কুষ্টিয়ায় ছাত্রী উত্যক্ত করায় ৩ বখাটকে পুলিশে দিলেন শিক্ষক
Published: 30th, January 2025 GMT
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে একটি বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘হিজড়া’ বলে ট্রল করে এক বখাটে। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে ওই বখাটে। সেসময় ওই বখাটে তার আরো দুই সহপাঠীকে ডেকে নিয়ে যায় ওই বিদ্যালয়ে।
তারা বিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অসম্মানজনক আচরণ শুরু করেন। এ নিয়ে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হলে তিন বখাটেকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপার্দ করেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা ১টার দিকে উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন নগর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে ।
আকটকৃতরা হলো- আলাউদ্দিন নগর এলাকার আব্দুল মোমিনের ছেলে সোহান পারভেজ শুভ (১৮)। সে আলাউদ্দিন আহমেদ ডিগ্রী কলেজের কারিগরি শাখার এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
অপর দুজন হলো- একই এলাকার রাশেদুল ইসলামের ছেলে রাকিব হোসেন (১৮) এবং জমির উদ্দিনের ছেলে সোহাগ হোসেন (১৮)। তারা আলাউদ্দিন আহমেদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী।
নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক শিক্ষার্থীরা জানায়, মেয়েরা মাঠে বার্ষিক ক্রীড়া উপলক্ষ্যে খেলাধুলার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। সেসময় বখাটে শুভ বেপরোয়াভাবে মোটরসাইকেল নিয়ে বিদ্যালয়ে ঢুকে শিক্ষার্থীদের ‘হিজড়া’ বলে ট্রল করে। পরে শুভর আরো দুই সহপাঠী এসে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে অসাধু আচরণ করে।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে শুভ বলে, “নতুন ভোটার তালিকার কাজ শুরু হয়েছে। ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম আলাউদ্দিন নগর এলাকায় ভোটার তালিকার দায়িত্বে রয়েছেন। আমার এবং আমার বোনের ভোটার তালিকা জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি শহিদুল ইসলামের কাছে দিতে এসেছিলাম। ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটা হয়েছে।”
আটকৃত সোহাগ বলে, “অবরুদ্ধের খবর পেয়ে আমি আর রাকিব শুভকে নিয়ে যেতে বিদ্যালয়ে এসে ফেঁসে গেছি। আমরা কিছু করিনি।”
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক শহিদুল ইসলাম বলেন, “ভোটার তালিকা চলছে গ্রামে। তবে বখাটে শুভ বিদ্যালয়ে ঢুকে অসাধু আচরণ শুরু করে। পরে আরো দুইজন এসে উত্তেজনা সৃষ্টি করলে তাদের আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়।”
অভিযুক্ত শুভর বাবা আব্দুল মোমিন বলেন, “শিক্ষকদের কাছে ভোটার তালিকার কাগজপত্রাদি জমা দিতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলে মিটমাট করা হবে।”
কুমারখালী থানার ওসি মো.
ঢাকা/কাঞ্চন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’