দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ (তীর চিনি) বন্ড ছেড়ে দেড় হাজার কোটি টাকা তুলবে। এতে বিনিয়োগ করতে পারবেন ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। শিল্পপ্রতিষ্ঠানটির পক্ষে বন্ড ছেড়ে অর্থ সংগ্রহের এই দায়িত্ব পেয়েছে বেসরকারি ব্র্যাক ব্যাংক। এই বন্ড হবে শতভাগ জামানতভিত্তিক জিরো কুপন বন্ড। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের অনুমোদনের পর এই বন্ড ইস্যু করা হবে।

সম্প্রতি এ বিষয়ে সিটি গ্রুপ ও ব্র্যাক ব্যাংকের মধ্যে চুক্তি হয়েছে। ব্র্যাক ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ব্যাংকটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক তারেক রেফাত উল্লাহ খান এবং সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড কমার্শিয়াল) মোহাম্মদ তানভীর হায়দার নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাক ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সেলিম আর এফ হোসেন এবং সিটি গ্রুপের এমডি মো.

হাসান।

জানা যায়, ডলারের মূল্যবৃদ্ধি ও ব্যাংকগুলোর তহবিল স্বল্পতার কারণে সিটি গ্রুপ চাহিদামতো অর্থায়ন পাচ্ছে না। এমন পরিস্থিতিতে বন্ড ছেড়ে টাকা তোলার উদ্যোগ নেয় গ্রুপটি। আর তাতে পাশে দাঁড়িয়েছে ব্র্যাক ব্যাংক। সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ ট্রিপল-এ ঋণমান বা রেটিং পাওয়া প্রতিষ্ঠান এবং দেশের অন্যতম বড় চিনি পরিশোধন কারখানা এটি।

ব্র্যাক ব্যাংকের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, তিন বছর মেয়াদি এই বন্ড সম্পূর্ণ নিরাপদ এবং আকর্ষণীয় মুনাফা দেবে। এই বন্ডটি ব্যক্তি ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিনিয়োগকারীদের জন্য উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে। এই বন্ডের মাধ্যমে সংগৃহীত তহবিল সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ তাদের বাণিজ্য কার্যক্রম সম্প্রসারণ, নগদ প্রবাহ ব্যবস্থাপনার উন্নতি এবং অর্থায়নের পথ বহুমুখী করতে ব্যবহার করবে। এতে প্রতিষ্ঠানটির ব্যাংকঋণনির্ভরতা কমবে।

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ব্যাংকের পক্ষে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমডি শেখ মোহাম্মদ আশফাক, মো. মাহীয়ুল ইসলাম এবং হেড অব স্ট্রাকচার্ড ফাইন্যান্স ইউনিট তানভীর কামাল। অন্যদিকে সিটি গ্রুপের ডিরেক্টর (ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টস) রেজা উদ্দিন আহমেদ এবং ডিরেক্টর (ইমপোর্ট) খিজির হায়াত খান অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

ব্র্যাক ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী মার্চ মাসের মধ্যে এই বন্ড অনুমোদনের আশা করছেন তাঁরা। এরপরই তাঁরা এটি বাজারে ছাড়বেন। এই বন্ডে বিনিয়োগ করলে বিনিয়োগকারীরা করছাড় পাবেন, ফলে এটা হবে ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের জন্য লাভজনক বিনিয়োগ পণ্য।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স গ র ইন ড স ট র জ অন ষ ঠ ন বন ড ছ ড়

এছাড়াও পড়ুন:

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার আহ্বান জাতিসংঘ মহাসচিবের

সাংবাদিকদের কাজের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে বিশ্বের সব দেশের সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে তিনি এ আহ্বান জানান। বিশ্বব্যাপী ২ নভেম্বর দিবসটি পালিত হয়।

জাতিসংঘের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত মহাসচিবের বিবৃতিতে বলা হয়, সত্যের সন্ধানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত গণমাধ্যমকর্মীরা ক্রমবর্ধমান বিপদের মুখে পড়ছেন। এর মধ্যে রয়েছে মৌখিক নিপীড়ন, আইনি হুমকি, শারীরিক আক্রমণ, কারাবাস ও নির্যাতন। এমনকি অনেককে জীবনও দিতে হচ্ছে।

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপরাধের বিচারহীনতা বন্ধের এই আন্তর্জাতিক দিবসে আমরা ন্যায়বিচারের দাবি জানাচ্ছি। বিশ্বজুড়ে সাংবাদিক হত্যার প্রায় ১০টি ঘটনার মধ্যে ৯টির বিচারই এখনো অমীমাংসিত রয়ে গেছে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘বর্তমানে যেকোনো সংঘাতের মধ্যে (ফিলিস্তিনের) গাজা সাংবাদিকদের জন্য সবচেয়ে ভয়াবহ জায়গায় পরিণত হয়েছে। আমি আবারও এই ঘটনাগুলোর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানাচ্ছি।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যেকোনো জায়গায় বিচারহীনতা শুধু ভুক্তভোগী এবং তাঁদের পরিবারের প্রতিই অন্যায় নয়, বরং এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতার ওপর আক্রমণ, আরও সহিংসতাকে প্রশ্রয় দেওয়ার শামিল এবং গণতন্ত্রের প্রতি হুমকি।’ তিনি বলেন, সব সরকারের উচিত প্রতিটি ঘটনার তদন্ত করা, প্রত্যেক অপরাধীর বিচার করা এবং সাংবাদিকেরা যাতে সর্বত্র স্বাধীনভাবে তাঁদের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা।’

জাতিসংঘ মহাসচিব আরও বলেন, ‘নারী সাংবাদিকদের লক্ষ্য করে অনলাইনে উদ্বেগজনকভাবে বাড়তে থাকা হয়রানিমূলক আচরণ অবশ্যই আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। এ ধরনের অপরাধের বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাজা হয় না এবং এটি প্রায়শই বাস্তব জীবনে ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যাঁরা সাংবাদিকতার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য ডিজিটাল দুনিয়াকে নিরাপদ রাখতে হবে।’

আন্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘যখন সাংবাদিকদের কণ্ঠ রুদ্ধ হয়, তখন আমরা সবাই আমাদের কণ্ঠস্বর হারাই। আসুন, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষায়, জবাবদিহি নিশ্চিত করার দাবিতে এবং যাঁরা ক্ষমতার বিপরীতে সত্য তুলে ধরেন, তাঁরা যেন ভয় ছাড়াই তা করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে আমরা সম্মিলিত অবস্থান নিই।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ