ফসিলসের প্রাক্তন গিটারিস্টের মরদেহ উদ্ধার
Published: 13th, January 2025 GMT
কলকাতার জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ড ফসিলসের প্রাক্তন গিটারিস্ট চন্দ্রমৌলির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (১২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ৪৮ বছরের এই বাদ্যযন্ত্রশিল্পীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয় পুলিশ। হিন্দুস্তান টাইমস এ খবর প্রকাশ করেছে।
২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ টানা ১৮ বছর ফসিলস ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন চন্দ্রমৌলি। সর্বশেষ ‘গোলক’ এবং ‘জম্বি কেজ কন্ট্রোল’ নামে দুই ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন চন্দ্রমৌলি। ‘গোলক’ ব্যান্ডের লিড ভোকালিস্ট মহুল চক্রবর্তী বলেন, “আজ (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১টা থেকে আমি ওকে ফোন করছিলাম। কিন্তু কোনো জবাব পাইনি। চিন্তিত হয়ে এক বন্ধুকে নিয়ে ওর বাড়ি আসার সিদ্ধান্ত নিই। এসে দেখলাম ও আর নেই! এটা বাংলা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির জন্য বিরাট ক্ষতি।”
মধ্য কলকাতার ইন্ডিয়ান মিরর স্ট্রিটে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন চন্দ্রমৌলি। চন্দ্রমৌলির বাবা-মা একটি আমন্ত্রণে বাইরে গিয়েছিলেন, বাড়িতে একাই ছিলেন চন্দ্রমৌলি। এই গিটারিস্টের ঝুলন্ত দেহ প্রথম দেখতে পান তার বর্তমান ব্যান্ড সঙ্গী মহুল চক্রবর্তী। রবিবার চন্দ্রমৌলির বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন মহুল। চন্দ্রমৌলির ঝুলন্ত দেহ দেখা মাত্রই স্থানীয় থানায় ফোন করেন তিনি। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা দায়ের হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে কলকাতা পুলিশ।
আরো পড়ুন:
‘আমি ভীষণভাবে বিয়েটা টিকিয়ে রাখতে চেয়েছি’
ঋতাভরীর বিয়ে!
ফসিলসের ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন দলটির লিড ভোকালিস্ট রূপম ইসলামের স্ত্রী রূপসা। তিনি বলেন, “কল্যাণীতে শো করতে যাওয়ার পথে আমাদের কাছে খবরটা আসে। ১৮ বছর ও আমাদের সঙ্গে পারফর্ম করেছে। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ফসিলস ছেড়েছিল চন্দ্রমৌলি। ব্যান্ডের প্রত্যেক সদস্য ভেঙে পড়েছে, রূপম বিধ্বস্ত।”
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন চন্দ্রমৌলি। গত কয়েক বছর ধরেই হাতে তেমন কাজ ছিল না। অর্থনৈতিক সংকটে ছিলেন। ডিপ্রেশনের জন্য চিকিৎসাও চলছিল। চন্দ্রমৌলির বন্ধু ও পরিজনরা পুলিশকে তেমনটাই জানিয়েছেন।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, চন্দ্রমৌলির ঘর থেকে সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাতে লেখা রয়েছে, “আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়।” সুইসাইড নোটের লেখার সঙ্গে চন্দ্রমৌলির আগের হাতের লেখা মিলিয়ে দেখছেন ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।
১৯৭৬ সালের ৫ জুন জন্মগ্রহণ করেন চন্দ্রমৌলি। ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যারিয়ার ছেড়ে সংগীতকেই পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন তিনি।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।