়েছে। গালাগাল ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে গণিত ডিসিপ্লিনের তিন শিক্ষার্থী—বাবুল আক্তার দুর্জয়, রাশেদ খান মেনন ও বাঁধন রায়কে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

মুন্সিগঞ্জে অস্ত্র চালানোর ভাইরাল ভিডিওতে থাকা যুবকসহ তিনজন গ্রেপ্তার

অস্ত্র চালানোর ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ভিডিওতে থাকা এক যুবকসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে মুন্সিগঞ্জের গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে রাজধানীর দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন ভিডিওতে থাকা চার যুবকের একজন ‘রাসেল-ফয়সাল বাহিনী’র প্রধান রাসেল হাওলাদার ওরফে ম্যাগনেট রাসেল (৩০) এবং সাখাওয়াত ব্যাপারী (২৮) ও তারেক রহমান (৩০)। রাসেল ও সাখাওয়াত শ্রীনগর উপজেলার মধ্য বাঘড়া গ্রামের বাসিন্দা এবং তারেক খানের বাড়ি উপজেলার পাটাভোগ গ্রামে।

আজ বুধবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. কামরান হোসেন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানান। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেশ কয়েক দিন ধরে ফেসবুকে অস্ত্র প্রদর্শনের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি জেলা পুলিশের দৃষ্টিগোচর হলে পুলিশ খতিয়ে দেখে নিশ্চিত হয়, ঘটনাস্থল জেলার শ্রীনগর উপজেলার শ্রীনগর কলেজের পূর্ব-উত্তর পাশের পুকুরপাড়। একই সঙ্গে জানতে পারা যায়, অস্ত্র হাতে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ম্যাগনেট রাসেল ও তাঁর সহযোগী অর্পণ, আহির।

ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৮ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়, জনশূন্য একটি স্থানে দাঁড়িয়ে আছেন চার যুবক। তাঁদের মধ্যে দুজনের হাতে দুটি পিস্তল। একজনকে পিস্তল দেখিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘দামি কিন্তু এইডা, দুইডা দিয়া শট করমু।’ জবাবে অন্যজন বলেন, ‘দুইডা দিয়া শট করা যাইব না, একটা দিয়া শট করতে হইব। গুল্লি রেয়ার, পাওয়া যায় না।’ একজন বলেন, ‘লকটা খুলে টিপ দিলেই গুলি বের হইব।’ এ সময় পিস্তল হাতে নিয়ে আকাশের দিকে গুলি করার চেষ্টা করেন একজন। কীভাবে গুলি করতে হবে, পাশ থেকে বলছিলেন আরেক যুবক।

পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের মীরেরবাগ এলাকার ম্যাগনেট রাসেলের ভাড়া ফ্ল্যাটে অভিযান চালায় গোয়েন্দা দল। সেখান থেকে রাসেলসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় পুলিশ।

মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শ্রীনগর সার্কেল) মো. আনিছুর রহমান বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ভিডিও ধারণ ও অস্ত্র প্রদর্শনের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তাঁদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধার ও ঘটনায় জড়িত অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।

আরও পড়ুনশ্রীনগরে চার যুবকের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণের ভিডিও ভাইরাল২০ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুন্সিগঞ্জে অস্ত্র চালানোর ভাইরাল ভিডিওতে থাকা যুবকসহ তিনজন গ্রেপ্তার