আগামী সপ্তাহে হোয়াইট হাউসে সফরের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এই আমন্ত্রণ এমন এক সময়ে এসেছে যখন যুক্তরাষ্ট্র থেকে একটি সামরিক বিমান ভারতের অভিবাসী প্রত্যাশীদের ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। খবর রয়টার্সের।

এদিকে যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তবে এই সফরের বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হয়নি।

মঙ্গলবার বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সম্ভবত আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন বলে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।

নতুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি শপথ নেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর এক সপ্তাহ পরে ২৭ জানুয়ারি মার্কিন রিপাবলিকান এই প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন মোদি। ওই ফোনকলে বাণিজ্য, জ্বালানি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-মার্কিন সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর ফোকাস-সহ উভয় দেশের “বিশ্বস্ত” অংশীদারিত্বের দিকে কাজ করতে সম্মত হন মোদি এবং ট্রাম্প। দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পর এটাই হবে মোদির প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর। 

ভ্রমণ পরিকল্পনা অনুসারে, মোদি তার দুই দিনের প্যারিস সফরের পরে ওয়াশিংটন ডিসির উদ্দেশ্যে রওনা হবেন বলে সূত্রগুলো জানিয়েছে। তবে এই বিষয়ে এখনও কোনও আনুষ্ঠানিক ঘোষণা নেই। আগামী ১০ এবং ১১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স অ্যাকশন শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ফ্রান্সের প্যারিস যাবেন তিনি।

যদি প্যারিস থেকে মোদি যুক্তরাষ্ট্রে যান, তবে এই সফর অভিবাসন এবং শুল্ক নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ভারতের উদ্বেগের মধ্যেই হবে। এদিকে নথিবিহীন ভারতীয় অভিবাসীদের ফেরত পাঠানো শুরু করেছে ওয়াশিংটন। মার্কিন সেনাবাহিনীর একটি সি-১৭ উড়োজাহাজ বেশ কয়েক জন ভারতীয়কে নিয়ে রওনা যুক্তরাষ্ট্রের ভূখণ্ড থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা হয়েছে বলে জানা গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন ও কাস্টমস বিষয়ক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন এ তথ্য। তবে যুক্তরাষ্ট্রের কোন অঙ্গরাজ্য থেকে উড়োজাহাজটি ছেড়েছে, ভারতের কোথায় সেটি অবতরণ করবে এবং উড়োজাহাজটিতে কতজন ভারতীয় রয়েছেন— এসব প্রশ্নের কোনো উত্তর এখনও পাওয়া যায়নি, তবে আইসিই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ২৪ ঘণ্টারও বেশি সময় পর ভারতের ভূখণ্ড স্পর্শ করবে বিমানটি।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রাথমিকভাবে ১৮ হাজার ভারতীয় নথিবিহীন অভিবাসীকে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদেরই প্রথম ব্যাচটিকে তোলা হয়েছে বিমানে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না

জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষ মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান। তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে সরাসরি চলে যেতে এখনও বলছে না। বরং একটা ভালো নির্বাচন উপহার দিতে সরকারই নির্বাচন আয়োজনের দিকে যাচ্ছে।

কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আলজাজিরায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘মুহাম্মদ ইউনূস: রিয়েল রিফর্ম অর জাস্ট আ নিউ রুলিং ক্লাস ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে সাক্ষাৎকারটি গতকাল রোববার আলজাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়। দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জুলাই বিপ্লব, সাবেক স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়া, সাবেক সরকারের দুর্নীতিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে  কথা বলেন তিনি।

বাংলাদেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং উদাহরণ সৃষ্টিকারী নির্বাচন উপহার দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের আগে সংস্কারের তালিকা ছোট হলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন এবং তালিকা বড় হলে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা এখনও তুঙ্গে রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণ মনে করে অন্তর্বর্তী সরকার এখনও তাদের জন্য ভালো সমাধান।

আলজাজিরার উপস্থাপক ড. ইউনূসকে প্রশ্ন করেন, এটা কি বলা ঠিক যে, শেখ হাসিনার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ‘মধুচন্দ্রিমা’ এখন সম্ভবত শেষ হয়েছে? কিছু বেশ বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেগুলোর সুনির্দিষ্ট জবাব আপনাকে দিতে হবে। কারণ, পুরোনো ক্ষমতাধরদের প্রভাব রয়েছে, অনেকে রাজনৈতিক শূন্যতাকে কাজে লাগাতে চাইতে পারে।

লাখ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সমাধান কি বাংলাদেশ একা করতে পারবে? জবাবে ড. ইউনূস বলেন, আমরা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও জাতিসংঘের সঙ্গে রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে কাজ করছি। তারা যাতে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে কিছু বোঝাপড়া যাতে তৈরি হয়।

নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা– এমন প্রশ্নের জবাবে ড. ইউনূস বলেন, এ প্রশ্নের জবাবের একটি অংশ আওয়ামী লীগকেই নির্ধারণ করতে হবে। দলটি আগে নিজেই সিদ্ধান্ত নেবে– তারা নির্বাচনে যোগ দেবে কিনা। তারা এখনও কিছু ঘোষণা করেনি। তা ছাড়া নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশন কী প্রতিক্রিয়া দেয়, সেটাসহ নানা বিষয় সামনে আসতে পারে।

তাহলে আওয়ামী লীগের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপর ছেড়ে দিচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি তা নয়। অন্যান্য রাজনৈতিক দল আছে, যারা বলতে পারে যে, এই আইনের অধীনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে না।

সাক্ষাৎকারে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠকের প্রসঙ্গ ওঠে। ড. ইউনূস জানান, তিনি বিমসটেক সম্মেলনের ফাঁকে মোদির সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘চুপ’ রাখতে বলেছিলেন তিনি। জবাবে মোদি বলেছিলেন, এটা তাঁর জন্য সম্ভব নয়। শেখ হাসিনা সামাজিক মাধ্যম ব্যবহার করে কিছু বললে, সেটি তিনি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, পাকিস্তান ও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ড. ইউনূস বলেন, একসঙ্গে কাজ করার নীতি নিয়ে আগাতে চাই। আমরা একসঙ্গেই পারস্পরিক সহযোগিতামূলক পদক্ষেপ নিতে চাই।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মে দিবস ২০২৫ : শ্রমিক-মালিক ঐক্যে গড়বে নতুন বাংলাদেশ
  • বিদ্যালয়ের ১৮টি গাছ বিক্রি করলেন প্রধান শিক্ষক 
  • কর্ণাটকে ক্রিকেট খেলার সময় বচসা, যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • দেশে আন্তর্জাতিক পেমেন্ট গেটওয়ে চালুর দাবি 
  • রাখাইন রাজ্যে ‘মানবিক করিডোর’ বিষয়ে ব্যাখ্যা দিলেন প্রেস সচিব
  • কানাডায় আবারও লিবারেল পার্টির সরকার গঠনের আভাস
  • আ.লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তাদেরকেই নির্ধারণ করতে হবে
  • জনগণ তাড়াতাড়ি ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা বলছে না
  • আ.লীগ নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তাদেরকেই নির্ধারণ করতে হবে: ড. ইউনূস
  • অন্তর্বর্তী সরকারকে মানুষ এখনও ভালো সমাধান মনে করছে: আল জাজিরাকে