আজ পণ্য খালাসের কথা ছিল, ১৯ লাখ টাকা শুল্কও দিলাম, কিন্তু সব পুড়ে শেষ: ব্যবসায়ীর আহাজারি
Published: 19th, October 2025 GMT
গত সপ্তাহে চারটি শিপমেন্টের মাধ্যমে প্রায় ২ লাখ ৩০ হাজার ডলারের চিকিৎসা সরঞ্জাম খালাসের কাজ করছিল প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড পয়েন্ট নামে একটি সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে একটি শিপমেন্টের জন্য ১৯ লাখ টাকা শুল্কও পরিশোধ করা হয়েছিল। আজ রোববার এসব পণ্য খালাসের কথা।
‘কিন্তু পণ্য খালাসের আগেই সব আগুনে পুড়েছে। কার্গো ভিলেজের ভেতরে ঢোকার কোনো সুযোগ ছিল না। শুধু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পণ্যগুলো পুড়তে দেখলাম।’
আজ বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজের গেটের সামনে দাঁড়িয়ে প্রথম আলোকে কথাগুলো বলছিলেন প্যাসিফিক ইন্টারন্যাশনাল ট্রেড পয়েন্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকির হোসেন।
জাকির হোসেনের চোখেমুখে ক্লান্তি ও হতাশার ছাপ। গতকাল শনিবার আগুন লাগার পর থেকে ঘুমানো ছাড়া এখানেই দৌড়ঝাঁপ করছেন তিনি। কেন আগুন লাগল, ভেতরে কি সবটাই পুড়ে গেছে, সামান্য কিছু কি উদ্ধার সম্ভব হবে—এমন নানা প্রশ্ন মনে জাগছে, কিন্তু কোনো উত্তর নেই।
প্রথম আলোকে জাকির হোসেন বলেন, ‘৯৫ হাজার, ৬৭ হাজার, ৬৪ হাজার ও ৩ হাজার ৫০০ ডলারের চারটি শিপমেন্টে পণ্য এসেছিল। এর মধ্যে ৬৭ হাজার ডলারের শিপমেন্টের জন্য শুল্ক-কর পরিশোধ করা হয়েছে। সবই চিকিৎসা সরঞ্জাম। বাকিগুলোর কাজ শেষের আগেই বৃহস্পতিবার বিকেলে কাস্টমস বন্ধ হয়ে যায়। বাকি শিপমেন্টগুলোর কাজ শেষে আজ রোববার ১২টার মধ্যে খালাস হয়ে যেত। কিন্তু সেই সুযোগ আর পেলাম না।’
জাকির হোসেনের মতো শতাধিক সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা কার্গো ভিলেজের গেটের বাইরে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে আছেন। তাঁদের একজন মেট্রনিক বাংলাদেশ লিমিটেড নামে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানির আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক সুমন মোল্লা।
সুমন মোল্লা জানান, পাঁচ দিন আগে তাঁদের সর্বশেষ চালান এসেছিল—প্রায় ১৫ লাখ ডলারের চিকিৎসা সরঞ্জাম ছিল। পণ্যগুলো আজ খালাস হওয়ার কথা। কিন্তু এর আগেই আগুনে পুড়েছে।
সুমন মোল্লা বলেন, আর্থিক ক্ষতি তো হয়েছেই; সেই সঙ্গে এসব পণ্য পুড়ে যাওয়ায় বাজারেও চিকিৎসা সরঞ্জামের সাময়িক ঘাটতি তৈরি হতে পারে। অনেক প্রতিষ্ঠানের আনা চিকিৎসা সরঞ্জাম পুড়েছে।
কার্গো ভিলেজের গেটের বাইরে থেকে ভেতরে তাকিয়ে আছেন সিএন্ডএফ এজেন্ট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শহর জুড়ে আওয়ামী দোসর ও অপরাধীরের ছবি দিয়ে তাঁতী দলের ফেস্টুনে সয়লাব
নারায়ণগঞ্জ শহর জুড়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট দোসর ও আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যদের ছবি দিয়ে তাঁতী দলের ব্যানার ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।
এসব ব্যানার ফেস্টুন লাগানো নেতাদের কেউ বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত নয় বলে শহর জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনা। তাদের অনেকেই গত ৫ আগস্টের পুর্বে মাঠে দেখেনি বলে দাবি করেন তৃনমূল নেতাকর্মীরা।
শহর জুড়ে দেখাযায়. আড়াইহাজারের আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য মজিবুর রহমানের সহযোগীরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তাঁতীঁদল নারায়ণগঞ্জ মহানগর নেতা হিসেবে ব্যানার ফেস্টুন করে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপুর্ণ পয়েন্টে লাগিয়েছে ।
অথচ কোনদিন বিএনপি তথা কোন অঙ্গসংগঠনের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলোনা বলে জানাযায়। দীর্ঘদিন ডাকাতিসহ নানা অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় তাকে সবাই ডাকাত মজিবর নামে চেনে।
তার নামের ১৫ থেকে ১৬ টার অধিক ডাকাতি ও হত্যা মামলা রয়েছে। ২০০৪ সালে নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে গাড়ি প্রাইভেট কাড় ছিনতাই করতে গিয়ে জনগণ আটকে ফেলে। পরে তাকে গণ ধোলাই দিয়ে সদর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়। এ মামলায় দীর্ঘদিন জেলে ছিলো এই ডাকাত মজিবর।
১৭ বছর আওয়ামী সরকার ক্ষমতা থাকাকালীন ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুল ইসলামের সন্ত্রাসী বাহিনীদের সাথে মিশে নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে ছিনতাইকারী চক্র গড়ে তুলে এই ডাকাত সরদার মজিবর। ফতুল্লা থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাইজুলের ছত্রছায়ায় থেকে এই ছিনতাইকারী বাহিনী পরিচালনা করত।
সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের বাহিনীর সকল ক্যাডারদের সাথে সম্পর্ক রেখে বিভিন্ন অপকর্ম করতো। দের ছাত্র ছায়া থেকে লিংক রোড থেকে চাষাড়া এই অঞ্চলে তিনি ছিনতাই ও ডাকাতি করে বেড়াতো।
তাদের সাথে আল আমিন নামে একজন নারায়ণগঞ্জ মহানগর তাঁতীদলের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তিনি নারায়ণগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াত আইভির ড্রাইভার ছিলেন। ৫ আগস্টের পরে তিনিও বিএনপি বনে গেছেন। ডাকাত মজিবর বাহিনীর অন্যতম সদস্য।
৫ আগস্টের পরে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট করা ফেস্টুন করে শহরে লাগানো পরিলক্ষিত। ফেইসবুকে বিএনপি নেতাদের সাথে ছবি পোস্ট করছে শুধু তাই নয় ৫ তারিখের পরে জেলা বিএনপির আহবায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদকে ফুলের তোড়া দিয়ে ছবি থেকে শুরু করে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের সাথে ছবি তোলার ব্যস্ততা দেখা যায় তার বাহিনীদের।
শুধু ছবি তোলা নয় শহর জুড়ে সিনিয়র নেতাদের ছবি দিয়ে ফেস্টু করতে দেখা যায় তার গ্রুপের অনেকের। সমালোচনার মুখে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের চাপের মুখে আবার কিছু ফেস্টুন সরিয়ে ফেলতেও দেখা যায়।
এই বিএনপি’র ফ্রেম ব্যবহার করেও নাম ভাঙ্গিয়ে বিভিন্ন স্থানে অপকর্ম করে বেড়াচ্ছে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ এলাকায়। বর্তমানে তারা জাকির খানের চাচা মনির খানের আশ্রয়ে থেকে বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ালো তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা না নেয়ায় শহর জুড়ে সমালোচনার ঝড় বইছে।
নারায়ণগঞ্জ শহর জুড়ে এই ডাকাত মজিবরের সদস্যরা মুকবুল ও আলামিন সহ আরো কয়েকজন নারায়ণগঞ্জ মহানগর তাঁতী দলের ব্যানার এবং বেষ্টন লাগাচ্ছে যা অত্যন্ত দুঃখজনক বলে অবহিত করেছেন বিএনপি’র তৃনমুল নেতাকমৃীরা।
শুধু তাই নয় কেন্দ্রীয় তাঁতিদলের সদস্য সচিব হাজী মজিবুর রহমানের স্থানীয় কার্যালয়ে কাঁচপুর বিসিক অঞ্চলে ডাকাত মজিবর ও তার সংগোপঙ্গদের মিটিং ভিডিও তাদেরই সমাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। তাদের ফেসবুকে লেখা রেেয়েছ নারায়ণগঞ্জ মহানগর তাঁতী দলের আলোচনা সভা। আমরা লিডারের সাথে।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, কেন্দ্রীয় তাঁতি দলের নেতা পরিচয় দানকারী রাজ্জাক, সেলিম, ও হানিফ এদের থেকে মোটা অংকের টাকা খেয়ে ডাকাত মজিবুর বাহিনীদের দিয়ে নারায়ণগঞ্জ মহানগর তাঁতি দিলের কমিটি এনে দেওয়ার কথা বলে কে›ন্দ্রীয় তাঁতিদলের সদস্য সচিব মুজিবুর সাহেবের সাথে যোগাযোগ করিয়ে দেয়।
তাঁতিদলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমানের সাথে এই ডাকাত গ্রুপদের ছবি ভাইরাল হয়েছে। বিএনপির পার্টি অফিসে এমনকি শহীদ জিয়াউর রহমানের মাজারে কেন্দ্রীয় তাঁতি দলের নেতাদের সাথে দেখা যায় এসব আওয়ামী দোসর ও ডাকাত দলের সদস্যদের।
আরো জানা যায়, ডাকাত মজিবরের পরিচয় জানতে পেরে তাকে বাদ রেখে তার বাহিনীদের কৌশলে সেলিম,হানিফ ও রাজ্জাক জাকির খানের চাচা মনির খানের সাথে তাদের পরিচয় করিয়ে দেয়।
পরবর্তীতে জাকির খানকে দিয়ে কেন্দ্রীয় তাঁতি দলের সদস্য সচিব মুজিবুর রহমানকে ফোন দিয়েএদের কমিটি দেওয়ার জন্য চারন প্রয়োগ করে। তারপর থেকে ডাকাত মজিবর কে আর দেখা যায় না। কিন্তু কেন্দ্রীয় তাঁতিদলের সদস্য সচিব মজিবর রহমানের সাথে সারাক্ষণ ডাকাত মজিবর বাহিনীর অন্য সদস্যদের দেখা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী তাঁতীঁদল কেন্দ্রীয় আহবায়ক আবুল কালাম বলেন, আমাদের নারায়ণগঞ্জ মহানগর কোন কমিটি নেই খুব শীগ্রই আমরা যাচাই বাছাই করে কমিটি ঘোষনা করবো।
বর্তমানে যারা তাঁতীঁদলেরর নাম ব্যাবহার করে ব্যানার ফেস্টুন করে দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করছে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।