পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) শহীদ জাহিদ আন্তঃবিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলায় আম্পায়ারের ভুল সিদ্ধান্তের অভিযোগে খেলোয়াড় ও দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে খেলা স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অর্থনীতি বিভাগ বনাম ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের মধ্যকার বৃষ্টিবিঘ্নিত ফাইনাল ম্যাচে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর আড়াইটায় ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগ টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন। নির্ধারিত ১০ ওভারে তারা অর্থনীতি বিভাগকে ১০৬ রানের টার্গেট দিলে খেলায় বৃষ্টি হানা দেয়। ফলে রবিবার বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচের বাকী অংশ শেষ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

দুপুর তিনটায় ১০৬ রানের টার্গেট নিয়ে মাঠে নামে অর্থনীতি বিভাগ। ছন্দহীন খেলায় ৯ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৭৯ রান করে তারা। শেষ ওভারে অর্থনীতি বিভাগের প্রয়োজন ছিল ৬ বলে ২৭ রান, হাতে ছিল ৩ উইকেট। নিশ্চিত জয়ের ম্যাচে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধিনায়ক সিজান বল হাতে তুলে দেন বাঁহাতি বোলার সজীবের হাতে। অর্থনীতি বিভাগের স্টাইকিংয়ে তখন ব্যাটসম্যান মনিরুল, নন স্টাইকিংয়ে আসাদুল।

স্টাইকিংয়ে থেকে মনিরুল সজীবের বলে পরপর তিনটি ছক্কা মারেন। এরপর এক রান নিয়ে আসাদুলকে স্টাইক দেন। আসাদুল আবার এক রান নিয়ে মনিরুলকে স্টাইক দেন। ফলে শেষ বলে প্রয়োজন হয় ৭ রান। 

শেষ বলে করার জন্য বোলার সজীব দৌড় শুরু করেন। একই সময়ে ডিপ মিড উইকেট থেকে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধিনায়ক সিজান ৩০ গজের মধ্যে দৌড়ে ঢুকে বোলার সজীবকে থামাতে এগিয়ে যান। কিন্তু অধিনায়ক সিজান সজীবকে থামানোর আগেই সজীব বল করে দেয় এবং ব্যাটিং মনিরুল কাভার অঞ্চল দিয়ে গড়িয়ে মাঠের বাইরে পাঠিয়ে দেন। বল সীমানা পাড় হওয়ার পর আম্পায়ার চারের ঘোষণা দিয়ে দেন। 

এ সময় বলটি নো দাবি করে অর্থনীতি বিভাগের খেলোয়াড় ও দর্শকরা আম্পায়ারের দিকে তেড়ে যান এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দর্শকরা জয়ের আনন্দে পাঠে নেমে পড়েন। এরপর দুই বিভাগের দর্শকদের মধ্যে উত্তেজনা শুরু হয়। মাঠে উপস্থিত শিক্ষকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও উত্তেজনা চলতে থাকে। 

এরপর আয়োজক কমিটির মধ্যস্থতায় দুইদলের অধিনায়ক এবং শিক্ষকদের মাঠে ডাকেন দায়িত্বরত আম্পায়ারা। তারা জানান, শেষ বলে যে অধিনায়ক সিজান যে ডিপ মিড উইকেট থেকে দৌড়ে বোলারকে থামাতে আসেন, তারা এটা দেখতে পাননি। তাদের নজর বল আর ব্যাটসম্যানের দিকে ছিল। মাঠে কি হচ্ছে এটা তারা দেখননি।

পরে ঝামেলা শুরু হওয়ার পর তারা খেলার লাইভ দেখে নিশ্চিত হন অধিনায়ক সিজান ডিপ মিড উইকেট থেকে দৌড়ে এসে বোলারকে থামাতে চেষ্টা করেন। এজন্য তারা দুইজন দুই দলের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করেন। এরপর তারা শেষের বলটিকে ডেঢথ ঘোষণা করে দুইদলকে মাঠে নামার অনুরোধ করেন। তবে অর্থনীতি বিভাগ আম্পায়ারের এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজি হয়নি। অর্থনীতি বিভাগের এই সিদ্ধান্তের ফলে শেষ পর্যন্ত বল মাঠে গড়ায়নি। 

অর্থনীতি বিভাগের দাবি, আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী বোলার বল শুরু করা থেকে বলটি মাটিতে ফেলা পর্যন্ত কোন খেলোয়ার তার জায়গা পরিবর্তন করতে পারবেনা। যদি কোন খেলোয়ার তার জায়গা পরিবর্তন করেন তাহলে বলটি নো হবে এবং পাঁচ রান পেনাল্টি হবে। কিন্তু ইইই এর অধিনায়ক বলারকে থামাতে পিচের মধ্যেই ঢুকে পরে। সে হিসেবে শেষের বলটি নো হয়েছে এবং ব্যাটসম্যান চার মেরেছেন। সে হিসেবে শেষ বলে ছয় রান হয় এবং পেনাল্টি পাঁচ রান হলে শেষ বলে মোট রান এগারো রান হয়। ফলে তারা ম্যাচে জয়লাভ করেন।

ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের দাবি, খেলার সব সিদ্ধান্ত আম্পায়ারের কাছে। আম্পায়ার শেষ বলটি চার ঘোষণা করেছেন। আম্পায়ার বলটি চার ঘোষণার পরেই খেলার ফলাফল চূড়ান্ত হয়ে যায় এবং তারা ম্যাচে জয়লাভ করেন। 

এদিকে, এ বিষয়ে সন্ধ্যার পরেও কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি খেলা টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটি। তারা জানিয়েছেন, দুই একের মধ্যে দুই বিভাগের সঙ্গে বসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে বসে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

এ বিষয়ে টুর্নামেন্টের আহ্বায়ক ড.

মো. কামরুজ্জামান বলেন, “আমি ছুটিতে থাকার কারণে মাঠে উপস্থিত থাকতে পারিনি। আপাতত খেলার ফলাফল স্থগিত করা হয়েছে। আমি গিয়ে উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নেব।”

ঢাকা/আতিক/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আম প য় র র মন র ল শ ষ বল উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌর সদরের ফকিরহাট এলাকায় আশরাফুর রহমান (১৪) নামের এক কিশোর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। গত শুক্রবার সে জ্বরে আক্রান্ত হয়। আজ মঙ্গলবার ভোর পাঁচটার দিকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতাল থেকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।

আশরাফুর রহমান ওই এলাকার মিজানুর রহমানের একমাত্র ছেলে। সে সীতাকুণ্ড আলিয়া মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। চলতি বছরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সীতাকুণ্ডে এই প্রথম একজন মারা গেল।

আশরাফুর রহমানের দাদা এম এ আলীম আলী প্রথম আলোকে বলেন, গত শুক্রবার তাঁর নাতির জ্বর আসে। সামান্য ব্যথাও ছিল। জ্বর কমছে না দেখে রোববার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানে রক্ত পরীক্ষায় ডেঙ্গু ধরা পড়ে। এরপর আশরাফুরকে পৌর সদরের জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গতকাল সোমবার রাতে তার অবস্থার অবনতি হয়। আজ ভোর পাঁচটার দিকে সে মারা যায়। দুপুরে মডেল মসজিদ এলাকায় জানাজার নামাজ শেষে ফকিরহাট নলুয়া দিঘি এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয় আশরাফকে।

জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি হাসপাতালের দায়িত্বগত চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই কিশোর ভালো ছিল। আজ ভোর চারটার দিকে তার পাতলা পায়খানা ও খিঁচুনি হয়। এরপর তারা দ্রুত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলেন। সেখানে নেওয়ার পথে কিশোরটি মারা যায়।

সীতাকুণ্ডে আজ এক দিনেই ৬ জনের শরীরে ডেঙ্গু ভাইরাস শনাক্ত হয় বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আলতাফ হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জুলাই অভ্যুত্থানের সময় ভিপিএনও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল
  • রূপ নয়, সাহস দিয়ে জয় করা এক নায়িকা
  • টানা দুই জয়ের পর এবার হার বাংলাদেশের যুবাদের
  • ভারতের অর্থনীতি মৃত, ট্রাম্প ঠিকই বলেছেন: রাহুল
  • হেনরির ৬ উইকেটের পর দুই ওপেনারে নিউজিল্যান্ডের দিন
  • অসুখবিসুখে কষ্ট পেয়ে, বিছানায় পড়ে বাঁচতে চাই না: ববিতা
  • নিশ্ছিদ্র দাপটে উরুগুয়েকে উড়িয়ে ফাইনালে ও অলিম্পিকে ব্রাজিল
  • যে জীবন মানুষের উপকারে আসে না, সে জীবন সার্থক নয়: ববিতা
  • প্রেমের টানে চীনা যুবকের বাংলাদেশে এসে বিয়ে
  • চার দিনের জ্বরে ভুগে মারা গেল কিশোর