আরও দুই জিম্মির মরদেহ ফেরত দিল হামাস, ইসরায়েলে ডিএনএ পরীক্ষা
Published: 16th, October 2025 GMT
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, গতকাল বুধবার আন্তর্জাতিক সংস্থা রেডক্রস গাজা উপত্যকা থেকে হামাসের ফেরত দেওয়া আরও দুই জিম্মির মরদেহ তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। ইসরায়েলি জিম্মি হিসেবে চিহ্নিত করে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস ওই মরদেহগুলো হস্তান্তর করেছে।
এর আগে গত সোমবার চার ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ এবং গত মঙ্গলবার তিন ইসরায়েলি জিম্মির মরদেহ বুঝে পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেছে ইসরায়েল। তবে গতকাল রাতে হস্তান্তর করা দুটি মরদেহের পরিচয় সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য ওই দুই মরদেহ ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে ফরেনসিক ইনস্টিটিউটে পাঠানো হচ্ছে।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাস সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে পৌঁছায়। ইসরায়েল থেকে ফিলিস্তিনি কারাবন্দীদের মুক্তির বিনিময়ে গাজা থেকে ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি দিতে সম্মত হয় তারা। এর অংশ হিসেবে সোমবার থেকে জিম্মিদের মুক্তি দিচ্ছে তারা।
তবে ইসরায়েলের দাবি, হামাস চুক্তির শর্ত পুরোপুরি মানছে না। এর মানে দাঁড়াচ্ছে, গাজায় যেসব জিম্মির মরদেহ এখনো রাখা আছে, সেগুলোর সবই হামাসকে ফেরত দিতে হবে।
ইসরায়েল ওয়াশিংটনকে বলে দিয়েছে, গাজা থেকে সব জিম্মির মরদেহ ফেরত না দেওয়া পর্যন্ত চুক্তির পরবর্তী ধাপ এগোতে পারবে না। চুক্তি অনুযায়ী, হামাসের ২৮ জনের মরদেহ হস্তান্তর করার কথা। সোমবার থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৯টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। মূলত ১০টি মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছিল। তবে একটির নমুনার সঙ্গে কোনো জিম্মির নমুনা মেলেনি।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতির পরও শান্তি ফিরছে না গাজায়৯ ঘণ্টা আগেহামাস বলেছে, তারা মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা শান্তি পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদের প্রতিশ্রুতিগুলো পূরণ করেছে। সব জীবিত ইসরায়েলি বন্দীকে ফেরত দেওয়া হয়েছে। মৃত জিম্মিদের মধ্যে যাঁদের মরদেহ খুঁজে পাওয়া গেছে, সেগুলো হস্তান্তর করা হয়েছে।
ফিলিস্তিনি এই সংগঠন এবং রেডক্রস বলেছে, গাজার ধ্বংসাবশেষ থেকে জিম্মিদের মরদেহ উদ্ধার করাটা চ্যালেঞ্জিং। আবার কিছু মরদেহ ইসরায়েলি বাহিনী নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় রয়েছে।
এক জ্যেষ্ঠ মার্কিন উপদেষ্টা সাংবাদিকদের বলেছেন, মরদেহ খুঁজে ফেরত দেওয়ার জন্য সম্ভাব্য সব ধরনের চেষ্টা করবে বলে হামাস তাদের আশ্বাস দিয়েছে।
ওই মার্কিন উপদেষ্টা মনে করেন, গাজার নাগরিকদের মরদেহ খুঁজে দেওয়ার জন্য প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। এতে তারা মরদেহ দেখলে তথ্য জানানোর ব্যাপারে উৎসুক হতে পারে।
আরও পড়ুনহামাসের দেওয়া মরদেহগুলোর একটি কোনো জিম্মির নয়: দাবি ইসরায়েলের১৭ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ ম ম র মরদ হ ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
বিষখালীতে হঠাৎ ভাঙন
ঝালকাঠির রাজপুরের বিষখালী নদীতে হঠাৎ করে দেখা দিয়েছে ভাঙন। ফলে উপজেলার মঠবাড়িয়া ইউনিয়নের মানকি-সুন্দর গ্রামের বসতভিটা ও কৃষিজমি বিলীন হচ্ছে। এলাকাবাসীর ভাষ্য, ভাঙন রোধে কার্যকর কোনো উদ্যেগ নেয়নি প্রশাসন।
স্থানীয় বাসিন্দা হৃদয়, সোহাগ ও সজল জানান, গ্রামটি আজ প্রায় বিলুপ্ত। নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, ফসলের জমি, বিদ্যালয়সহ নানা স্থাপনা। এখন মাত্র একটি বাড়ি টিকে আছে, সেটিই গ্রামের অস্তিত্বের শেষ চিহ্ন। এই উপজেলার নাপিতেরহাট ফকিরবাড়ি এলাকার বহু মানুষ নদী ভাঙনের কারণে বসতভিটা হারিয়ে গৃহহীন হয়েছেন।
আরো পড়ুন:
ফুঁসছে তিস্তা, লালমনিরহাটে রেড অ্যালার্ট জারি
কুড়িগ্রামে ১৭০ হেক্টর জমির ফসল নিমজ্জিত
খালেক হাওলাদার নামে ক্ষতিগ্রস্ত এক বাসিন্দা জানান, নদী ভাঙনের কারণে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন আত্মীয়ের বাড়িতে। জীবিকার অনিশ্চয়তায় হতাশ হয়ে পড়েছেন দিনমজুর ও কৃষিজীবীরা।
ইয়াসিন মোল্লা নামে অপর ব্যক্তি জানান, খরস্রোতা বিষখালী নদীর ভাটির টানে প্রতিদিন ভাঙাছে নতুন নতুন এলাকা। গত কয়েকদিন ধরে মানকি-সুন্দর ও বাদুরতলা এলাকায় ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদী তীরের মানুষ আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন।
মানকি-সুন্দর গ্রামের ইকবাল হোসেন নয়ন জানান, মানকি লঞ্চঘাট রাস্তার পূর্ব পাশ ভাঙন দেখা দিয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন থামানো না গেলে পুরো রাস্তা ও ঘাট বিলীন হয়ে যাবে।
শিপন খলিফা জানান, নদীর তীরের মাটি ইট ভাটায় কেটে নিয়ে যাওয়ায় নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। মাটি কাটা বন্ধ করতে প্রশাসনের নজর দারি জরুরি।
ঝালকাঠি পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম নিলয় পাশা বলেন, “ভাঙন-কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে শিগগিরই সরকারের কাছে চাহিদা পাঠাব। যতদ্রুত সম্ভব জিও ব্যাগ বা বাঁধ পুনরায় নির্মাণসহ ভাঙন রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করা হবে।”
তিনি বলেন, “স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য অনেক আগেই প্ল্যান পাঠিয়ে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।”
রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রিফাত আরা মৌরি বলেন, “খোঁজ নিয়ে ভাঙনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। নদীর তীর থেকে মাটি কাটার বিষয়েও আইনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
ঢাকা/অলোক/মাসুদ