ডাকাতির জন্য কাটা গাছে উল্টে গেল ট্রাক
Published: 26th, January 2025 GMT
জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় সড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় কেটে রাখা গাছের ওপর দিয়ে একটি ট্রাক পার হতে গিয়ে সড়কের পাশে খাদে উল্টে গেছে। এ ঘটনায় ট্রাকচালক হান্নান আহত হয়েছেন। শনিবার রাতে উপজেলার আক্কেলপুর-তিলকপুর সড়কের কাদোয়া বটতলী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় ট্রাকের পেছনে থাকা একটি ডিমের গাড়ি আটকিয়ে অস্ত্রের মুখে অন্তত দেড় লাখ টাকা লুট করে নিয়েছে বলে জানা গেছে। আরেকটি পিকআপ থামিয়ে অন্তত ২০ জনের মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দিনাজপুরের বিরল উপজেলা থেকে ২৬১ বস্তা আতপ ধান ট্রাকে নিয়ে বগুড়ার সান্তাহার যাচ্ছিলেন চালক হান্নান। রাত সাড়ে ১২টার দিকে আক্কেলপুর-তিলকপুর সড়কের কাদোয়া বটতলী এলাকায় পৌঁছালে ডাকাত দলের সদস্যরা সড়কে গাছ ফেলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এ সময় চালক ট্রাক না থামিয়ে গাছের ওপর দিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করেন।
এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে খাদে উল্টে যায় ট্রাক। পরে ভেতর থেকে চালক ও তাঁর সহকারীকে বের করে এনে মারধর করে ১৫ হাজার টাকাসহ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। ট্রাকের পেছনে মুরগির ডিমবাহী গাড়ি আটকিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে দেড় লাখ টাকা লুটে নেয় তারা। একই সময় অপর আরেকটি পিকআপ থামিয়ে আদিবাসী ২০ জনের মোবাইল ফোন লুট করে।
ট্রাকচালক হান্নান বলেন, ‘সড়কে গাছ ফেলানো দেখে তার ওপর দিয়ে ট্রাক চালিয়ে পার হওয়ার চেষ্টা করি। এ সময় গাড়িতে বেশি পণ্য থাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের পাশে উল্টে যায়। তখন তারা আমাদের গাড়ির ভেতর থেকে টেনে বের করে মারধর করে। পাশাপাশি ১৫ হাজার টাকা, মোবাইল ফোন, গাড়ি ও ধানের কাগজ ছিনিয়ে নিয়েছে।’
এ বিষয়ে আক্কেলপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন কুমার বলেন, তারা এলাকায় টহলে ছিলেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে ডাকাত দলের সদস্যরা পালিয়ে যায়। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের
সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।
জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’
জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’
জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’
আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’