সাধারণ শিক্ষার্থীর টাকায় তৈরি হচ্ছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রদলের টেন্ট (বসার স্থান)। ক্যাম্পাসের ঝালচত্বরের আমবাগানের বিপরীত পাশে বেশ কয়েকটি বড় গাছের শিকড় কেটে টেন্ট তৈরির কাজ চলছে।

এর জন্য শিক্ষার্থী তহবিল থেকে ছাত্রদলকে ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রকৌশল অফিস ও কোষাধ্যক্ষ দপ্তরের একাধিক সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ দাবি করেছেন, সব শিক্ষার্থীর জন্যই টেন্টটি তৈরি হচ্ছে। 

আমবাগানে সাধারণ শিক্ষার্থী বসার জন্য টেন্ট বানাতে প্রকৌশল অফিসে একটি আবেদন দেওয়া হয়। আবেদনটিতে সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষে ছাত্রদলের আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ সই করেন। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রকৌশল অফিস নোট দিলে শিক্ষার্থী তহবিল থেকে এই অর্থ বরাদ্দ দেয় প্রশাসন।

বিষয়টি জানাজানি হলে ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয় আলোচনা। শিক্ষার্থীরা বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীর জন্য টেন্ট বানাতে হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বানাবে। ছাত্রদলের মাধ্যমে যদি এ কাজ করাতে হয় তাহলে প্রশাসনের কাজ কী? আর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে পরিমাণ টেন্ট রয়েছে, সেগুলো নিয়মিত পরিষ্কার রাখলে তা শিক্ষার্থীদের বসার জন্য পর্যাপ্ত। এসব কাজের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে ফের দুর্নীতির পথ খুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। 

এ ব্যাপারে ছাত্রদল আহ্বায়ক সাহেদ আহম্মেদ বলেন, ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যবর্ধন ও শিক্ষার্থীদের বসার জন্য টেন্ট বানাতে আমি আবেদন করে এই বরাদ্দটা নিয়েছি। ছাত্রদলকে বরাদ্দ দিয়েছে বলে যে শুধু ছাত্রদলই এখানে বসবে এমন না, সবাই বসতে পারবে। সব শিক্ষার্থীর জন্য এটি তৈরি হচ্ছে। আর প্রশাসন তো আমাদের কোনো নগদ টাকা দেয়নি। প্রশাসনের নিজস্ব দরপত্রের মাধ্যমে এটির কাজ হচ্ছে।

প্রকৌশল অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ.

কে.এম. শরীফ উদ্দীন বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীদের বসার জন্য আমবাগানে টেন্ট বানাতে একটি আবেদন এসেছিল। আবেদনপত্রে সাধারণ শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে ছাত্রদলের আহ্বায়ক সই দিয়েছিলেন। পরে আমবাগানে টেন্ট বানাতে টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি শুধু বরাদ্দের অর্থ ছাড় দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের জন্য যে ফান্ড রয়েছে, সেখান থেকে টাকাটা দেওয়া হয়েছে। 
উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ধরেননি।

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, এ বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই। আর্থিক বিষয়গুলোর সঙ্গে আমি সংশ্লিষ্ট নই।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলে ইরানের নতুন হামলায় নিহত ৩, আহত ২৯

ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে অন্তত চার জায়গায় হামলা চালিয়েছে ইরান। এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জেরুজালেম পোস্ট।

আজ সোমবার আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের অ্যাম্বুলেন্স ও ব্লাড ব্যাংক সংস্থাগুলো বলছে, এসব হামলায় ২৯ জন আহত হয়েছেন। 

এর আগে সিএনএন ইসরায়েলের ১৫ জন নিহত হওয়ার খবর দেয়। ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম কানের খবর বলছে, ইসরায়েলের মধ্যাঞ্চলে হামলায় একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। এছাড়াও বন্দরনগরী হাইফায় অন্তত দুইজন আহত হয়েছেন। এছাড়াও সেখান আরও তিনজন নিখোঁজ রয়েছেন।

এর আগে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছিল, ইরান থেকে নতুন করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু হয়েছে। একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র শনাক্ত করেছে ইসরায়েল। বর্তমানে হামলা প্রতিহত করার কাজ চলছে বলে জানিয়েছে আইডিএফ।

আজ সিএনএনের এক খবরে বলা হয়েছে, তেল আবিব ও জেরুজালেমসহ ইসরায়েলের বিভিন্ন শহরে জরুরি সতর্ক সংকেত (সাইরেন) বাজতে শুরু করেছে। আইডিএফ সতর্ক করে বলেছে, তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পুরোপুরি অভেদ্য নয়।

সিএনএনের একজন প্রযোজক জেরুজালেমে সাইরেন এবং একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শুনেছেন। তার তোলা ভিডিওতে আকাশে বহু ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে যেতে দেখা গেছে।

ইসরায়েলের জরুরি পরিষেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড আদোম জানিয়েছে, তাদের দলগুলো আক্রান্ত এলাকার দিকে রওনা দিয়েছে।

সারা দেশের নাগরিকদের আশ্রয়কেন্দ্রে ঢুকতে এবং পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সেখানে থাকার আহ্বান জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক্সে দেওয়া এক পোস্টে বলেছে, বর্তমানে বিমানবাহিনী হামলা প্রতিহত করার পাশাপাশি পাল্টা হামলা চালানোর কাজ করছে।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়াইনেট নিউজ জানিয়েছে, মধ্য ইসরায়েলের পেতাহ টিকভা শহরের একটি ভবনে একটি ইসরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র সরাসরি আঘাত হেনেছে। হামলার ফলে ওই স্থানে আগুন ধরে যায়। তবে এ ঘটনায় তাৎক্ষণিকভাবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

এদিকে মধ্য ইরানে একাধিক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। দেশটির সেনাবাহিনী এ তথ্য জানিয়েছে। আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর দাবি, বিভিন্ন ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনা লক্ষ্য করে এসব হামলা চালানো হয়েছে।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি বিমানবাহিনী সফলভাবে মধ্য ইরানে অবস্থিত একাধিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্য বলছে, এসব স্থাপনা থেকে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হচ্ছিল।’

তবে ইসরায়েলের এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ইরান এখনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয়নি।

এদিকে ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরায়েলি বিমান হামলায় রোববার পর্যন্ত নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২২৪ জনে পৌঁছেছে।

বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে ৯০ শতাংশেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক। হামলায় ১ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।

এপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ওই হামলায় ইরানের নাতাঞ্জ ও ইসফাহান অঞ্চলের পারমাণবিক স্থাপনা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা ও পারমাণবিক বিজ্ঞানী নিহত হন। ইরানে বর্তমানে মসজিদ ও মেট্রো স্টেশনগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের তিন শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছেন। রোববার ইসরায়েল সরকারের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

ইসরায়েল কর্তৃপক্ষ বলেছে, এছাড়া ইরানের হামলায় কমপক্ষে ৩৮৫ জন আহত হয়েছেন, যার মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর।

এদিকে ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, তেল আবিবের দক্ষিণে অবস্থিত বাত ইয়াম শহরে ৬ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। এছাড়া সাতজন এখনও নিখোঁজ। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছেন জরুরি সেবাদানকারীরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ