বিশ্ব সিনেমার বর্ণাঢ্য আসর কান চলচ্চিত্র উৎসব। আগামী ১৩ থেকে ২৪ মে অনুষ্ঠিত হবে কানের ৭৮তম আসর।  এই আসরে বিগতবারের মত এবারও সভাপতির দায়িত্বে থাকছেন ইরিস নোব্লখ ।

উৎসবের শিডিউলের সঙ্গে আরও এক খবর জানিয়ে দিল উৎসব কর্তৃপক্ষ। এক মেইলবার্তায় কান কর্তৃপক্ষ সমকালকে জানায় এবার জুরিপ্রধান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন ফরাসি অভিনেত্রী জুলিয়েট বিনোশ। গতবার ছিলেন নির্মাতা গ্রেটা গারউইগ। পরপর দুই বছর জুরিপ্রধান হিসেবে নারী নির্বাচিত হলেন, কানের ইতিহাসে এই ঘটনা এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ঘটল।

এর মধ্য দিয়ে কানের ইতিহাসে দ্বিতীয়বার কোনো নারী জুরিপ্রধানের দায়িত্ব পালন করবেন। এর আগে বার্বিখ্যাত পরিচালক গ্রেটা গারউইগ প্রথম নারী হিসেবে জুরির সভাপতির আসনে বসেছিলেন। 

৪০ বছর আগে কান উৎসবে প্রথম গিয়েছিলেন বিনোশ। ১৯৮৫ সালে আন্দ্রে টেকিনের ‘রেন্ডেজ-ভাউস’ সিনেমার প্রিমিয়ার হয়েছিল কানে। এটিই ছিল জুলিয়েট বিনোশের প্রথম উল্লেখযোগ্য সিনেমা। এটি দিয়েই পরিচিতি পান জুলিয়েট বিনোশ। অভিনেত্রী তাই প্রায়ই বলেন, ‘কান চলচ্চিত্র উৎসবেই আমার জন্ম।’

সেই থেকে বারবার তাঁর পা পড়েছে কানের আঙ্গিনায়। মাইকেল হ্যানেকের ‘কোড আননোন, ক্যাশে’, ডেভিড ক্রোনেনবার্গের ‘কসমোপলিস’, ক্রিজিস্টফ কিসলোস্কির ‘থ্রি কালারস: রেড’, অলিভিয়ার আসায়াসের ‘ক্লাউডস অব সিলস মারিয়া’, ক্লেয়ার ডেনিসের ‘লেট দ্য সানশাইন ইন’ ও ট্র্যান আন হাংয়ের ‘দ্য টেস্ট অব থিংস’ সিনেমা নিয়ে জুলিয়েট বিনোশ গেছেন কানে। ২০১০ সালে আব্বাস কিয়োরাস্তোমির ‘সার্টিফায়েড কপি’ সিনেমায় অভিনয় করে পেয়েছিলেন সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার। তিনিই একমাত্র অভিনেত্রী, যিনি ইউরোপের প্রধান তিন উৎসব কান, ভেনিস ও বার্লিন; তিনটিতেই সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন।

কানের বিচারকপ্রধান হয়ে উচ্ছ্বসিত জুলিয়েট বিনোশ। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘উৎসাহ ও অনিশ্চয়তা নিয়ে ১৯৮৫ সালে প্রথম পা রেখেছিলাম কানের প্রাঙ্গণে। ৪০ বছর পর যে সেখানে জুরি প্রেসিডেন্ট হওয়ার সম্মান পাব, ভাবতেই পারিনি। এই সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক ন চলচ চ ত র উৎসব প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বকুলতলায় বৃষ্টির সুর
  • কলকাতায় নতুন সিনেমার শুটিং শুরু করলেন জয়া
  • বর্ষা উৎসবে বন ও পরিবেশ ধ্বংসের প্রতিবাদ, পান্থকুঞ্জ পার্ক রক্ষাসহ কয়েকটি দাবি
  • নাচ-গান-আবৃত্তিতে চারুকলায় বর্ষাবরণ
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরির সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • মেঘ-রোদের লুকোচুরি সকালে নাচে-গানে বর্ষাবরণ 
  • আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
  • কলিজা ঠান্ডা করে দেওয়া ছবি ‘উৎসব’
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • ভালোবাসার ফ্রেমে মেহজাবীন-রাজীব, পেছনে আইফেল টাওয়ার