কলকাতা শহরে বাতিল হল প্রখ্যাত পরিচালক ঋত্বিক ঘটকের দুই সিনেমার প্রদর্শনী! অবাক করা বিষয় হলেও এটাই সত্য। ঘটনাটি কলকাতার শিল্প-সংস্কৃতির অঙ্গনে বেশ আলোচনার জন্ম দিয়েছে। প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছেন অনেকেই।

আনন্দবাজার পত্রিকার খবরে বলা হয়ছে, কলকাতায় রাজনীতি এবং শিল্পের সম্পর্ক দিনদিন জটিল হয়ে উঠছে। তারই প্রভাব পড়লো ঋত্বিক ঘটকের মতন মহান পরিচালকের সিনেমার প্রদর্শনীতে। গত ১২ ফেব্রুয়ারি ঋত্বিক ঘটকের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঋত্বিক মেমোরিয়াল ট্রাস্টের পক্ষ থেকে নাকতলা হাই স্কুলে ‘কোমল গান্ধার’ এবং ‘আমার লেনিন’ ছবিগুলো প্রদর্শনীর কথা ছিল। কিন্তু ছবিগুলো প্রদর্শন করার অনুমতি হঠাৎ করেই বাতিল করা হয়।

প্রথমে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অনুমতি দিলেও, কিছু ব্যক্তির হুমকির কারণে তিনি তা বাতিল করেন বলে জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার বলছে, ‌‘আমার লেনিন’ ছবিটির বিষয়ে বিশেষ আপত্তি ছিল। হুমকি আসছিল এই ছবি প্রদর্শিত হলে বিদ্যালয়ে ভাঙচুর হবে। এরপর ‘কোমল গান্ধার’ দেখানোর অনুমতিও আর দেয়া হয়নি।

ক্ষোভ প্রকাশ করে পরিচালক অনীক দত্ত বলেন, ‘এভাবে প্রতিবাদ করাটা যেন নিজের অযোগ্যতাই স্বীকার করা। তাই প্রতিবাদ করতেও ইচ্ছে করে না। এটা সেই শহরের অবস্থা, যাকে শিল্প এবং সংস্কৃতির কেন্দ্র বলে দাবি করা হয়- ভাবতেই পারছি না।’

তিনি আরও জানান, একদিকে ঋত্বিক ঘটকের ‘তিতাস একটি নদীর নাম’ ছবির প্রিন্ট পুনরুদ্ধার হচ্ছে। অন্যদিকে ‘কোমল গান্ধার’-এর প্রদর্শন আটকে দেওয়া হচ্ছে।

অভিনেতা-রাজনীতিবিদ রুদ্রনীল ঘোষ অভিযোগ করে বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে শিল্পের স্বাধীনতা সংকুচিত হচ্ছে। বাঙালি চলচ্চিত্রের দুনিয়ায় রাজনীতির অবাধ প্রভাব পড়েছে। অভিনেতা, পরিচালক বা প্রযোজককে রাজনৈতিক গণ্ডিতে বাঁধা যায় না এটা ভুলে যাচ্ছেন রাজনীতিবিদরা। কেবলমাত্র বিরোধী মতের হলে যাকে তাকে শিকার বানানো হচ্ছে। ঋত্বিক ঘটকও বাঁচলেন না। ‘আমার লেনিন’ ছবির সঙ্গে বর্তমান রাজ্য সরকারের মতের বিরোধ আছে বলে ছবিটি দেখাতে দেয়া হলো না।’

তিনি সত্যজিৎ রায়ের জীবনের উপর তৈরি ছবি ‘অপরাজিত’-এর নন্দনে প্রদর্শিত না হওয়ার উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘রাজনৈতিক কারণে সত্যজিত রায়ের শিল্পকর্মও আজকাল জটিল পরিস্থিতির মুখে পড়ছে।’

এ ব্যাপারে পরিচালক সংগঠন ইস্ট ইন্ডিয়া মোশন পিকচার্স ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন (ইআইএমপিডিএ) এবং ডিরেক্টর্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (ডিএইআই), কোনো অবস্থান নেয়নি। কিছু সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন ত কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস, পাহাড়ে ভূমিধসের শঙ্কা

আজ শ্রাবণের ১৬ তারিখ। প্রকৃতির নিয়মে এ মাসে বৃষ্টি বেশি ঝরে। আজও ঢাকার আকাশ মেঘলা। বুধবার রাত থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও ঝুম বৃষ্টি কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি। তবে সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে উপকূলীয় ও পাহাড়ি এলাকায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। রয়েছে ভূমিধসের ঝুঁকি।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন স্থানে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি ও কক্সবাজারের পাহাড়ি এলাকায় কোথাও কোথাও ভূমিধসের ঝুঁকি রয়েছে।

আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অতিভারী বৃষ্টির কারণে খুলনা, বরিশাল ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কিছু এলাকায় সাময়িক জলাবদ্ধতা দেখা দিতে পারে। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়াসহ বাস, রিকশা ও সাধারণ চলাচলে বিঘ্ন ঘটতে পারে।

বঙ্গোপসাগরে উত্তাল থাকায় চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। নদী ও সমুদ্রবন্দর এলাকায় অবস্থানরত নৌযানগুলোকে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের নির্দেশ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সারা দেশে আজ দিনের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে, রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

শুক্রবার ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, এবং রংপুর, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের অনেক জায়গায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে।

শনিবারও সারা দেশে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। বিশেষ করে ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে অধিকাংশ এলাকায় এবং অন্যান্য বিভাগে অনেক জায়গায় দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি হতে পারে। সারা দেশে দিনের ও রাতের তাপমাত্রা সামান্য কমতে পারে।

রবিবার রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় এবং খুলনা ও বরিশাল বিভাগে অনেক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। কোথাও কোথাও হতে পারে অতি ভারী বৃষ্টিপাত।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের বর্ধিত পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী পাঁচ দিন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা অব্যাহত থাকতে পারে। 

গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার ৬৮ মিলিমিটার। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল সৈয়দপুরে ৩৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ