লক্ষ্মীপুরে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে হামলা ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে লক্ষ্মীপুর-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম ফারুক পিংকুকে প্রধান আসামি করা হয়েছে। 

মামলায় পিংকু ছাড়াও সদর উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান সালাহ উদ্দিন টিপুসহ ৭৭ জনের নামে উল্লেখ করে অজ্ঞাত ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এটিই পিংকুর বিরুদ্ধে প্রথম মামলা। 

মামলার বাদীর নাম আবদুল মতিন। তিনি পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ডের আটিয়াতলী গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে। 

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাতে মামলার বাদী মতিন জানান, ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে সদর থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন তিনি। গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে পায়ে ও পেটে গুলিবিদ্ধ হন তিনি। মামলার আসামিরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী।

এজাহারে বলা হয়, গত ৪ আগস্ট সকালে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী বাসস্ট্যান্ড যাত্রী চাউনি এলাকায় প্রধান আসামি পিংকুর নির্দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে অন্যান্য আসামিরা লাঠিসোটা নিয়ে হামলা ও গুলিবর্ষণ করে। প্রধান আসামির রাইফেল থেকে ছোঁড়া তিনটি গুলি তার পায়ের গোড়ালিতে বিদ্ধ হয়। সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান টিপুর ছোঁড়া দুটি গুলি তার পেটে বিদ্ধ হয়। এছাড়া এলোপাতাড়ি গুলিতে ৭০-৮০ জন আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ এবং মারাত্মকভাবে আহত হয়। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেন। হামলাকারীরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক ছড়ায়।

বাদি আবদুল মতিন বলেন, “হামলা ও গুলিতে আমি নিজেও গুলিবিদ্ধ হয়েছি। তাই বিচারের আশায় থানায় মামলা দায়ের করি। কিন্তু উল্লেখযোগ্য আসামি এখনো গ্রেপ্তার হয়নি।” 

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.

আবদুল মোন্নাফ বলেন, “৪ আগস্টের ঘটনায় আবদুল মতিন নামের একজন বিস্ফোরণ আইনে মামলা করেন। এজাহারভূক্ত আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। অজ্ঞাত আসামিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।”

গত ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হামলা ও গুলিতে লক্ষ্মীপুরে চার ছাত্র নিহত হয়। এ ঘটনায় এরআগে ৪টি হামলা ও হত্যা মামলা হয়।

ঢাকা/লিটন/টিপু 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ৪ আগস ট আবদ ল ম

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে মন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুর

গাজীপুর নগরের কাশিমপুর শ্মশান মন্দিরে আংশিক প্রস্তুত ছয়টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। তবে কারা প্রতিমাগুলো ভাঙচুর করেছে, তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো অভিযোগ দায়ের হয়নি।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কাশিমপুর শ্মশান মন্দিরে প্রতিবছরের মতো এবারও পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য তৈরি করা হচ্ছিল বিভিন্ন প্রতিমা। প্রতিমাগুলো তখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি, রংও করা হয়নি। গতকাল দুপুরে বৃষ্টি শুরু হলে কারিগর ও মন্দিরসংলগ্ন লোকজন কাজ বন্ধ রেখে চলে যান। পরে সন্ধ্যায় মন্দিরে এসে তাঁরা দেখতে পান, পাঁচ থেকে ছয়টি প্রতিমা ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।

মন্দির কর্তৃপক্ষ জানায়, পূজা শুরু হয়নি বলে এখনো পাহারার ব্যবস্থা করা হয়নি। মন্দিরের আশপাশে সিসিটিভি ক্যামেরাও নেই। কারা প্রতিমাগুলো ভাঙচুর করেছে, তা তারা জানে না। ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিমাগুলো আবার মেরামত করা হবে।

অগ্রগামী যুব সংঘ সার্বজনীন দুর্গাপূজা মন্ডপের সভাপতি প্রবীর দত্ত বলেন, ‘গতকাল পূজা মন্ডপের কাজ শেষে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল। বিকেল বেলা কে বা কারা পূজামন্ডপে ঢুকে ৫-৬ টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে; অন্যগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বিষয়টি নিয়ে আমরা উদ্বিগ্নের মধ্যে আছি।’

কাশিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ধারণা করছি, চুরি করতে এসে দুর্বৃত্তরা ভেতরে ঢুকে প্রতিমা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। প্রতিমাগুলোর কাজ এখনো শেষ হয়নি। সেগুলো মেরামতের কথা জানিয়েছে মন্দির কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ