নায়ক শাহরুখ, তবু অভিনয়ের প্রস্তাব ফেরান কাজল
Published: 7th, February 2025 GMT
বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী কাজল। অভিনয় ক্যারিয়ারে শাহরুখ খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে তুমুল জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন। এ তালিকায় রয়েছে— ‘বাজিগর’, ‘দিলওয়ালে দুলহনিয়া লে জায়েঙ্গে’, ‘কুছ কুছ হোতা হ্যায়’, ‘কাভি খুশি কাভি গম’ প্রভৃতি। সহকর্মীর বাইরেও শাহরুখ-কাজলের ব্যক্তিগত সম্পর্ক দারুণ। কিন্তু বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় সিনেমায় শাহরুখের বিপরীতে অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়া হলেও তা ফিরিয়ে দেন কাজল।
১৯৯৭ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় যশ চোপড়া নির্মিত ‘দিল তো পাগল হ্যায়’। সিনেমাটিতে শাহরুখের বিপরীতে অভিনয় করেন মাধুরী দীক্ষিত এবং করিশমা কাপুর। সিনেমাটির নায়িকা হিসেবে প্রথমে কাজলকে পছন্দ করেছিলেন নির্মাতারা। কিন্তু সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন কাজল।
আরো পড়ুন:
আমি একজন ব্লাডি স্টার: শাহরুখ
বলিউডের ‘লাস্ট সুপারস্টার’ তারা!
‘দিল তো পাগল হ্যায়’ সিনেমায় নিশার চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় কারিশমাকে। মুখ্যচরিত্র হলেও সিনেমায় দ্বিতীয় নায়িকার ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। নিশা চরিত্রের জন্যই কাজলকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন নির্মাতারা। শোনা যায়, দ্বিতীয় নায়িকার ভূমিকায় অভিনয়ের প্রস্তাব দেওয়ায় তা ফিরিয়েছিলেন কাজল।
২০০৪ সালে যশ চোপড়া নির্মিত রোমান্টিক ঘরানার ‘বীর জারা’ সিনেমা মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে শাহরুখের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হন প্রীতি জিনতা। মুক্তির পর দর্শকরাও সিনেমাটির প্রশংসা করেন। কিন্তু এই সিনেমার নায়িকা হিসেবে প্রীতিকে প্রথম পছন্দ ছিলেন না নির্মাতাদের। বরং শাহরুখের বিপরীতে জুটি বাঁধার জন্য কাজলকে প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু অজানা কারণে এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন এই অভিনেত্রী।
২০০০ সালে যশ চোপড়ার পুত্র আদিত্য চোপড়া পরিচালিত ‘মহব্বতে’ সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। বলিউড ‘বাদশা’ শাহরুখের পাশাপাশি অভিনয় করেন বলিপাড়ার ‘শাহেনশাহ’ অমিতাভ বচ্চন। শাহরুখের বিপরীতে দেখা যায় ঐশ্বরিয়া রাইকে। তবে বচ্চন-পুত্রবধূ নন, নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ ছিলেন কাজল। কিন্তু কাজল সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে ঐশ্বরিয়াকে প্রস্তাব দেন তারা। ঐশ্বরিয়াও তা সাদরে গ্রহণ করেন।
২০০৬ সালে করন জোহর নির্মাণ করেন ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’ সিনেমা। তারকাখচিত এই সিনেমায় শাহরুখ, প্রীতি, অমিতাভ ছাড়াও অভিনয় করেন রানী মুখার্জি, অভিষেক বচ্চন, কিরণ খেরের মতো বলিউড তারকারা। এতে শাহরুখের স্ত্রীর ভূমিকায় দেখা যায় প্রীতিকে। চিত্রনাট্য অনুযায়ী মায়া নামের একটি চরিত্রের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন শাহরুখ। এই মায়া চরিত্রেই প্রথমে অভিনয় করার কথা ছিল কাজলের।
সিনেমাটির চিত্রনাট্যের খসড়াও শুনেছিলেন কাজল। কিন্তু মায়ার চরিত্রনির্মাণ মনে ধরেনি এই অভিনেত্রীর। ‘কাভি আলবিদা না কেহনা’ সিনেমায় দেখা যায় ‘মায়া’ বিবাহিত। স্বামীর সঙ্গে তার মধুর সম্পর্ক নেই। অন্য এক বিবাহিত পুরুষের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। কাজলের দাবি, মায়ার উচিত ছিল পরকীয়ায় না জড়িয়ে বৈবাহিক জীবনে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান করা। যেহেতু তা হয়নি, তাই চরিত্রটিতে অভিনয়ের প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন কাজল। তারপর সেই চরিত্রে অভিনয় করেন রানী।
মণি রত্নম নির্মিত ‘দিল সে’ সিনেমা ১৯৯৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। সিনেমাটিতে শাহরুখের সঙ্গে অভিনয় করেন মনীষা কৈরালা ও প্রীতি। মেঘনা চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় মনীষাকে। এই চরিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছিলেন কাজল। কিন্তু তা বুঝতে পারেননি অভিনেত্রী। নিজের অজান্তে সিনেমাটিতে অভিনয়ের সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন কাজল।
‘কফি উইথ করন’ অনুষ্ঠানে কাজলকে করন জোহর জানান, মণি রত্নম ফোন করে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা শুরু করতে যাচ্ছিলেন। কিন্তু গোড়াতেই বাধা দিয়েছিলেন কাজল। মণি রত্নমের নাম শুনে কাজল ফোনের এপার থেকে বলে উঠেছিলেন, “হ্যাঁ। আর আমি টম ক্রুজ।” আসলে কাজল বিশ্বাসই করেননি যে মণি রত্নমের মতো খ্যাতনামা নির্মাতা তাকে ‘দিল সে’ সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব দিতে ফোন করতে পারেন। কেউ তার সঙ্গে মজা করছেন ভেবে ফোন কেটে দিয়েছিলেন কাজল।
২০০৩ সালে মুক্তি পায় আজিজ মির্জা নির্মিত সিনেমা ‘চলতে চলতে’। শাহরুখের সঙ্গে সিনেমাটিতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন রানী। সিনেমাটির জন্য নির্মাতাদের প্রথম পছন্দ ছিলেন কাজল। কিন্তু এ প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রথম ক জলক পছন দ
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?