আমাদের যাত্রাটা কেমন ছিলো সেটা বারবার খেয়াল রাখতে হবে: ফারুকী
Published: 18th, January 2025 GMT
দেশের ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সংস্কৃতির বৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের নানা পরিকল্পনা রয়েছে উল্লেখ করে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, ধর্ম-বর্ণ কোনো বিষয় না, একে অপরের জন্য কাজ করবো এটাই বাংলাদেশ।
শনিবার (১৮ই জানুয়ারি) বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে মাসব্যাপী লোকজ উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুকী বলেন, যেকোনো জাতির জন্য সামনে এগিয়ে যাওয়াটা হচ্ছে মুখ্য বিষয়। সামনে এগিয়ে যেতে গেলে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, পিছনে কোনো রাস্তা ফেলে এসেছি সেটির দিকে নজর রাখা। আজকে যে লোক ও কারুশিল্প মেলার সূচনা হচ্ছে, মেলার কাজই হচ্ছে ফেলে আসা রাস্তাটাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। আমাদের যাত্রাটা কেমন ছিলো সেটা বারবার খেয়াল রাখতে হবে।
লোকজ উৎসবে অংশগ্রহণের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এখানে আসার সবচেয়ে বড় বাঁধা হচ্ছে এপ্রোচ সড়কটি প্রশস্ত নয়। এই সমস্যাটি সমাধান এখনই সম্ভব নয়। এ বিষয়টি নিয়ে আমি নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলেছি। সমস্যার সমাধানে আমরা কাজ করছি।
এর আগে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প মেলা ও লোকজ উৎসব ২০২৫ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের পরিচালক কাজী মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মফিদুর রহমান, যুগ্ম সচিব হেলাল উদ্দিন,নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান।
মাসব্যাপী লোকজ উৎসবে থাকছে কারুশিল্প প্রদর্শনী, লোক জীবন, পুতুল নাচ, বায়স্কোপ, নাগর দোলা, গ্রামীণ খেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের থেকে কারু শিল্পীদের তৈরি বাহারি পণ্য সামগ্রী এবং উদ্যোক্তাদের কারুপণ্য প্রদর্শনের ব্যবস্থা।
এবারের মেলায় কারুশিল্পীদের প্রদর্শনীর ৩২টি স্টলসহ মোট ১০০টি স্টল স্থান পেয়েছে। এছাড়াও প্রতিদিন লোকজ মঞ্চে বাউল, পালা গান, ভাওয়াইয়া-ভাটিয়ালী গান, জারি-সারিগান, হাছন রাজার, শাহ আব্দুল করিমের গান, লালন সঙ্গীত, ক্ষুদ্র-নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এ মেলা চলবে।
.উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
প্রাণের গানে সালাহর উৎসব
শেষ বাঁশি বাজতেই নেচে-গেয়ে উৎসবে মাতেন সালাহ-অ্যালিসন-এলিস্টাররা। তবে পর্বটা খুব বেশি লম্বা হয়নি। অধিনায়ক ভার্জিল ফন ডাইক সবাইকে ডেকে মাঠের একটি গোলপোস্টের সামনে জড়ো করেন। আর্নে স্লটের নেতৃত্বে কোচিং স্টাফরাও যোগ দেন সেখানে। গ্যালারি সামনে রেখে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চেইনের মতো করে সারিবদ্ধভাবে দেয়াল বানিয়ে দাঁড়ান সবাই। পুরো এনফিল্ড তখন সমবেত কণ্ঠে গাইতে শুরু করে– You’ll Never Walk Alone...। অলরেডদের হৃদয় থেকে উৎসারিত এ গানেই পূর্ণতা পায় উৎসব।
এ গানের সঙ্গে সঙ্গে অন্য রকম এক আবহ তৈরি হয় সেখানে। বিশ্বের কোনো স্টেডিয়াম ছুঁতে পারবে না এনফিল্ডের এই আবহ। এই আবহ তৈরি অলরেডদের বিশ্বাসে, বছরের পর বছর যারা কেউ কাউকে একা হাঁটতে দেয়নি। রোববার সকাল থেকেই এনফিল্ডের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। আতশবাজি ও লাল আবিরে রঙিন হয়ে উঠেছিল লিভারপুলের আকাশ-বাতাস। আগে থেকেই বন্দর শহরটির দেয়ালে দেয়ালে ঐতিহাসিক গানটির সঙ্গে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল।
ম্যাচ শুরুর দুই ঘণ্টা আগেই এনফিল্ড চত্বর রীতিমতো অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। আর্নে স্লট, সালাহদের স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। লাল জার্সি পরা কাতারে কাতারে সমর্থকদের মাঝখান দিয়ে লাল বাসে করে লিভারপুলের ফুটবলাররা স্টেডিয়ামের আঙিনায় প্রবেশ করেন অন্যরকম এক পরিবেশে। ১৯৮৯-৯০ মৌসুমের পর ৩০ বছর ট্রফি জেতেনি তারা। পাঁচ বছর আগে ট্রফি জিতলেও করোনাভাইরাস মহামারির কারণে উদযাপন হয়েছিল দর্শকশূন্য গ্যালারিতে। তাই এমন অনেক সমর্থক আছেন, যারা প্রিয় ক্লাবকে লিগ জিততে দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের উচ্ছ্বাসটা ছিল বেশি।
২০তম শিরোপা জয়ের কৃতিত্ব আর্নে স্লট দিয়েছেন সাবেক কোচ ইয়ুর্গেন ক্লপকে। এমনকি তিনি সঞ্চালকের এক প্রশ্নের জবাবে পুরো গ্যালারিকে নিয়ে ক্লপের নামে গানও গেয়েছেন। ২০১৫ সালে লিভারপুলে যোগ দেওয়ার পর ক্লপ তিলে তিলে গড়ে তুলেছেন ক্লাবটিকে। এর মধ্যে দুবার অবিশ্বাস্য লড়াই করেও মাত্র ১ পয়েন্টের ব্যবধানে ম্যানসিটির কাছে শিরোপা হারাতে হয়েছিল তাদের। ২০২০ সালে জিতলেও সমর্থকদের নিয়ে উল্লাস করতে পারেননি।
ক্লপের লিগজয়ী দলের সদস্য ছিলেন মোহামেদ সালাহ। এবার ভিন্ন স্বাদ পেয়েছেন মিসরীয় এ তারকা। শিরোপা জয়ের পর স্কাই স্পোর্টসকে তিনি বলেন, ‘সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে শিরোপা জয়ের অনুভূতি অবিশ্বাস্য। গতবারের (২০২০) চেয়ে এবার শতভাগ ভালো ছিল। এটা অনেক বেশি আনন্দময়। এটা সত্যিই বিশেষ কিছু।’
প্রথমবারের মতো প্রিমিয়ার লিগ জেতা আর্জেন্টাইন তারকা এলেক্সিস ম্যাক এলিস্টারের জন্যও এ শিরোপা বিশেষ কিছু, ‘বিশ্বকাপ জিতেছিলাম, এখন জিতেছি প্রিমিয়ার লিগ। আমার জন্য সত্যই এটা বিশেষ কিছু। সতীর্থদের ছাড়া এটা সম্ভব হতো না। আমাদের দলটি সত্যিই অসাধারণ।’