দ্বিতীয় লেগের শুরুতেও ঝলমলে মোহামেডান
Published: 21st, February 2025 GMT
বাংলাদেশের প্রিমিয়ার লিগ ফুটবলে প্রথম লেগে ৯ ম্যাচে মাত্র একটিতে হেরেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আজ দ্বিতীয় লেগের শুরুটাও হলো দারুণ এক জয়ে।
কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্টেডিয়ামে ঢাকা ওয়ান্ডারার্সকে ৩-০ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে আলফাজ আহমেদের দল।
এই জয়ে ১০ ম্যাচ খেলে তালিকার শীর্ষে থাকা মোহামেডানের পয়েন্ট ২৭। ৯ ম্যাচ থেকে ২০ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত তালিকার দুইয়ে আছে ঢাকা আবাহনী। আগামীকাল ফকিরেরপুল ইয়ংমেন্সের মুখোমুখি হবে মারুফুল হকের দল।
আজ ম্যাচের প্রথম ২৫ মিনিট আশাজাগানিয়া আক্রমণ করতে পারেনি মোহামেডান। যদিও গোল পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি তাদের। ৩৮ মিনিটেই এগিয়ে যায় মোহামেডান। ম্যাচের ৩৭ মিনিটে ওয়ান্ডারার্সের এক ফুটবলারের শট আরেক ফুটবলারের হাতে লাগায় হ্যান্ডবলের বাঁশি বাজান রেফারি আর ফ্রি–কিক পায় মোহামেডান।
দুর্দান্ত এক ফ্রি–কিকে বল প্রতিপক্ষের জালে জড়ান মোজাফফর মোজাফফরভ। ওয়ান্ডারার্সের গোলরক্ষক শাকিল হোসেনের চেয়ে দেখা ছাড়া কিছুই করার ছিল না। চলতি মৌসুমে এটা মোজাফফরভের প্রথম গোল। আগে খেলা আট ম্যাচে গোল করতে পারেননি উজবেকিস্তানের এই মিডফিল্ডার। তবে সতীর্থদের দিয়ে এবার পাঁচ গোল করিয়েছেন তিনি।
গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে ওঠা ওয়ান্ডারার্স মোহামেডানের রক্ষণে বেশ কয়েকটি ভালো আক্রমণ করে। তবে ফরোয়ার্ডদের ভুলে জালের নাগাল আর পায়নি। উল্টো আরও দুই গোল খেয়ে বসে দলটি। ৮১ মিনিটে মোহামেডানের ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ৭১ মিনিটে আরিফ হোসেনের বদলি হয়ে মাঠে নামা রহিম উদ্দিন।
ডান প্রান্ত দিয়ে আক্রমণে উঠে দারুণভাবে ওয়ান্ডারার্সের রক্ষণ চুরমার করেন মোহামেডানের তিন ফুটবলার। প্রথমে মোজাফফরভ মাপা হেডে ডি বক্সে বল ফেলেন, সেই বল আলতো শটে রহিমের সামনে বাড়িয়ে দেন সৌরভ দেওয়ান। রহিম নিখুঁত শটে লক্ষ্যভেদ করেন। এর সাত মিনিট পর মোহামেডানের গোলমেশিন হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠা সুলেমান দিয়াবাতে এনে দেন তৃতীয় সাফল্য। মোহামেডানও স্কোরলাইন ৩-০ করে নেয়। চলমান লিগে এ নিয়ে সাত গোল করলেন মালির এই ফরোয়ার্ড।
দিনের আরেক ম্যাচে বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনায় রহমতগঞ্জকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ফর্টিস এফসি। ফর্টিসের হয়ে এদিন জোড়া গোল করেছেন গাম্বিয়ান ফরোয়ার্ড পা ওমর। লিগের অন্য ম্যাচে ময়মনসিংহ স্টেডিয়ামে পুলিশ এফসির কাছে ১-০ গোলে হেরেছে ব্রাদার্স ইউনিয়ন। রহমতগঞ্জের কাছ থেকে তিন পয়েন্ট পেলেও পয়েন্ট তালিকার ছয়েই আছে ফর্টিস। এই মুহূর্তে তাদের অর্জন ১০ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট। আর ব্রাদার্সকে হারানো পুলিশের পয়েন্ট ১০ ম্যাচে ১৩। তারা আছে পয়েন্ট তালিকার সাত নম্বরে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি