হাসি নেই মোহাম্মদ আবদুল্লাহর (৪৬) মুখে। কয়েকজন শ্রমিক নিয়ে বাগান পরিষ্কার করছিলেন। তাঁর বাগানে কয়েকজন দর্শনার্থী এসেছেন। তাঁরা ছবি তুলছিলেন, ভিডিও করছিলেন। সেই দিকে তাকানোর সময় নেই তাঁর। ৮০ শতক জমিতে গোলাপের চাষ করেছেন তিনি। বাগানজুড়ে ফুটে আছে শত গোলাপ। আশা ছিল, ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ভালো বিক্রি হবে। সব না হোক, অন্তত বাগানের বেশির ভাগ ফুল বেচতে পারবেন। কিন্তু তা হলো না। গত বুধবার ও গতকাল বৃহস্পতিবার দুই দিনে গোলাপ বিক্রি করেছেন মাত্র ৯০০টি। তা–ও কম দামে। আগে প্রতিটি বিক্রি করেছেন ১৪-১৫ টাকায়। আর এই দুই দিনে দাম নেমে এসেছে ৩ থেকে ৫ টাকায়।

আক্ষেপ করে বাগানি আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত বছরের ভালোবাসা দিবসে সাত হাজার গোলাপ বিক্রি করেছি। প্রতিটি গোলাপের দামও ছিল ১৫ টাকার মতো। এখন আরও আড়াই হাজার গোলাপ বাগানে পড়ে রয়েছে। এত গোলাপ দিয়ে কী হবে? বাগানের খরচ কীভাবে ওঠাব, সেটাই ভাবছি।’

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলীর মাইজপাড়া এলাকার একটি গোলাপবাগানে কথা হয় আবদুল্লাহর সঙ্গে। ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে বরইতলীর গোলাপবাগানে এ সময় অনেক ব্যস্ততা থাকার কথা। তবে এবারের চিত্র ভিন্ন। সেই পাইকারি ক্রেতাদের হাঁকডাক, গোলাপ তোলার ব্যস্ততা। গোলাপের দামও অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার অনেক কম। প্রতিটি গোলাপ এখন আড়তদারদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে তিন টাকায়।

বাগানমালিকেরা বলছেন, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দেশে এখনো স্থিতিশীলতা আসেনি। তার ওপর একই সঙ্গে পবিত্র শবে বরাত পড়ে যাওয়ায় গোলাপের চাহিদা নেই। এ কারণে গোলাপের পাশাপাশি গ্ল্যাডিওলাসেরও বড় ধরনের দরপতন ঘটেছে।

আবদুল্লাহর সুরেই কথা বলেন পাশের বাগানের মালিক রুসিলা বেগম ও শেফায়েত উল্লাহ। তাঁরা জানিয়েছেন, গোলাপের চাহিদা কম। চাহিদা কমে যাওয়ায় দামও কমে গেছে। অথচ এবারের ভালোবাসা দিবসে প্রতিটি বাগান থেকে ২ থেকে ১০ হাজার গোলাপ কাটার প্রস্তুতি ছিল।

ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে তেমন বিক্রি হয়নি গোলাপ। কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার বরইতলীর পুরোনো রাস্তার মাথায় একটি দোকানে গোলাপ গুছিয়ে রাখছেন এক চাষি। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ

এছাড়াও পড়ুন:

দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিভিন্ন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের নেতারা সাক্ষাৎ করেছেন। তাঁরা এ সময় প্রধান উপদেষ্টাকে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের আমন্ত্রণ জানান।

আজ সোমবার বিকেলে হিন্দু নেতারা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় যান। এ সময় তাঁদের কাছে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি ও সার্বিক অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান প্রধান উপদেষ্টা। তিনি তাঁদের বলেন, ‘আপনাদের সঙ্গে সব সময় দেখা করার ইচ্ছা থাকলেও সুযোগ হয় না। পূজা উপলক্ষে বছরে একবার সামনাসামনি দেখা হয়, কথা বলার সুযোগ হয়।’

হিন্দুধর্মীয় নেতারা জানান, গত বছরের তুলনায় এ বছর এক হাজারের বেশি পূজামণ্ডপ বেড়েছে। সারা দেশে পূজামণ্ডপ তৈরির কাজ পুরোদমে এগিয়ে চলছে।

নেতারা বলেন, ধর্ম উপদেষ্টা নিয়মিতভাবে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন, মন্দির পরিদর্শন করেন। দুর্গাপূজা উৎসবমুখর করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করা হচ্ছে। গতবারের মতো এবারও নির্বিঘ্নে পূজা উদ্‌যাপন হবে বলে তাঁরা আশা করছি।

এ সময় স্থায়ী দুর্গামন্দিরের জন্য রেল মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জায়গা বরাদ্দ দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান মহানগর পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব। তিনি বলেন, ‘এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা। এ জন্য আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। আপনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে নিয়মিত আমাদের খোঁজখবর রেখেছেন। গত বছরের মতো এ বছরও পূজায় আমরা দুই দিন ছুটি পেয়েছি। এ জন্যও আপনাকে বিশেষ ধন্যবাদ। গত বছর ৮ আগস্ট দেশে ফেরার পরপরই আপনি ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শন করে বলেছিলেন, আমরা সবাই এক পরিবার। আপনার বক্তব্য আমাদের মনে গভীরভাবে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর বলেন, ‘গত বছর দুর্গাপূজায় ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে আপনি বলেছিলেন, নিরাপত্তা বাহিনী দিয়ে কড়া পাহারা বসিয়ে পূজা হবে এমন দেশ আমরা চাই না। আমরা প্রথমবারের মতো কোনো সরকারপ্রধানের কাছে এমন বক্তব্য শুনেছি। আমরাও আপনার বক্তব্যের সঙ্গে একমত, আমরাও চাই এ আয়োজনে সবাই সহযোগিতা করুক, দেশের সবার মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক থাকুক।’

বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, ‘আপনি দায়িত্বে থাকাকালীন দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নজির স্থাপন করেছেন। আমরা লক্ষ করেছি, এক বছর ধরে, বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচুর মিথ্যা কথা, ফেক নিউজ ছড়ানো হচ্ছে। আপনার নেতৃত্বে ধর্ম–বর্ণ–জাতিনির্বিশেষে বাংলাদেশের সব মানুষের কল্যাণ হবে, আমরা সেটাই কামনা করি।’

বৈঠকে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘ধর্ম মন্ত্রণালয় সব ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে। কল্যাণ ট্রাস্টের মাধ্যমে আমরা কল্যাণকর কর্মসূচিগুলো নিশ্চিত করি।’ এ সময় তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।

প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও পূজার অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান এবং দুর্গাপূজা ঘিরে যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রের সুযোগ তৈরি না হয়, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

বৈঠকে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার, হিন্দুধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান তপন চন্দ্র মজুমদার ও সচিব দেবেন্দ্র নাথ উঁরাও, রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ স্বামী পূর্ণানন্দ (একক), বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু সমাজসংস্কার সমিতির সভাপতি অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাস, শ্রীশ্রী গীতা হরি সংঘ দেব মন্দিরের সভাপতি বিমান বিহারী তালুকদার, বাংলাদেশ পূজা উদ্‌যাপন ফ্রন্টের আহ্বায়ক অপর্ণা রায় দাস, শ্রীশ্রী সিদ্ধেশ্বরী কালীমন্দিরের সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ চন্দ্র দত্ত ও সিদ্ধেশ্বরী সর্বজনীন পূজা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রণীতা সরকার উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস
  • দুর্গাপূজায় নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থায় থাকবে পুলিশ: আইজিপি
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে সিঙ্গাইরের ৭৭ মণ্ডপে অনুদান বিতরণ
  • শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন উপলক্ষে বন্দরে প্রস্তুুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত 
  • মোদির জন্মদিনে ট্রাম্পের ফোন, মেসির উপহার
  • বেনাপোল দিয়ে ইলিশের প্রথম চালান গেল ভারতে
  • সদর উপজেলায় শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে প্রস্তুতিমূলক সভা
  • ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেল ৩৭টি প্রতিষ্ঠান
  • ‘ওজোনস্তর ক্ষয়ে স্বাস্থ্য, কৃষি ও প্রাণিজগৎ ঝুঁকির মুখে’
  • দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে হিন্দু নেতাদের সাক্ষাৎ