আখেরি মোনাজাতে শেষ হচ্ছে প্রথম ধাপের বিশ্ব ইজতেমা
Published: 5th, February 2025 GMT
গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে সুরায়ে নেজামের (যোবায়ের অনুসারী) ৫৮তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপ আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হচ্ছে। আজ বুধবার দুপুর ১২টায় আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে।
মাওলানা মোহাম্মদ যোবায়ের আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বলে জানিয়েছেন ইজতেমার মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।
এদিকে আজ তাবলিগ জামাতের দেশি-বিদেশি শীর্ষ মুরুব্বি ও আলেমগণ মুসল্লিদের উদ্দেশে বিভিন্ন ভাষায় গুরুত্বপূর্ণ বয়ান করছেন। তারা নফল নামাজ, তাসবিহ্, তাহলিল, জিকির-আসকরের মধ্য দিয়ে গতকাল মঙ্গলবার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপের দ্বিতীয় দিন অতিবাহিত করেন।
মঙ্গলবার বাদ ফজর বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা উবায়দুল্লাহ খুরশিদ। তার বয়ান বাংলায় তরজমা করেন বাংলাদেশের মাওলানা জাকারিয়া। সকাল পৌনে ১০টায় বয়ান মিম্বারের সামনে ওলামায়ে কেরামের সঙ্গে আলোচনা করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহীম দেওলা। পরে মাদ্রাসা ছাত্রদের ত্বলাবাদের সঙ্গে কথা বলেন পাকিস্তানের মাওলানা ফরীদ আহমেদ। বাদ জোহর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ঈসমাইল গোদরা। বাদ মাগরিব বয়ান করেন ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলা।
আজ মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে মাওলানা যোবায়ের অনুসারিদের এ বছরের ইজতেমা। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মাওলানা সাদ অনুসারিদের ইজতেমা হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
লাখপুরের রংবাহারি রাম্বুটান
১৯ জুলাই সকাল ১০টা। নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার মরজাল বাজারে গাড়ি থেকে নামলাম। ততক্ষণে ব্যাপারীদের পাইকারি কেনাকাটা শেষ। মালপত্র বেঁধেছেঁদে গাড়িতে তোলা হচ্ছে। কিন্তু ফুটপাতে তখনো ভিড়। খুচরা ক্রেতারা পছন্দের জিনিস কিনতে দরদাম করছেন। ভিড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লাম, দেখা যাক কী পাওয়া যায়।
কাঁঠালের দোকানে তেমন ভিড় নেই। লটকনের দোকান বেশি, বিক্রিও ভালো। আকার অনুযায়ী দাম। এখানে না এলে জানতামই না, এত বড় আকারের লটকন হতে পারে! এক গৃহস্থ টুকরিতে কলম্বো লেবু নিয়ে বসে আছেন। এই লেবু আকৃতি ও সুগন্ধের জন্য বিখ্যাত। আরেকটু এগিয়ে গিয়ে থামতেই হলো। কয়েকটি দোকানে সাজানো হলুদ আর লাল রঙের রাম্বুটান!
দেখতে ফুলের মতো আকর্ষণীয় রঙের এই ফল সবার নজর কাড়ছে। ক্রেতারা দাম জানতে চাইছেন। কেউ কেউ কিনছেনও। জানতে চাইলাম, এই রাম্বুটান কোথা থেকে এল? দোকানির উত্তর শুনে চোখ ছানাবড়া। নরসিংদীর কয়েকটি গ্রামেই নাকি ইদানীং চাষ হচ্ছে রাম্বুটান। দারুণ ব্যাপার। এ খবর জানা ছিল না।
কাছাকাছি দূরত্বে কোনো গ্রামে গেলে কি রাম্বুটানের বাগান দেখতে পাওয়া যাবে? এ প্রশ্নের উত্তর দিলেন স্থানীয় কৃষি উদ্যোক্তা মো. সুজন মিয়া। তিনি জানালেন,Ñকাছেই বেলাব উপজেলার লাখপুর গ্রামে চমৎকার একটি বাগান আছে।
আমরা দ্রুত বাগানের পথ ধরি। বাগানে যেতে যেতে মনে হলোÑ ঘন গাছপালার ছাউনির ভেতর দিয়ে ক্রমেই যেন হারিয়ে যাচ্ছি! এখানকার বেশির ভাগ গাছই লটকনের। বাগানগুলো এতই বড় যে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ভালোভাবে দেখা যায় না।
অল্প সময়ের মধ্যে পৌঁছে গেলাম লাখপুর গ্রামে। উয়ারী ও বটেশ্বর–লাগোয়া এই গ্রামে রাম্বুটানের বাগানে গিয়ে চমকে উঠি। বেশ বড় বড় অনেক গাছ। গাছে গাছে দুই রঙের রাম্বুটান। চমৎকার দৃশ্য।
এ রংবাহারি ফল দেখার জন্য সারা দিন অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কেউ কেউ দেখছেন, আবার কিনছেনও। একটু সময় নিয়ে বাগানটি ঘুরে দেখি। ছয়-সাত বছর বয়সী সব গাছই ফলভারে আনত। পাকা ফলগুলো দেখতে রঙের ঝরনাধারার মতো, বহুবর্ণিল। বাগান থেকে তরতাজা কিছু ফল কিনি। মন ভরে ছবি তুলি।
একসময় রাম্বুটান চিনতাম না। ২০০৫ সালে হংকংয়ে বেড়াতে গিয়ে বন্ধু মোস্তাফিজুর রহমান শাহিনের বাসায় প্রথম এ ফল খাই। পরে কুয়ালালামপুর শহরের আশপাশে রাম্বুটানের অনেক গাছ দেখেছি। দুই বছর পর বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জার্মপ্লাজম সেন্টারে গাছভর্তি রাম্বুটান দেখে চমৎকৃত হয়েছিলাম। বীজ থেকে তৈরি চারাগুলো সেখানে প্রথম লাগানো হয় ১৯৯৮ সালে। প্রায় সাত বছর পর গাছগুলোতে ফল আসতে শুরু করে। আকৃতি ও স্বাদের দিক থেকেও ফলগুলো সমমানের।
বাগানে সুদর্শন হলুদ রঙের রাম্বুটান