দেশে আর কোনো লুণ্ঠনকারীদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ জনগণকে বোকা বানিয়ে রাজনীতিকে ব্যবসায় পরিণত করেছিল। তারা রাজনীতিকে ব্যবহার করে জনগণকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছিল। বাংলার মাটিতে আর কোনো লুণ্ঠনকারীদের ক্ষমতায় আসতে দেওয়া যাবে না।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জয়পুরহাট সার্কিট হাউস মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামীর আয়োজনে কর্মী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

ডা.

শফিকুর রহমান বলেন, জামায়াতে ইসলামী একটি সু-সংগঠিত দল। এই দলের নেতাকর্মীরা কেউ মাদক, চাঁদাবাজি, দখলদারি, টেন্ডারবাজিসহ কোনো ধরনের সামাজিক অপরাধের সাথে জড়িত নয়। এর আগে জামায়াতের একাধিক মন্ত্রী ও এমপি দেশ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন। তাদের হাতে আজ পর্যন্ত কোনো প্রকার দুর্নীতির গন্ধ লাগেনি। আমরা একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। যেখানে সবার জন্য সমান অধিকার থাকবে। জামায়াত ক্ষমতায় আসলে নারীরা নিরাপদ থাকবে; তাদের অধিকার নিশ্চিত করা হবে।

জামায়াত আমির, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলে কেউ নেই। মন্দির গির্জাসহ অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ে কোনো পাহারাদারের প্রয়োজন নাই।

আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তরতাজা মানুষকে ধরে এনে পাখির মতো মেরে ফেলেছে। পার্শ্ববর্তী বগুড়ার বাবা-ছেলেসহ তিনজনকে তুলে নিয়ে এসে চোখ অন্ধ করে দিয়েছে। জয়পুরহাটেও শিক্ষার্থী বিশালসহ অনেককেই নির্মমভাবে তারা হত্যা করেছে। প্রত্যেকটি গণহত্যার বিচার বাংলার মাটিতে হতেই হবে। যদি দুর্নীতি ও দুঃশাসন না করতো তাহলে দেশ অকল্পনীয় সাফল্য অর্জন করতো। দেশকে কারাগার বানিয়ে ফেলেছিল পতিত ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার। আওয়ামী লীগের পাপের ভার পূর্ণ হওয়ায় তারা সদলবলে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, আগে সংস্কার তারপর নির্বাচন। গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমরা বর্তমান সরকারকে যথেষ্ট পরিমাণ সময় দিতে চাই। অবাধ নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে যে কেউ দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পেতে পারেন। আমরা গঠনমূলক নির্বাচন দেখতে চাই। 

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে জামায়াত আমির বলেন, আজও আন্দোলন শেষ হয়নি। আমাদেরকে সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। আগামী নির্বাচনে এই জেলার দুটি আসনে জামায়াতের মনোনীত প্রার্থীদের বিজয়ী করতে হবে।

কর্মী সম্মেলনে জেলা জামায়াতের আমির ডা. ফজলুর রহমান সাঈদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মো. রফিকুল ইসলাম খান, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মসলিশে শুরা সদস্য ও বগুড়া অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, জয়পুরহাট জেলা সেক্রেটারি মাওলানা গোলাম কিবরিয়া মন্ডল, সহকারী সেক্রেটারি হাসিবুল আলম, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট মামুনুর রশিদ, জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি এস এম রাশেদুল আলম সবুজ, জয়পুরহাট শহর জামায়াতের আমির মাওলানা আনোয়ার হোসেন, সিরাজগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা শাহীনুর আলম, বগুড়া জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ আবদুল হক প্রমুখ। এ সময় জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়নের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ম য় ত ইসল ম জ ম য় ত র আম র আওয় ম ল গ ইসল ম র ক ষমত য় সহক র আওয় ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

পাল্টাপাল্টি হামলার তীব্রতা বাড়ল

ইরান ও ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলা ঘিরে আরও অশান্ত হয়ে উঠেছে মধ্যপ্রাচ্য। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে হামলার তীব্রতা বাড়াচ্ছে দুই দেশ। ইসরায়েলে গত শনিবার রাতভর ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন। একই রাতে ইরানের গ্যাসক্ষেত্র ও তেল শোধনাগারে বোমা হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এ হামলায় ইরানের কতজন নিহত হয়েছে, তা সুনির্দিষ্টভাবে জানা যায়নি।

গতকাল রোববার ছিল দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলার তৃতীয় দিন। শনিবার রাতের পর রোববার দিনের বেলায়ও পাল্টাপাল্টি হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। এদিন ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা জানিয়েছে ইয়েমেনের সশস্ত্র

গোষ্ঠী হুতি। চলমান সংঘাতে এই প্রথম ইরানপন্থী কোনো গোষ্ঠী যোগ দিল। এমন পরিস্থিতিতে দুই দেশকে শান্ত করার জন্য প্রচেষ্টা শুরু করেছে বিভিন্ন দেশ।

গতকাল রাত একটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি হামলা চলছিল। এ রাতেও তেহরানের নিয়াভারান, ভালিয়াসর ও হাফতে তির স্কয়ার এলাকায় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। ইরানের পূর্বাঞ্চলে মাশহাদ বিমানবন্দরে একটি ‘রিফুয়েলিং’ উড়োজাহাজে আঘাত হানার কথা জানায় ইসরায়েলি বাহিনী। এই উড়োজাহাজগুলো আকাশে থাকা অবস্থায় অন্য উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ করতে সক্ষম। ইরান থেকেও ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ার খবর পাওয়া গেছে।

ইসরায়েলে ব্যাপক হামলা ইরানের

ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি ঠেকানোর কথা বলে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেশটিতে প্রথমে হামলা চালায় ইসরায়েল। ওই রাতে ইসরায়েলের দুই শতাধিক যুদ্ধবিমান ইরানের ‘পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র’ স্থাপনায় আঘাত হানে। শুক্র ও শনিবারও ইরানে হামলা চলে। পাল্টা জবাব দিচ্ছে তেহরানও। তবে ইসরায়েলে শনিবার রাতভর ইরান যে হামলা চালিয়েছে, তা ছিল সবচেয়ে ব্যাপক।

ইসরায়েলে শনিবার প্রথম দফায় ইরানের হামলা শুরু হয় রাত ১১টার পরপর। এ সময় ইসরায়েলের জেরুজালেম ও হাইফা শহরে বেজে ওঠে সাইরেন। হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাইফায় অবস্থিত তেল শোধনাগার। পরে রাত আড়াইটার দিকে দ্বিতীয় দফায় হামলা শুরু করে ইরান। তখন তেল আবিব ও জেরুজালেমে বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, শনিবার রাতে দুই দফায় ৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ইরান। প্রথম দফায় ছোড়া হয় ৪০টি। এতে ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চলের তামরা শহরে চারজন নিহত হন। দ্বিতীয় দফায় ছোড়া হয় ৩৫টি ক্ষেপণাস্ত্র। এর একটি আঘাত হানে তেল আবিবের কাছে বাত ইয়াম এলাকায়। এতে অন্তত ছয়জন নিহত ও প্রায় ২০০ জন আহত হন। এ ছাড়া রেহভোত শহরে আহত হয়েছেন ৪০ জন।

ইসরায়েলি হামলায় জ্বলছে ইরানের শাহরান তেলের ডিপো। গতকাল দেশটির রাজধানী তেহরানের কাছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ