কানের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার নারী জুরিপ্রধান হলেন জুলিয়েট বিনোশ
Published: 5th, February 2025 GMT
বিশ্ব সিনেমার বর্ণাঢ্য আসর কান চলচ্চিত্র উৎসব। আগামী ১৩ থেকে ২৪ মে অনুষ্ঠিত হবে কানের ৭৮তম আসর। এই আসরে বিগতবারের মত এবারও সভাপতির দায়িত্বে থাকছেন ইরিস নোব্লখ ।
উৎসবের শিডিউলের সঙ্গে আরও এক খবর জানিয়ে দিল উৎসব কর্তৃপক্ষ। এক মেইলবার্তায় কান কর্তৃপক্ষ সমকালকে জানায় এবার জুরিপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফরাসি অভিনেত্রী জুলিয়েট বিনোশ। গতবার ছিলেন নির্মাতা গ্রেটা গারউইগ। পরপর দুই বছর জুরিপ্রধান হিসেবে নারী নির্বাচিত হলেন, কানের ইতিহাসে এই ঘটনা এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ঘটল।
এর মধ্য দিয়ে কানের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার কোনো নারী জুরিপ্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে বার্বিখ্যাত পরিচালক গ্রেটা গারউইগ প্রথম নারী হিসেবে জুরির সভাপতির আসনে বসেছিলেন।
৪০ বছর আগে কান উৎসবে প্রথম গিয়েছিলেন বিনোশ। ১৯৮৫ সালে আন্দ্রে টেকিনের ‘রেন্ডেজ-ভাউস’ সিনেমার প্রিমিয়ার হয়েছিল কানে। এটিই ছিল জুলিয়েট বিনোশের প্রথম উল্লেখযোগ্য সিনেমা। এটি দিয়েই পরিচিতি পান জুলিয়েট বিনোশ। অভিনেত্রী তাই প্রায়ই বলেন, ‘কান চলচ্চিত্র উৎসবেই আমার জন্ম।’
সেই থেকে বারবার তাঁর পা পড়েছে কানের আঙ্গিনায়। মাইকেল হ্যানেকের ‘কোড আননোন, ক্যাশে’, ডেভিড ক্রোনেনবার্গের ‘কসমোপলিস’, ক্রিজিস্টফ কিসলোস্কির ‘থ্রি কালারস: রেড’, অলিভিয়ার আসায়াসের ‘ক্লাউডস অব সিলস মারিয়া’, ক্লেয়ার ডেনিসের ‘লেট দ্য সানশাইন ইন’ ও ট্র্যান আন হাংয়ের ‘দ্য টেস্ট অব থিংস’ সিনেমা নিয়ে জুলিয়েট বিনোশ গেছেন কানে। ২০১০ সালে আব্বাস কিয়োরাস্তোমির ‘সার্টিফায়েড কপি’ সিনেমায় অভিনয় করে পেয়েছিলেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। তিনিই একমাত্র অভিনেত্রী, যিনি ইউরোপের প্রধান তিন উৎসব কান, ভেনিস ও বার্লিন; তিনটিতেই সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন।
কানের বিচারকপ্রধান হয়ে উচ্ছ্বসিত জুলিয়েট বিনোশ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘উৎসাহ ও অনিশ্চয়তা নিয়ে ১৯৮৫ সালে প্রথম পা রেখেছিলাম কানের প্রাঙ্গণে। ৪০ বছর পর যে সেখানে জুরি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্মান পাব, ভাবতেই পারিনি। এই সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ক ন চলচ চ ত র উৎসব প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
গোলের উৎসবের ম্যাচে বার্সা-ইন্টারের রুদ্ধশ্বাস ড্র
চ্যাম্পিয়নস লিগের সেমিফাইনাল মানেই তো উত্তেজনার চূড়ান্ত রূপ। আর মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) দিবাগত রাতে কাতালোনিয়ার মন্টজুইকে যা দেখা গেল— তা যেন শুধুই একটি ফুটবল ম্যাচ নয়, বরং ছয় গোলের অনির্দেশ্য গল্প। যেখানে বার্সেলোনা ও ইন্টার মিলান মিলে একসঙ্গে রচনা করল রোমাঞ্চ আর বীরত্বের এক অপূর্ব মহাকাব্য। দুইবার পিছিয়ে পড়েও অবিশ্বাস্য প্রত্যাবর্তনে ৩-৩ গোলে সমতা টানল কাতালান জায়ান্টরা।
ম্যাচ শুরুই হলো যেন বজ্রপাত দিয়ে। সময়ের কাঁটায় মিনিটও পেরোয়নি। এর মধ্যেই ইন্টারের মার্কুস তুরাম এক চতুর ব্যাকহিল ফিনিশে বল ঠেলে দেন জালে। সেই মুহূর্তে স্তব্ধ হয়ে পড়ে পুরো কাতালান রক্ষণভাগ। এরপর ২১ মিনিটে কর্নার থেকে ডেনজেল ডামফ্রিসের অ্যাক্রোবেটিক ভলিতে যেন বার্সার হৃদয়েই ঘা লাগে, ইন্টারের লিড তখন ২-০ গোলে।
তবে ইতিহাস বলে— বার্সেলোনার যখন দেয়ালে পিঠ ঠেকে যায়, তখনই তারা সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই ধারাতেই, ডানদিক থেকে দুরন্ত ছন্দে এগিয়ে এসে বক্সে ঢুকে বল জালে পাঠালেন কিশোর বিস্ময় লামিনে ইয়ামাল। ইন্টারের দ্বিতীয় গোলের মাত্র তিন মিনিট পর আসে এই গোল, যা এই ম্যাচে বার্সার ফেরার না বলা প্রতিশ্রুতি হয়ে উঠেছিল।
সেই ইয়ামাল পরে আরও একবার প্রায় গোল করে ফেলছিলেন। কিন্তু ভাগ্য মুখ ফিরিয়ে নেয়। বল লাগে পোস্টে। তবে কাতালান আশা তখনও নষ্ট হয়নি। ৩৮ মিনিটে ফেরান তোরেস ডানদিক থেকে আসা পাসে ওয়ান-টাইম ফিনিশে বল জড়ান জালে, ফিরিয়ে আনেন সমতা। ম্যাচ তখন যেন টানটান থ্রিলারে রূপ নেয় এবং শেষ হয় প্রথমার্ধ।
দ্বিতীয়ার্ধে বলের দখলে ও খেলার ছন্দে এগিয়ে থাকলেও ৬৪ মিনিটে আবারও হোঁচট খায় বার্সা। কর্নার থেকে হেডে ডামফ্রিস করেন তার দ্বিতীয় গোল। ইন্টার আবারও এগিয়ে যায়। কিন্তু বার্সা মানেই তো ক্ষণিকের বিশ্রামে আবার অগ্নি হয়ে ওঠা। দ্রুতই আসে জবাব। রাফিনহার দূরপাল্লার গর্জে ওঠা শট প্রথমে লাগে পোস্টে, এরপর ফিরে এসে লেগে যায় গোলরক্ষক ইয়ান সমারের পিঠে, এরপর বল ঢুকে পড়ে জালে। ম্যাচ আবারও ৩-৩। যদিও এটি আত্মঘাতী গোল হিসেবে গণ্য হয়, কাতালানদের জন্য তা যেন নবজন্মের এক চুম্বন।
শেষ বাঁশি পর্যন্ত দুই দলই তীব্রভাবে চেষ্টা করেছে জয় ছিনিয়ে নিতে। কিন্তু ভাগ্য সেদিন ছিল ভারসাম্যপন্থী।
এখন সব অপেক্ষা দ্বিতীয় লেগের। আগামী ৬ মে মিলানের ঐতিহাসিক সান সিরো স্টেডিয়ামে লেখা হবে এই নাটকের অন্তিম অঙ্ক। এক ম্যাচ, এক ফলাফল, এক জয়ী— আর সেই জয়ীর জন্য অপেক্ষা করছে মিউনিখের আলো-আড়ম্বরের রাত। ইউরোপীয় ফুটবলের মঞ্চে চূড়ান্ত পরীক্ষার দিন।
সান সিরোর আকাশে হয়তো আবার জ্বলে উঠবে এক নতুন রূপকথার তারা।
ঢাকা/আমিনুল