বিষয়ভিত্তিক কোনো আলোচনা হচ্ছে না: সাইফুল হক
Published: 15th, February 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে বিষয়ভিত্তিক কোনো আলোচনা হচ্ছে না বলে উল্লেখ করেছেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক। তিনি বলেন, আজ আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়ভিত্তিক কোনো আলোচনা হচ্ছে না। বলতে পারেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের এটি একটি উদ্বোধনী সভার মতো।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকের বিরতিতে বেরিয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন সাইফুল হক। আজ শনিবার বেলা তিনটার কিছু পরে ঢাকার বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বিএনপি, জামায়াতসহ দেশের ২৬টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শুরু হয়।
সাইফুল হক বলেন, অন্তর্বর্তী এ সরকারের প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর যেমন সমর্থন রয়েছে, তেমনি দেশের জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থনও রয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের প্রথম বৈঠকে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা এ কথা বলেছেন।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা সাইফুল হক বলেন, ছয়টি সংস্কার কমিশনের সুপারিশ নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দল ও জোটগুলোর সঙ্গে কথা বলবে। তিনি বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা পরিষ্কারভাবে বলেছেন, কোনো প্রস্তাব চাপিয়ে দেওয়ার মনোভাব তাঁদের নেই। আলাপ-আলোচনা করে, একটি বোঝাপড়া তৈরি করে যে প্রশ্নে আমরা একমত হতে পারব, সেই ভিত্তিতে একটি জাতীয় সনদ তৈরির চেষ্টা হবে। জাতীয় সনদের ভিত্তিতে পরবর্তীকালে জাতীয় নির্বাচন বা সংবিধান সংস্কার প্রশ্ন আলোচনা হবে।’
সাইফুল হক বলেন, আরেকটা বিষয় অধ্যাপক ইউনূস পরিষ্কার করে বলেছেন, ভারতের বাংলাদেশবিরোধী নীতি একটা বিপর্যয়ে ফেলছে। সর্বশেষ ট্রাম্পের কাছে ভারতের প্রধানমন্ত্রী দৌড়ঝাঁপ করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তাঁর কোনো নালিশ ট্রাম্প প্রশাসন আমলে নেয়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
লন্ডন বৈঠকে বিচার ও সংস্কারের বিষয়টি নির্বাচনের মতো গুরুত্ব না পাওয়া অত্যন্ত হতাশাজনক: এনসিপি
লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি বলে মনে করে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত হতাশাজনক’ বলেছে দলটি।
আজ শুক্রবার রাতে এনসিপির এক বিবৃতিতে এই প্রতিক্রিয়া জানানো হয়েছে। এনসিপির যুগ্ম সদস্যসচিব (দপ্তর) সালেহউদ্দিন সিফাত বিবৃতিটি পাঠিয়েছেন।
এনসিপির বিবৃতিতে বলা হয়, রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টা হিসেবে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের আলোচনাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে এনসিপি। এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে লন্ডনে অনুষ্ঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকটি ‘সংসদ নির্বাচন’ বিষয়ে দলটিকে আস্থায় আনতে সফল হয়েছে সরকার। জাতীয় ঐক্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব এবং রাষ্ট্র সংস্কারের প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি। কিন্তু বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটা অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি।
নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে বলে বারবার প্রতীয়মান হচ্ছে—এ কথা উল্লেখ করে এনসিপি আরও বলেছে, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, জুলাই সনদ কার্যকর করা এবং বিচারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ছাড়া জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন গণ-অভ্যুত্থানকে স্রেফ একটি ক্ষমতা হস্তান্তরের মাধ্যমে পরিণত করবে এবং রাষ্ট্র বিনির্মাণের জন–আকাঙ্ক্ষাকে অবদমিত করবে।
জনগণের দাবি তথা জুলাই সনদ রচনা ও কার্যকর করার আগে নির্বাচনের কোনো তারিখ ঘোষিত হলে তা জনগণ মেনে নেবে না বলে উল্লেখ করেছে এনসিপি। তাদের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘কাজেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সংস্কারের বিষয়গুলোর ব্যাপারে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা ও জুলাই সনদ রচনা এবং কার্যকর করেই আসন্ন জুলাইকে যথাযথ মর্যাদায় স্মরণ করার উদ্যোগ নিতে সরকারকে জোর দাবি জানাচ্ছে এনসিপি।’
জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, মৌলিক সংস্কার বাস্তবায়নে জুলাই সনদ কার্যকর করা ও বিচারের রোডম্যাপ ঘোষণার পরই নির্বাচন সংক্রান্ত আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনসিপি।