ইউক্রেনে শান্তি প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি ‘দৃঢ় ও নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত’ করার ওপর জোর দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। আজ মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ফোনালাপের পর এ কথা বলেন তিনি।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে মাখোঁ লিখেছেন, ‘আমরা ইউক্রেনে শক্তপোক্ত ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি চাই। সেটা অর্জন করতে হলে রাশিয়াকে অবশ্যই তাদের আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে। সেই সঙ্গে ইউক্রেনীয়দের জন্য অবশ্যই টেকসই ও নির্ভরযোগ্য নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিতে হবে। তা না হলে মিনস্ক চুক্তির মতো করে এ যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার শঙ্কা থেকে যাবে।’

উল্লেখ্য, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে সংঘাত বন্ধের চেষ্টায় মিনস্ক চুক্তি হয়েছিল।

আজ প্যারিসে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে একটি জরুরি বৈঠক করার পরই মাখোঁ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্রের ইউক্রেন–সংক্রান্ত নীতিমালায় পরিবর্তন নিয়ে আলোচনা করতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের ওই বৈঠক হয়।

ইউরোপীয় নেতাদের আশঙ্কা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন তো দূরের কথা, ইউক্রেনকে বাদ রেখেই ট্রাম্প রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনা করবেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে জেলেনস্কি নিজেও মাখোঁর সঙ্গে তাঁর আলাপের প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে কী আলোচনা হয়েছে, তা নিয়ে তাঁকে জানিয়েছেন মাখোঁ।

এক্স পোস্টে জেলেনস্কি লিখেছেন, ‘আমাদের একটি অভিন্ন লক্ষ্য আছে। তা হলো নিরাপত্তাবিষয়ক নিশ্চয়তাগুলো অবশ্যই দৃঢ় ও নির্ভরযোগ্য হতে হবে।’

জেলেনস্কির মতে, এ ধরনের নিশ্চয়তা দেওয়া ছাড়া কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে তা হবে রাশিয়ার আরেকটি ধোঁকাবাজি। তাঁর আশঙ্কা, এর মধ্য দিয়ে ইউক্রেন বা  ইউরোপের অন্য দেশগুলোর বিরুদ্ধে রাশিয়ার নতুন যুদ্ধের সূচনা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইউক র ন ন শ চয়ত ইউর প য়

এছাড়াও পড়ুন:

কার্টুন, মিমে অভ্যুত্থানের ভিন্ন ধারার দৃশ্যায়ন

টাকার বস্তার ভেতর থেকে মাথা উঁচিয়ে আছেন শুভ্র কেশ, সফেদ দাড়ি, চশমা পরিহিত এক লোক। তাঁর ছবি দেখে তো বটেই, এই বর্ণনা থেকেও তাঁকে চিনবেন দেশবাসী। বর্তমানে কারাগারের বাসিন্দা পতিত স্বৈরশাসকের এই উপদেষ্টা বলছেন, ‘টাকার ওপর আমার বিশ্বাস উঠে গেছে।’ এই ছবির পাশেই এক কাটআউট। সেখানে ‘শেখ হাসিনা পালায় না’ বলতে বলতে দৌড়ে পালাচ্ছেন ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতার মসনদ থেকে উৎপাটিত শেখ হাসিনা।

এমন মজার মজার কার্টুন, মিম, গ্রাফিতি, ভিডিও স্থাপনাকর্মসহ বৈচিত্র্যময় সৃজনসম্ভার নিয়ে শুরু হয়েছে ‘বিদ্রূপে বিদ্রোহ’ নামের ব্যতিক্রমী এক প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অনলাইনভিত্তিক স্যাটায়ার সাময়িকী ‘ইয়ারকি’। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ধানমন্ডির আলিয়ঁস ফ্রঁসেজের লা গ্যালারিতে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে ছয় দিনের এ প্রদর্শনী শুরু হয়েছে। চলবে ৫ আগস্ট পর্যন্ত। সবার জন্য প্রতিদিন বেলা তিনটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত খোলা।

গত বছর ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে উত্তাল ছিল জুলাই। একটি বৈষম্যহীন, উদার গণতান্ত্রিক, অসাম্প্রদায়িক মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য পথে নেমেছিলেন অগণিত মানুষ। শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করতে জীবন উৎসর্গ করেছেন তাঁদের অনেকে। আহত হয়েছেন বেশুমার। রক্তরঞ্জিত রাজপথ বেয়ে এসেছে জনতার বিজয়।

প্রদর্শনীতে প্রবেশপথটির দুই পাশে লাল রঙের পটভূমিতে বড় বড় ডিজিটাল পোস্টার। সেখানে ২ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিনের বিভিন্ন ঘটনার আলোকচিত্র, সংবাদপত্র, অনলাইন পোর্টাল, টেলিভিশনের রিপোর্ট, ছবি, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট—এসব তুলে আনা হয়েছে এ পোস্টারগুলোতে। প্রবেশপথটিও লাল রঙের। ‘জুলাই করিডর’ নামে এই রক্তিম পথটি বেয়ে দর্শনার্থীরা প্রদর্শনীতে প্রবেশের সময় অভ্যুত্থানের উত্তাল দিনগুলোর উত্তাপ ফিরে পাবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ