ফ্যাসিবাদের দোসরদের কারণে সরকার কাঙ্ক্ষিত কাজ করতে পারছে না: নুরুল হক
Published: 15th, February 2025 GMT
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, প্রশাসনে এখনো ফ্যাসিবাদের দোসররা আছে। এ কারণে গত ৬ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার কাঙ্ক্ষিত কাজ করতে পারছে না।
ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক শেষে বেরিয়ে নুরুল হক সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। আজ শনিবার বেলা তিনটার কিছু পরে দেশের ২৭টি রাজনৈতিক দল ও জোটের প্রতিনিধিদের নিয়ে ঐকমত্য কমিশনের এই বৈঠক হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
নুরুল হক নুর বলেন, জনপ্রশাসনসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তা রয়েছে। প্রশাসনের ভেতরে ফ্যাসিবাদের দোসরদের এখনো অবস্থান করছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কিংবা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম নিয়ে জনমনে অসন্তোষ রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এসব বিষয়ে বলেছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ধীরগতি, কৃষি ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এগুলো দুজন উপদেষ্টা দিয়ে পরিচালনা সম্ভব না। বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসহ রেল, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ও একজন উপদেষ্টার পক্ষে সম্ভব না।
আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো মোটামুটি সবাই একমত জানিয়ে তিনি বলেন, আজকের এই সভা থেকেই আওয়ামী লীগের বিষয়ে একটি সিদ্ধান্ত চেয়েছিলাম। কিন্তু আরও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে বিশেষ করে জাতীয় না স্থানীয় নির্বাচন আগে হবে, তা নিয়ে। বৈঠকে উপস্থিত থাকা রাজনৈতিক দলের জোটগুলো জানিয়েছে, তারা এসব নিয়ে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবে।
নুরুল হক বলেন, ‘অনেক দল বোঝাতে চেয়েছে, স্থানীয় নির্বাচন আগে হলে তৃণমূলে সংঘাত সহিংসতা বাড়বে। আওয়ামী লীগ মাথাচাড়া দেবে। আমার মনে হয়, এটি তাদের সঠিক ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ না। কারণ, স্থানীয় নির্বাচন এখন হলেও টুকটাক ঝামেলা হবে এবং নির্বাচনের (জাতীয় নির্বাচন) পরে হলেও হবে। বরং আমরা দেখেছি, নির্বাচিত সরকারগুলো যত স্বচ্ছ ভোটেই ক্ষমতায় আসুক, স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাদের একটি প্রভাব থাকে।’
গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা পরিষ্কারভাবেই জানিয়েছি, ছয় মাস ধরে স্থানীয় সরকারব্যবস্থা কার্যত অচল হয়ে আছে। এখন প্রধান উপদেষ্টার রোডম্যাপে যদি ডিসেম্বরেও নির্বাচন হয়, তাহলেও কিন্তু ১০ মাস সময় বাকি আছে।’ এই ১০ মাস স্থানীয় সরকার প্রতিনিধিবিহীন থাকবে কি না, এমন প্রশ্ন রাখেন তারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উপদ ষ ট ন র ল হক র জন ত ক সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে ঐকমত্য না হলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই: এবি পার্টি
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে অংশ নিয়ে আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছাতে না পারলে গণভোট ছাড়া উপায় নেই।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের বৈঠক হয়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এবি পার্টির চেয়ারম্যান এ কথা বলেন।
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে মজিবুর রহমান বলেছেন, ‘সংবিধান পরিবর্তন, সংস্কার, সংশোধন, নতুন করে লেখা বা বাতিলের চূড়ান্ত ক্ষমতা জনগণের। আমরা ঐক্যবদ্ধ মতামতের ভিত্তিতে জুলাই সনদ তৈরি করেছি, হয়তো কয়েকটি বিষয়ে কারও কারও “নোট অব ডিসেন্ট” (দ্বিমত) আছে। কিন্তু চূড়ান্ত কোনটা হবে, তা নির্ধারণের মূল ক্ষমতা জনগণের।’
কমিশনের আজকের প্রস্তাবে জুলাই ঘোষণাপত্রের ২২ নম্বর অনুচ্ছেদকে রেফারেন্স আকারে উল্লেখ করায় কোনো কোনো রাজনৈতিক দল ও নেতা জুলাই ঘোষণাপত্রের বৈধতা নিয়ে মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে এবি পার্টির চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে যাঁরা আজ প্রশ্ন তুলছেন, কাল তাঁরা সংসদে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করবেন এবং এই সনদকে প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না, তার নিশ্চয়তা কী?
এবি পার্টির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সানী আবদুল হক বলেন, সংবিধানে এটা নেই, ওটা নেই বলে সংবিধান সংস্কার করা যাবে না—এই ধারণা অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাপরিপন্থী। রাজনৈতিক দলগুলো যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতির প্রশ্নে নিজেদের অবস্থান থেকে নমনীয় না হয়, তবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পুরো প্রচেষ্টা মুখ থুবড়ে পড়বে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে এবি পার্টির এই নেতা বলেন, এমন পরিস্থিতি জাতিকে এক গভীর সংকটের দিকে ঠেলে দেবে। সুতরাং জাতীয় স্বার্থে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা জরুরি; অন্যথায় গণভোট ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
আরও পড়ুনবর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ৪ ঘণ্টা আগে