জমি নিয়ে বিরোধে চিত্রনায়িকা দিতির বাড়িতে হামলা, আহত ২
Published: 22nd, February 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে চিত্রনায়িকা পারভীন সুলতানা দিতির বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটার দিকে সোনারগাঁ পৌরসভার দিয়াপাড়া এলাকায় হামলা করা হয়। এতে দিতির মেয়ে লামিয়া ও ভাই টিপু সুলতানের স্ত্রী শারমিন প্রিতি আহত হয়েছে।
দিতির ভাই আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘‘দুপুরে আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন প্রিতি, স্থানীয় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন, সিনিয়র সহ-সভাপতি নজরুল ইসলাম টিটু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক নিজাম উদ্দীন, সোহেল, জাহাঙ্গীরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা আমাদের বাড়ি সার্ভে করে জোর করে পিলার বসিয়ে দেয়। এ সময় আমরা বাধা দিলে বিএনপি নেতাদের সহযোগিতায় আমার ছোট ভাইয়ের স্ত্রী শারমিন প্রিতি ও তার সঙ্গীয় লোকজন আমার বোন দিতির মেয়ে লামিয়ার ওপর এবং আমাদের পরিবারের সদস্যদের ওপর হামলা চালিয়ে আহত করে এবং লামিয়ার গাড়ি ভাংচুর করে। এ সময় স্থানীয় লোকজনের সহযোগিতায় প্রাণ বাঁচাতে লামিয়া গাড়ি নিয়ে চলে যায়।’’
চিত্রনায়িকা দিতির ভাই টিপু সুলতানের স্ত্রী আহত শারমিন প্রিতি বলেন, ‘‘দীর্ঘ ৭ বছর আগে আমার স্বামী টিপু মারা যাওয়ার পর থেকে আমার শশুর বাড়ির লোকজন আমাকে ও আমার প্রতিবন্ধী শিশু সন্তানকে সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করে রেখেছেন। আজকে পূর্বনির্ধারিত সময়ে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা বাড়িতে বসে আমার জমি মেপে দেয়ার সময় চিত্রনায়িকা দিতির মেয়ে লামিয়া ও তার সহযোগীরা আমার ওপর হামলা করে। এখানে বিএনপি নেতারা শুধু ন্যায়বিচার করার জন্য এসেছেন। কোনো জমি দখলের জন্য আসেননি।’’
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে ইউপি চেয়ারম্যানের বাড়িতে হামলা, নারী নিহত
মসজিদে হামলার ঘটনায় আহত ইব্রাহীমের মৃত্যু
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘আমি সেখানে কোনো দলীয় পরিচয়ে নয়, স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে গিয়েছিলাম। অন্যান্য বিএনপির নেতাকর্মীরা আমার বাসায় ছিল। নায়িকা দিতির মেয়ে লামিয়া নাকি শেখ হাসিনার পরিবারের শেখ মারুফকে সঙ্গে নিয়ে সোনারগাঁ আসছেন— এমন খবর পেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। কোনো জমি দখলের সঙ্গে আমরা কেউ জড়িত নই।’’
সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমএ বারী বলেন, ‘‘এ ঘটনায় এখনো কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেন আমাকে ফোনে জানায় ওই এলাকায় জমি সংক্রান্ত বিষয়ে ঝামেলা হয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনাস্থলে আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। পরে শুনতে পেলাম বিষয়টি চিত্রনায়িকা দিতির পারিবারিক।’’
ঢাকা/অনিক/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আহত ব এনপ র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি