যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইড থেকে উন্নয়ন সহায়তা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এতে বিশ্বের অন্তত ৫০টি দেশে এইচআইভি, পোলিও, এমপক্স এবং বার্ড ফ্লু মোকাবিলায় চলমান বিভিন্ন কর্মসূচি ব্যাহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

বৃহস্পতিবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে জানায়, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউএসএইডের ব্যয়কে সম্পূর্ণভাবে ব্যাখ্যাতীত উল্লেখ করে সংস্থাটি বন্ধের উদ্যোগ নিয়েছেন। এ কারণে সংশ্লিষ্ট দেশের বিভিন্ন ক্লিনিক বন্ধ হয়ে গেছে, স্বাস্থ্যকর্মীরা ছুটিতে চলে গেছেন এবং রোগ প্রতিরোধ কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।

ডব্লিউএইচও প্রধান ড.

টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস এক ভার্চুয়াল ব্রিফিংয়ে বলেন, মার্কিন সাহায্য তহবিল স্থগিতের ফলে বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনকে সাহায্য পুনরায় চালুর আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে, ট্রাম্প প্রশাসনের যুক্তি, ইউএসএইড অযোগ্য ও দুর্নীতিগ্রস্ত এবং সংস্থাটির ১০ হাজার কর্মীর মধ্যে বড় আকারে কাটছাঁটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত ২৪ জানুয়ারি ইসরায়েল ও মিসর ছাড়া সব দেশের জন্য অর্থ সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র।

প্রসঙ্গত, গত ৫০ বছরে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। ২০২১-২০২৪ সালে বাংলাদেশ বছরে গড়ে ৪৫০-৫০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা পেয়েছে। ইউএসএইড তহবিল স্থগিত হলে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পেও প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এশিয়া কাপ-২০২৫ এর সুপার ফোরে জায়গা করে নিলো আনপ্রেডিক্টেবল পাকিস্তান। বুধবার দিবাগত রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের শেষ ম্যাচে স্বাগতিক আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে ভারতের সঙ্গী হলো সালমান-শাহীনরা।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের আলো-ঝলমলে রাতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভার পর্যন্ত টিকেছিল আমিরাত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস। সেই সুবাদে সহজ জয় নিয়ে শেষ চারে জায়গা নিশ্চিত করে পাকিস্তান।

আরো পড়ুন:

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

বেথেলের ইতিহাস গড়া দিনে ইংল্যান্ডের দাপুটে জয়

এই জয়ের নায়ক নিঃসন্দেহে শাহীন শাহ আফ্রিদি। বিপদের মুহূর্তে নামতে হয় তাকে ব্যাট হাতে। সেখানে ১৪ বলে ৩টি চার ও ২টি ছক্কার ঝড়ে অপরাজিত ২৯ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যা পাকিস্তানের সংগ্রহকে দাঁড় করায় লড়াইযোগ্য অবস্থানে। শুধু ব্যাটেই নয়, বল হাতেও ছিলেন সমান কার্যকর। ৩ ওভারে মাত্র ১৬ রান খরচ করে তুলে নেন ২টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। এমন সর্বাঙ্গীন পারফরম্যান্সে স্বাভাবিকভাবেই ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে যায় তার ঝুলিতে।

তবু শুরুটা বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল আমিরাতের। ১৩.৫ ওভার পর্যন্ত তারা প্রতিযোগিতায় টিকে ছিল দারুণভাবে। তিন উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করেছিল ৮৫ রান। কিন্তু এরপর যেন ধস নামে। মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে বাকি সাত উইকেট হারিয়ে পুরো দল অলআউট হয়ে যায় ১০৫ রানে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন রাহুল চোপড়া, যার ইনিংসে ছিল ১টি চার ও ১টি ছক্কা। ধ্রুব পারাশার যোগ করেন ২০, মুহাম্মদ ওয়াসিম ১৪ এবং আলিশান শারাফু করেন ১২ রান।

পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণে শাহীনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুটি করে উইকেট নেন হারিস রউফ ও আবরার আহমেদ।

এর আগে ব্যাট হাতে পাকিস্তানও ভুগেছে। চারজন ছাড়া কেউ দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি। ফখর জামান খেলেন ৩৬ বলে ৫০ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস, যেখানে ছিল ২টি চার ও ৩টি ছক্কা। শাহীন আফ্রিদির অপরাজিত ২৯ রান ছাড়া অধিনায়ক সালমান আলি আগা ২০ এবং মোহাম্মদ হারিস যোগ করেন ১৮ রান।

আমিরাতের হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেন জুনায়েদ সিদ্দিকী। তিনি ৪ ওভারে মাত্র ১৮ রান দিয়ে তুলে নেন ৪টি উইকেট। সিমরানজিত সিংয়ের বোলিং ফিগারও কম চমকপ্রদ নয়, ৪ ওভারে ২৬ রান খরচ করে শিকার করেন ৩ উইকেট।

এই জয়ে পাকিস্তান-ভারত দ্বৈরথের আরেকটি অধ্যায় লেখার সুযোগ তৈরি হলো। শুধু তাই নয়, ভাগ্য যদি সহায় হয়, তবে দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীর ফাইনাল লড়াইও দেখা যেতে পারে এবারের এশিয়া কাপে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ