আরো দক্ষ ও আধাদক্ষ জনশক্তি নিতে কুয়েতের প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান
Published: 14th, January 2025 GMT
বাংলাদেশ থেকে আরো বেশি দক্ষ ও আধাদক্ষ জনশক্তি নিতে কুয়েতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
বঙ্গভবন প্রেস উইং জানায়, বাংলাদেশে নবনিযুক্ত কুয়েতের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বঙ্গভবনে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
কুয়েত এবং কসোভোর রাষ্ট্রদূতগণ মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির কাছে তাদের পরিচয়পত্র পেশ করেন।
বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল তাদের গার্ড অব অনার প্রদান করে।
প্রথমে কসোভোর নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত লালজিম প্লানা তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। এরপর রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন কুয়েতের রাষ্ট্রদূত আলী থুনায়েম আব্দুল ওহাব হামাদাহ।
কসোভোর নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো.
বাংলাদেশ ও কসোভোর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাক, ওষুধসহ আন্তর্জাতিক মানের বিভিন্ন পণ্যের আমদানি বাড়াতে নতুন রাষ্ট্রদূতকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়াতে রাষ্ট্রপতি দুদেশের মধ্যে ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সফর বিনিময়ের ওপর জোর দেন।
কুয়েতের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন আগামীতে বাংলাদেশ ও কুয়েতের মধ্যে সহযোগিতার নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন।
বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, জাহাজ নির্মাণ এবং জ্বালানিসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে তিনি কুয়েতের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
কুয়েতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ বাংলাদেশি জনশক্তি কর্মরত উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশ থেকে আরো দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মী নিতে কুয়েতের প্রতি আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের অবকাঠামো এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে কুয়েত ফান্ড ফর আরব ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের অবদান তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি আশা করেন, তাদের সহযোগিতা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।
এ ছাড়া বাংলাদেশে প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে পরিশোধিত পেট্রোলিয়াম পণ্য সরবরাহে কুয়েতের সহযোগিতা কামনা করেন রাষ্ট্রপতি।
এ সময় মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা যাতে সম্মানের সাথে নিজ দেশে ফিরে যেতে পারে সেজন্য কুয়েত এবং ওআইসি-সহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।
সাক্ষাৎকালে কুয়েতের রাষ্ট্রদূত তার দেশের অর্থনৈতিক ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে বাংলাদেশি শ্রমিকদের অবদানের প্রশংসা করেন।
নতুন রাষ্ট্রদূতগণ বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন ।
এ সময় রাষ্ট্রপতির সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী, প্রেস সচিব মো. সরওয়ার আলম এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/হাসান/এনএইচ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।