আপনি শেষনিশ্বাস ত্যাগ করার পর আমি একলা বোধ করছি
Published: 17th, February 2025 GMT
প্রতুল মুখোপধ্যায়ের কথা ও সুরের ‘আমি বাংলার গান গাই’ গানটি নতুন করে কণ্ঠে ধারণ করেছিলেন সংগীতশিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী মাহমুদুজ্জামান বাবু। একুশে টেলিভিশনে মাহমুদুজ্জামান বাবুর নতুন করে গাওয়া এই গানের ভিডিও প্রচারিত হয়। গানটি প্রচারের পর পরিচিতি বাড়ে তাঁর। গত শনিবার ৮৩ বছর বয়সে মারা যান প্রতুল মুখোপাধ্যায়। মাহমুদুজ্জামান বাবু এখন রয়েছেন কানাডার মন্ট্রিয়লে। প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণে শিল্পীকে নিয়ে লিখেছেন মাহমুদুজ্জামান বাবু
১৯৯৬ সালের অক্টোবরে আমি কলকাতায় গিয়েছিলাম যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে গান গাইতে। নিমন্ত্রণ করেছিলেন সেখানে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। ঢাকা থেকে কোনো যন্ত্রশিল্পীকে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া ছিল ব্যয়সাপেক্ষ। শিক্ষার্থী শ্রোতাদের সেই সামর্থ্য ছিল না। তাঁরা জানিয়েছিলেন, স্থানীয় একজন গিটারিস্ট গানের সঙ্গে সঙ্গ দিতে আগ্রহী। অনুষ্ঠানের আগের দিন সন্ধ্যায় রিহার্সালে সবকিছু হযবরল হয়ে গেল। প্রথমত, আমার গানের সঙ্গে গিটারিস্টের কোনো পরিচয় ছিল না। দ্বিতীয়ত, গানের কর্ড-চাট তৈরি থাকার পরও যেহেতু আমার গানগুলো ঠিক ভারতীয় রোমান্টিক বাংলা গান কিংবা কলকাতাকেন্দ্রিক গণসংগীতের কথা-বিষয়-আঙ্গিকের চেয়ে একেবারেই বিপরীত, তখন ফয়সালা হলো এই মর্মে যে আগামীকাল খোলা চত্বরে আমি খালি গলায়ই গাইব। যথারীতি খালি গলায় গাইতে আমি আগে থেকেই অভ্যস্ত। কারণ, সেই সময়ের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে, টিএসসি চত্বরে, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিভিন্ন প্রগতিশীল এবং গরিব ছাত্র-রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিবাদী অনুষ্ঠানে খালি গলায় দেশপ্রেম-বিপ্লব-বিদ্রোহ-আশাবাদের গান গাইতাম এবং কখনো কখনো সেখানে মাইকের ব্যবস্থাও থাকত না। ফলে সুরের প্রতি উৎকর্ণ যত্ন, স্বর প্রক্ষেপণে ঋজু ও কোমল অনুভূতির বিস্তার আর সঠিক উচ্চারণ, গান শুনতে আগ্রহী শ্রোতাদের মগ্নতা ধরে রাখতে অনুকূল ভূমিকা রাখত।
প্রতুল মুখোপাধ্যায়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে অপদস্থ বাবা, ছেলেকেও পিটিয়ে হত্যা
হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় দু’পক্ষের সংঘর্ষ থামাতে গিয়ে অপদস্থ হওয়া বাবাকে রক্ষা করতে গিয়ে জাকির হোসেন (৩৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। এ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় ১০ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
রবিবার (১৫ জুন) সন্ধ্যায় উপজেলার বদলপুর ইউনিয়নের পিরিজপুর গ্রামে এ সংঘর্ষ ঘটে।
নিহত জাকির হোসেন ওই গ্রামের পল্লী চিকিৎসক হারুনুর রশিদের ছেলে।
স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে গনি মিয়া গং ও শাজাহান মিয়া গংয়ের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে পিরিজপুর পয়েন্টে গনি মিয়ার ছেলে হোসাইন মিয়া ও শাজাহান মিয়ার ছেলে মহসিন মিয়ার মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সংঘর্ষে অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
সংঘর্ষ থামাতে স্থানীয় হারুনুর রশিদ নামে একজন এগিয়ে গেলে তাকে অপদস্থ করা হয়। তখন বাবাকে রক্ষায় তার ছেলে জাকির হোসেন দোকান থেকে বের হলে প্রতিপক্ষের লোকজন তার ওপর চড়াও হয়। তাদের মারপিটে গুরুতর আহত অবস্থায় জাকিরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আহতদের মধ্যে তজিমুল মিয়া (৫৫), রুবেল মিয়া (২৭) ও উজ্জ্বল মিয়া (৩০) নামে ৩ জনকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অন্য আহতরা বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য ময়না মিয়া বলেন, ‘‘দীর্ঘদিনের জমিসংক্রান্ত বিরোধ থেকেই এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।’’
রাতে এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন আজমিরীগঞ্জ থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম।
ওসি বলেন, ‘‘ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে নারী-পুরুষ ১০ জনকে আটক করা হয়েছে। এছাড়া গ্রাম থেকে কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।’’
ঢাকা/মামুন/টিপু