শেরপুরে বনভোজনের বাসে থাকা এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। 

শুক্রবার রাতে ও শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং ৭ জনকে আটক করে।
 
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানান, সদর উপজেলার কান্দাশেরীরচর এলাকায় শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে একটি সূর্যমুখীর বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়ে যানজট সৃষ্টি হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় যানজটে আটকে থাকা বনভোজনের বাসে এক মেয়েকে উত্ত্যক্ত করে সদরের কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের এক যুবক। পরে কান্দাশেরীরচর গ্রামের কয়েকজন যুবক মিলে ওই উত্ত্যক্তকারীকে মারধর করে। এরপর কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের লোকজন খবর পেয়ে দলবেঁধে কান্দাশেরীরচর গ্রামে হামলা চালালে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এর পর থেকেই শুরু হয় দুই এলাকার দ্বন্দ্ব। এতে শুক্রবার রাতে কুসুমহাটি বাজারে দোকানপাট ভাঙচুর হয়। 

সশস্ত্র হামলায় বাজারের দোকানপাটে ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন

এর জের ধরে পরদিন (শনিবার) সকালেও কান্দাশেরীরচর ও কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের দুই পক্ষের মানুষ মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে জড়ো হয়। দফায় দফায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এতে শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক দফায় দফায় যান চলাচল বন্ধ থাকে। সংঘর্ষে দুপক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের অভিযানে এ সময় ৭ জনকে আটক করা হয়। বন্ধ হয়ে যায় বাজারের দোকানপাট।

এ ব্যাপারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শেরপুর জেলার মুখ্য সংগঠক মোর্শেদ জিতু বলেন, “সামান্য ঘটনার জের ধরে এতো বড় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা ঠিক নয়। একটা পক্ষ এদেরকে উস্কে দিয়ে শান্ত শেরপুরকে অশান্ত করছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে কাজ করছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসবে। সেই সাথে হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।”

এ ব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো.

আমিনুল ইসলাম বলেন, রাতেই পুলিশ ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। পরদিনও মাইকিং করে দুই পক্ষ জড়ো হয়েছিলো। পরে পুলিশ মোতায়েন করে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।” 

ঢাকা/তারিকুল/টিপু

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ক ন দ শ র রচর পর স থ ত স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই সনদের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ, যান চলাচল বন্ধ 

জুলাই সনদের দাবিতে ঢাকার শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছেন জুলাই যোদ্ধারা।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বেলা ১১টা থেকে শাহবাগ মোড়ে শুরু হওয়া অবস্থান কর্মসূচিতে ধাপে ধাপে জড়ো হয়েছেন শতাধিক আন্দোলনকারী। ফলে শাহবাগ মোড়ের উভয়মুখেই যান চলাচল বন্ধ রয়েছে, আশপাশের রাস্তায় সৃষ্টি হয়েছে যানজট। 

জুলাই যোদ্ধা সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনের সমন্বয়ক মাজহারুল ইসলাম আপন। শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে ও শাহবাগ থানার মুখে, এমনকি আশপাশের মোড়গুলোতেও আন্দোলনকারীদের অবস্থান নিতে দেখা গেছে।

রেজমিনে দেখা যায়, শাহবাগ মোড়ের একাংশ জুড়ে ব্যানার, পোস্টার ও জাতীয় পতাকা নিয়ে অবস্থান করছেন আন্দোলনকারীরা। পাশেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতি দেখা গেছে। 
আন্দোলনকারীরা ‘জুলাই সনদ’ নামে একটি প্রস্তাবিত ঘোষণাপত্র প্রকাশ করেছেন, যেখানে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থনে নিহতদের ‘জুলাই শহীদ (জাতীয় বীর)’ এবং আহতদের ‘জুলাই যোদ্ধা (বীর)’ হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের জন্য আজীবন সম্মান, চিকিৎসা, শিক্ষা, পুনর্বাসন, কর্মসংস্থান এবং সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করার দাবি রয়েছে।

এর দ্বিতীয় ধারায় বলা হয়েছে, শহীদ পরিবার ও আহতদের কল্যাণ রাষ্ট্রের ‘অবিচ্ছেদ্য কর্তব্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে। এদের প্রতি অবহেলা বা অধিকার হরণকে রাষ্ট্রদ্রোহ বা বিশেষ অপরাধ হিসেবে গণ্য করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও তোলা হয়েছে।

জুলাই যোদ্ধাদের ভাষ্য, এখনো জুলাই সনদ না হওয়ায় আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নেমেছেন। বারবার এই দাবি জানানো হলেও কোনো অগ্রগতি হয়নি।

তারা বলছেন, জুলাই সনদ আমাদের দাবি নয়, এটি আমাদের অধিকার। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। জুলাই সনদ নিয়ে আশ্বাস পূরণ না হলে শাহবাগে অস্থায়ী মঞ্চ তেরি করে অবস্থান করবেন বলেও হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ