জাপানে একটি বিড়ালকে নিয়ে হইচই পড়ে গেছে। অনেকেই বিড়ালটিকে ‘মিরাকল’ নামে ডাকছে। একটি ফ্ল্যাটে এক মাসের বেশি সময় আটকে থাকার পরও প্রাণীটি বেঁচে ছিল শৌচাগারের পানি আর মালিকের ফেলে যাওয়া সামান্য বাসি খাবার খেয়ে।

অবশ্য এই সময়ে বিড়ালটি অনেকটাই মৃত্যুর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছিল। অচেতন অবস্থায় প্রাণীটিকে উদ্ধার করা হয়।

জাপানে প্রাণী অধিকার সুরক্ষায় কাজ করে ‘অ্যানিমেল রেসকিউ টানপোপো’। গত বছরের আগস্টে সংস্থাটির সদস্যরা ওসাকার একটি খালি ফ্ল্যাট থেকে বিড়ালটিকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করেন। ফ্ল্যাটের মেঝেতে খালি মদের ক্যান, আবর্জনা ও বাসি খাবার ছড়িয়ে পড়ে ছিল।

জাপানের একটি টেলিভিশন চ্যানেলের খবরে বলা হয়, মিরাকল শৌচাগারের পানি আর বাসি খাবার খেয়ে কোনোমতে প্রাণ রক্ষা করেছে।

যে দলটি মিরাকলকে উদ্ধার করেছে, চিয়াকি হোন্ডা ছিলেন তাঁদের নেতা। তিনি বলেন, শৌচাগারের পাশে বিড়ালটিকে পড়ে থাকতে দেখে তিনি প্রথমে ভেবেছিলেন সেটি জীবিত নেই। কিন্তু যখনই তিনি বুঝতে পারেন প্রাণীটি অচেতন হয়ে পড়ে আছে, দ্রুত সেটিকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

হাসপাতালে শুরুতে আক্রমণাত্মক আচরণ করত মিরাকল। সেটি মাথায় ও পায়ে ক্ষতচিহ্ন ছিল।

পুলিশ ৩ ফেব্রুয়ারি মিরাকলের সাবেক মালিককে গ্রেপ্তার করেছে। ২৭ বছরের ওই তরুণী স্বীকার করেছেন, তিনি ফ্ল্যাটের মালিককে কিছু না জানিয়ে গত জুলাই মাসে তাঁর ভাড়া করা ফ্ল্যাটে মিরাকলকে ফেলে গিয়েছিলেন।

ওই নারীর বিরুদ্ধে প্রাণী নির্যাতনের অভিযোগে তদন্ত চলছে। জাপানের প্রাণিকল্যাণ ও ব্যবস্থাপনা আইন অনুযায়ী, দোষী সাব্যস্ত হলে তাঁর এক বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ ইয়েন জরিমানা হতে পারে।

মিরাকলকে দত্তক নিতে অনলাইনে আবেদনের বন্যা বইছে। তবে অ্যানিমেল রেসকিউ টানপোপো নিজেরাই বিড়ালটি রেখে দিতে চায়। কারণ, সেটির হৃদ্‌যন্ত্র ও কিডনিতে জটিলতা রয়েছে এবং প্রাণীটি শুধু দামি ‘ক্যাট ফুড’ খায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম র কল

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ