নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, যেকোনো মূল্যে একটি উত্তম জাতীয় নির্বাচন করতে হবে—জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) এই নির্দেশনা দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবে ইসি।

আজ রোববার দুপুরে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ইসি বিশ্বাস করে, এবার নির্বাচনে কোনো খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি হবে না, দেশের ইতিহাসে একটি উত্তম নির্বাচন হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, এবার ডিসি সম্মেলনে আমন্ত্রণ পেয়েছে ইসি। ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ইসির জন্য একটি নির্ধারিত সেশন রয়েছে।

ডিসেদের উদ্দেশে ইসির কী ধরনের বার্তা থাকবে, এমন প্রশ্নের জবাবে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘যেহেতু নির্বাচন কমিশনের কাজ হলো নির্বাচন করা। আর নির্বাচনের “পার্ট অ্যান্ড পার্সেল” হচ্ছে মাঠ প্রশাসন, জেলা প্রশাসকেরা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বপালন করেন, পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকে। সে ক্ষেত্রে এবার যেহেতু বর্তমান নির্বাচন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং এ নির্বাচন না হওয়ার কোনো বিকল্প নেই; একটা উত্তম নির্বাচন করতে চাচ্ছি আমরা এবং যেকোনো মূল্যে এটি করতে হবে— এই মেসেজ আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব।’

আরেক প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ইতিপূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যেসব নির্বাচন হয়েছে, সেগুলো মাঠ প্রশাসনকে দিয়েই হয়েছে। সুতরাং সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের চাপ বা প্রভাব থাকবে না। তাই তাঁরা আশাবাদী, এবারও সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন হবে।

আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে থাকতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের এ বিষয়ে বলার সময় এখনো আসেনি। আরেকটু অপেক্ষা করতে হবে। অপেক্ষা বলতে আরও সময় লাগবে। এ বিষয়ে আমরা এখনো কিছু বলতে চাচ্ছি না। সময়ই বলে দেবে, সময়ই আমাদের গাইড করবে। সময়ই বলবে, আমরা কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।’

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের বিষয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, সীমানা নির্ধারণ একটি জটিল প্রক্রিয়া। বিদ্যমান আইন যদি সংশোধন করা হয়, তাহলে ইসি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে। কমিশনও আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

২০ বছর পর সাংবাদিক মানিক সাহা হত্যা মামলার আসামির আত্মসমর্পণ

দীর্ঘ ২০ বছর পলাতক থাকার পর খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি ও একুশে পদকপ্রাপ্ত সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি আব্দুস সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার আত্মসমর্পণ করেছেন। সোমবার খুলনা বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মঞ্জুরুল ইমাম জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান।

ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জিল্লুর রহমান খান সমকালকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার বাগেরহাট জেলার মোরেলগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা নুর মোহাম্মাদ ওরফে নুরুর ছেলে। হত্যাকাণ্ডের পর দীর্ঘ ২০ বছর ধরে তিনি পলাতক ছিলেন। 

জানা যায়, ২০০৪ সালের ১৫ জানুয়ারি খুলনা প্রেসক্লাব অদূরে সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে খুন হন সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা।

ট্রাইব্যুনালের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মাজাহারুল ইসলাম জানান, সোমবার দুপুরের পর আদালতে উপস্থিত হন ডিসকো সাত্তার। ওকালত নামায় তিনি উল্লেখ করেন, জীবন এবং জীবিকার তাগিদে খুলনার বাইরে থাকায় মামলার রায় প্রচারের সময়ে আদালতে উপস্থিত হতে পারেননি। তিনি রায়ের বিষয়টি অবগত ছিলেন না।

ট্রাইব্যুনাল থেকে জানা গেছে, সাংবাদিক মানিক চন্দ্র সাহা হত্যার দু’দিন পর ২০০৪ সালের ১৭ জানুয়ারি খুলনা সদর থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) রণজিৎ কুমার দাস বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা খুলনা সদর থানার তৎকালীন ওসি মোশাররফ হোসেন ২০০৪ সালের ২০ জুন হত্যা মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিট দাখিলের পর থেকে ডিসকো সাত্তার পলাতক ছিলেন।

দীর্ঘ এক যুগ পর বিচারিক প্রক্রিয়া শেষ করে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর আদালত মানিক চন্দ্র সাহা হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করেন। মামলায় ৯ জন আসামিকে দোষী সাবস্ত করে যাবজ্জীবন কারদণ্ড প্রদান করেন।

যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সুমন ওরফে নুরুজ্জামান, বুলবুল ওরফে বুলু, আকরাম হোসেন ওরফে আকরাম ওরফে বোমরু আকরাম ওরফে বোমা আকরাম ওরফে ফাটা, আলী আকবর সিকদার ওরফে শাওন, ছাত্তার ওরফে ডিসকো সাত্তার, বেল্লাল, মিঠুন ওরফে মিটুল, সাকা ওরফে শওকাত হোসেন, সরো ওরফে সরোয়ার হোসেন।

মামলায় দু’জন খালাস পেয়েছিলেন। তারা হলেন হাই ইসলাম ও কচি ওরফে ওমর ফারুক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ