পশ্চিমবঙ্গের জনপ্রিয় বাংলা ব্যান্ড ফসিলসের সাবেক সদস্য চন্দ্রমৌলি বিশ্বাস মারা গেছেন। গতকাল রোববার কলকাতার বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় তাঁর ঝুলন্ত দেহ। ইতিমধ্যেই দেহ ময়নাতদন্তে পাঠিয়েছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে মনে করছে পুলিশ। কিন্তু কারণ জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে। খবর সংবাদ প্রতিদিন অনলাইনের

চন্দ্রমৌলি বিশ্বাসের বয়স হয়েছিল ৪৮ বছর। কলকাতার ওয়েলিংটন এলাকায় ভাড়া থাকতেন তিনি। সঙ্গে থাকতেন বাবা ও মা। গতকাল তাঁরা কেউ বাড়িতে ছিলেন না। সেই সময়ই ঘটে অঘটন। বর্তমানে শিল্পী যে ব্যান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তারই এক সদস্য দেখতে পান ঝুলন্ত দেহ। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় থানায়। পুলিশ গিয়ে চন্দ্রমৌলির দেহ উদ্ধার করে।

২০০০ থেকে ২০১৮ সাল, অর্থাৎ দীর্ঘ ১৮ বছর ফসিলসের সদস্য ছিলেন চন্দ্রমৌলি। পরে ‘গোলক’ নামে একটি দল গড়েন। তিনি সর্বশেষ এ দলেই সদস্য ছিলেন। তাঁর দলের এক সদস্যের কথায়, ‘নতুন করে দল হলো, সদ্য মিউজিক ভিডিওর কাজ শেষ হয়েছে। তার মধ্যে এ রকম কাণ্ড ঘটে যাবে, ভাবতে পারিনি।’ গতকাল সকালেও ফেসবুকের প্রোফাইল ছবি বদলেছিলেন চন্দ্রমৌলি। কী এমন ঘটল যে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে এই চরম সিদ্ধান্ত? উত্তর খুঁজছে পুলিশ।

চন্দ্রমৌলির মৃত্যুশোকের আবহ পশ্চিমবঙ্গের সংগীত দুনিয়ায়। ফসিলসের গায়ক রূপম ইসলাম ভারতীয় গণমাধ্যম সংবাদ প্রতিদিনকে বলেন, ‘চন্দ্রমৌলির সঙ্গে গত বছর পর্যন্ত যোগাযোগ ছিল। নানান দার্শনিক বিষয়ে কথা হতো। কিছু কিছু গান নিয়ে তাঁর সঙ্গে বসার কথা ছিল। তবে তাঁর জীবন আলাদা করে চলছিল। আমার মনে হয় না সেসব গান আমি আর কোনো দিনই প্রকাশ করতে পারব।’

আরও পড়ুনছোটবেলায় গান শুনে রুনা লায়লার প্রেমে পড়েছিলেন নচিকেতা ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চন্দ্রমৌলির মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ তাঁর অনুরাগীরা। ঘনিষ্ঠজনদের দাবি, মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন শিল্পী। কাজ না পাওয়ার হতাশা থেকেই এমন মর্মান্তিক পরিণতি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ