ঋণ নিলে ব্যয় বেশি, ঋণ না নিলে বাড়বে ভর্তুকি
Published: 24th, February 2025 GMT
সার আমদানির জন্য ঋণ নিলে ব্যয় বেশি, ঋণ না নিলে ভর্তুকি বাড়বে। এখন কোন দিকে যাবে কৃষি মন্ত্রণালয় ও বিএডিসি। বিদেশি ঋণের সুদ হার কম হলেও সময়মত কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। অন্যদিকে দেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে ঋণ নিলে ভর্তুকির পরিমাণ বাড়বে।
জানা গেছে, সার আমদানির অর্থ যোগান দিতে কৃষি মন্ত্রণালয় আইটিএফসি থেকে ঋণ নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। ঋণ নিয়ে সার আমদানি করা হলে ব্যয় তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং এর ফলে ভর্তুকির পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছে বিএডিসি। এ অবস্থায় সার আমদানির জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি) থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণের একটি প্রস্তাব আটকে আছে।
সূত্র জানায়, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে সার আমদানির জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি) থেকে অর্থনৈতিক সহযোগিতা (ঋণ) গ্রহণের বিষয়ে মতামত প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। চিঠিটি পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দেশে প্রতিবছর বিভিন্ন প্রকারের সারের মোট চাহিদা প্রায় ৬০ লাখ মেট্রিক টন। নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহ না থাকায় দেশে বিদ্যামান সার কারখানাগুলোর মাধ্যমে উক্ত চাহিদার অতি সামান্য অংশ উৎপাদন করা সম্ভব হয়। অবশিষ্ট সার সরকারি পর্যায়ে বিসিআইসি ও বিএডিসি’র মাধ্যমে এবং বেসরকারি আমদানিকারকদের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা হয়। সার আমদানিতে সরকারকে ভর্তুকি হিসেবে বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিমুক্ত রাখার লক্ষ্যে টেকসই সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণে আমদানি মূল্য যথাসময়ে পরিশোধের জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি) থেকে ৫০০ মিলিয়ন মা.
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ১৪ ডিসেম্বর তারিখে জ্বালানি ও সার খাতে স্বল্পমেয়াদি ঋণ বিষয়ে আলোচনার জন্য ইন্টারন্যাশনাল ইসলামিক ট্রেড ফাইন্যান্স করপোরেশন (আইটিএফসি) এবং বাংলাদেশ সরকারের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল সৌদি আরবের জেদ্দায় এক সভায় মিলিত হয়। উক্ত সভায় আইটিএফসি থেকে জ্বালানি ও সাব খাতে মোট ২.৭৫০ মিলিয়ন মা.ডলারের স্বল্পমেয়াদি ঋণ গ্রহণের বিষয়ে উভয়পক্ষ প্রাথমিকভাবে সম্মত হয়। এই ঋণের মধ্যে সার আমদানির জনা ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণও থাকবে। সার খাতে উক্ত ঋণের মধ্যে ২০০ মিলিয়ন ডলার কনফার্মড ঋণ এবং অবশিষ্ট ৩০০ মিলিয়ন ডলার কন্টিনজেন্সি ঋণ। যেহেতু ঋণটি অনমনীয় প্রকৃতির সেহেতু এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের আওতাধীন নন-কনসেশনাল লোন কমিটির অনুমোদন প্রয়োজন হবে।
উল্লেখ্য, উক্ত ঋণ চুক্তি সম্পাদিত হলে সৃজিত প্রতিটি ঋণপত্রের (এলসি) বিপরীতে সার আমদানি মূল্য আইটিএফসি কর্তৃক তাৎক্ষনিক ডলারে পরিশোধ করা হবে মর্মে জানা গেছে। এভাবে বৈদেশিক মুদ্রায় যথাসময়ে রপ্তানীকারকদের বিল পরিশোধিত হলে সার আমদানির ক্ষেত্রে শিডিউল/এলসি বিপর্যয়ের আশংকা দুরীভূত হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ও এলসি স্থাপনকারী বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ডলারের উপর তাৎক্ষণিক চাপ হ্রাস পাবে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে টেকসই সার ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে প্রথম পর্যায়ে সীমিত আকারে আইটিএফসি এর ঋণ কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার বিষয়টি জেদ্দায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রাথমিকভাবে আলোচিত এবং কার্যবিবরণীভুক্ত হয়েছে যেখানে বাংলাদেশের পক্ষে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব স্বাক্ষর করেছেন।
তবে উক্ত ঋণ গ্রহণের বিষয়ে বিএডিসি ও বিসিআইসি উভয়েই নিম্নোক্ত নেতিবাচক মতামত দিয়েছে-
ক) বিএডিসি তাদের চিঠিতে উল্লেখ করেছে, আইটিএফসি ঋণের সম্ভাব্য সুদের হার ১৮.৫৩ শতাংশ (এসওএফআর-৪.৪৩+২শতাংশ, ফান্ড হোল্ডিং কস্ট=৩.২৫ শতাংশ+ডলার এক্সচেঞ্জ ফ্লাকচ্যুয়েশন লস=৮.৮৫ শতাংশ, যা স্থানীয় ব্যাংকের সুদের হারের চেয়ে প্রায় ৫.৫৩ শতাংশ বেশী। এ প্রেক্ষিতে বিসিআইসি আইটিএফসি থেকে বর্তমান কোন ঋণ গ্রহণ না করার জন্য কৃষি মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানিয়েছে। সুদ হার নির্ধারণের ক্ষেত্রে এসওএফআর-৪.৪৩+প্রিমিয়াম ২ শতাংশ আগের ধারাবাহিকতায় যুক্তিযুক্ত হলেও ফোন্ড হোল্ডিং কস্ট ৩.২৫ শতাংশ এবং ডলার একসচেঞ্জ ফ্লাকচ্যুয়েশন লস ৮.৮৫ শতাংশ কিভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়নি। ফলে ফান্ড হোল্ডিং কস্ট এবং ডলার এক্সচেঞ্জ ফ্ল্যাকচ্যুয়েশন লস এর প্রাক্কলনকে কোন নির্ভরযোগ্য ভিত্তি হিসাবে বিবেচনা করা যায় না।
বিএডিসি তাদের পত্রে জানিয়েছে যে, আইটিএফসি কর্তৃ প্রস্তাবিত ঋণের শর্তানুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণের অর্থ পরিশোধ করতে হবে। আইটিএফসি ঋণের বার্ষিক মার্কআপ/মুনাফার হার অপাতঃদৃষ্টিতে ৬.৪৩৭ শতাংশ হলেও প্রকৃত পক্ষে উক্ত ঋণের শর্তানুযারী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে হলে অর্থবিভাগ থেকে যথাসময়ে ভর্তুকির অর্থ প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে। বাণিজ্যিক ব্যাংকের এলটিআর ঋণের সুদের হায় ১২.৫০-১৩.০০ শতাংশ, যা আইটিএফসি কর্তৃক প্রস্তাবিত ঋণের সম্ভাব্য ব্যয়ের তুলনায় কম হবে মর্মে চিঠির মাধ্যমে জানিয়েছে। এর ফলে আইটিএফসি থেকে ঋণ গ্রহণ করে সারের আমদানি করা হলে ব্যয় তুলনামূলকভাবে বৃদ্ধি পাবে এবং এর ফলে ভর্তুকির পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে মর্মে বিএডিসি মতামত ব্যক্ত করেছে।
এখানে উল্লেখ্য যে, বর্ণিত ঋণের ব্যবস্থাপনা ও দায় পরিশোধ মূলত বিসিআইসি ও বিএডিসিকে করতে হবে। সেক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের মতামতের পূর্বে বিসিআইসি ও বিএডিসি থেকে উক্ত ঋণ গ্রহণের বিষয়ে নিঃশর্ত সম্মতি থাকতে হবে।
এঅবস্থায় আইটিএফসি থেকে সার আমদানির লক্ষ্যে ৫০০ মিলিয়ন মা. ডলার ঋণ গ্রহণের বিষয়ে অর্থ বিভাগের মতামত প্রদানের সুবিধার্থে নিম্নের বিষয়সমূহ জানতে চেয়ে কৃষি মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠানো হবে।
ক) বিসিআইসি কর্তৃক ফান্ড হোল্ডিং কস্ট ৩.২৫ শতাংশ এবং ডলার এক্সচেঞ্জ ফ্লাকচ্যুয়েশন লস ৮.৮৫ শতাংশ কিভাবে ধার্য করা হয়েছে এবং এর ভিত্তি কি তা অর্থ বিভাগকে অবহিত করার জন্য বলা যেতে পারে;
খ) কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের ভিত্তিতে ইআরডি আইটিএফসি কে অর্থায়নের প্রস্তাব করেছে যাতে আইটিএফসি সম্মত হয়েছে। কিন্তু বিসিআইসি ও বিএডিসি আইটিএফসি থেকে ঋণ গ্রহণ করতে আগ্রহী নয়। এমতাবস্থায়, এ ঋণ গ্রহণ করার যৌক্তিকতা রয়েছে কিনা তা কৃষি মন্ত্রণালয়ের কাঝ থেকে জানা যেতে পানে;
গ) আইটিএফসি থেকে ঋণ গ্রহণ করা না হলে সার আমদানির জন্য বিসিআইসি ও বিএডিসি অন্য কোনো উৎস থেকে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরায় নিশ্চিত করতে পারবে কিনা তা সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করে অর্থ বিভাগকে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হবে বলে জানা গেছে।
ঢাকা/টিপু
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব স আইস অন র ধ পর ম ণ ত ঋণ র ঋণ র স সরক র মত মত
এছাড়াও পড়ুন:
দুনিয়ায় প্রত্যেক মুসলিমকে যেসব পরীক্ষার মধ্য দিয়ে যেতে হবে
জীবন একটি পরীক্ষার ময়দান, যেখানে আমরা বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও কষ্টের মুখোমুখি হই। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি, জীবন ও ফসলের ক্ষতি দিয়ে। আর যারা ধৈর্য ধরে, তাদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)
এই পরীক্ষাগুলো প্রায়ই আমাদের হতাশ বা বিমর্ষ করে তুলতে পারে, কিন্তু ইসলাম আমাদের শেখায় যে এই কষ্টগুলো আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম এবং পরকালে চিরস্থায়ী সুখের পথ প্রশস্ত করে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এই দুনিয়ার জীবন তো কেবল ক্ষণস্থায়ী ভোগ, আর পরকালই হলো চিরস্থায়ী আবাস।’ (সুরা গাফির, আয়াত: ৩৯)
পরীক্ষার উদ্দেশ্যইসলামে পরীক্ষা বা কষ্টকে আল্লাহর রহমতের অংশ হিসেবে দেখা হয়। এগুলো আমাদের পাপ থেকে মুক্তি, আল্লাহর ওপর নির্ভরতা বৃদ্ধি, নিজেকে নম্র করা এবং তাঁর নৈকট্য লাভের মাধ্যম।
আমি অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, সম্পদের ক্ষতি, জীবন ও ফসলের ক্ষতি দিয়ে। আর যারা ধৈর্য ধরে, তাদের সুসংবাদ দাও।সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫পরীক্ষা আমাদের ধৈর্য ও বিশ্বাস যাচাই করে এবং এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে উচ্চ মর্যাদা লাভ করতে পারি। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যখনই তুমি আল্লাহর জন্য কিছু ত্যাগ করবে, আল্লাহ তা তোমার জন্য আরও উত্তম কিছু দিয়ে প্রতিস্থাপন করবেন।’ (মুসনাদে আহমদ, হাদিস: ২৩,০৭৪)
আরও পড়ুনযে ৪টি পরীক্ষা নবীজি (সা.)–এর জীবনকে দৃঢ়তা দিয়েছে২২ জুলাই ২০২৫পরীক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্যদুনিয়ার জীবন সাময়িক এবং এর কষ্টগুলো ক্ষণস্থায়ী। আমরা প্রায়ই দুনিয়ার সমস্যায়, যেমন অর্থনৈতিক সংকট, সম্পর্কের জটিলতা বা সামাজিক চাপ, এতটাই মগ্ন হয়ে পড়ি যে আমাদের মূল উদ্দেশ্য ভুলে যাই। পবিত্র কোরআন আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয়, ‘কিন্তু যে ব্যক্তি তার প্রভুর সামনে দাঁড়ানোর ভয় করেছে এবং নিজের নফসকে অবৈধ কামনা থেকে বিরত রেখেছে, তার জন্য জান্নাতই হবে আশ্রয়।’ (সুরা নাজিয়াত, আয়াত: ৪০–৪১)
ইবন কাইয়্যিম (রহ.) বলেছেন, ‘যদি আল্লাহ তাঁর বান্দার জন্য পর্দা তুলে দিতেন এবং তাকে দেখাতেন, কীভাবে তিনি তার জন্য সবকিছু পরিচালনা করেন, তবে তার হৃদয় আল্লাহর প্রতি ভালোবাসায় গলে যেত এবং কৃতজ্ঞতায় টুকরা টুকরা হয়ে যেত। তাই যদি দুনিয়ার কষ্ট তোমাকে ক্লান্ত করে, তবে দুঃখ করো না। হয়তো আল্লাহ তোমার দোয়ার কণ্ঠ শুনতে চান।’ (ইবন কাইয়্যিম, আল–ফাওয়ায়িদ, পৃষ্ঠা ১২৮, বৈরুত: দারুল কুতুব আল–ইলমিয়্যাহ, ১৯৯৬)
পরীক্ষা আমাদের ধৈর্য ও বিশ্বাস যাচাই করে এবং এর মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে উচ্চ মর্যাদা লাভ করতে পারি।পরীক্ষা আমাদের আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়। এটি আমাদের নম্র করে, আমাদের পাপমুক্তি ঘটায় এবং আল্লাহর ওপর নির্ভরতা বাড়ায়। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘দুনিয়ায় যে ব্যক্তি সবচেয়ে বেশি কষ্ট ও পরীক্ষার মধ্য দিয়ে গেছে, তাকে জান্নাতে একবার ডুবিয়ে দেওয়া হবে এবং জিজ্ঞাসা করা হবে, ‘হে আদম সন্তান, তুমি কি কখনো কোনো কষ্ট দেখেছিলে? তুমি কি কখনো দুঃখ অনুভব করেছিলে?’ সে বলবে, ‘না, হে আমার রব! আমি কখনো কোনো কষ্ট দেখিনি, কখনো কোনো দুঃখ অনুভব করিনি।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস নম্বর–২৮০৭)
আরও পড়ুনবালকের ঈমানের পরীক্ষা ও বাদশাহের নির্মম পরিণতি০৪ মে ২০২৪আল্লাহর পরিকল্পনায় ভরসাপরীক্ষার সময় মনে রাখতে হবে যে আল্লাহর পরিকল্পনা আমাদের পরিকল্পনার চেয়ে উত্তম। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘হয়তো তোমরা এমন কিছু অপছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর এমন কিছু পছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জানো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৬)
এই আয়াত আমাদের শেখায় যে কষ্টের পেছনে আল্লাহর একটি বৃহত্তর উদ্দেশ্য রয়েছে।
হয়তো তোমরা এমন কিছু অপছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য কল্যাণকর। আর এমন কিছু পছন্দ করো, যা তোমাদের জন্য ক্ষতিকর। আল্লাহ জানেন, আর তোমরা জানো না।সুরা বাকারা, আয়াত: ২১৬আরেকটি হাদিসে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি পরকালের জন্য চিন্তিত থাকে, আল্লাহ তার বিষয়গুলো সহজ করে দেবেন, তার হৃদয়ে তৃপ্তি দেবেন এবং দুনিয়া তার কাছে আসবে, যদিও সে তা অপছন্দ করে।’ (ইবন মাজাহ, হাদিস: ৪১০৫)
পরীক্ষায় ধৈর্য ও দোয়াপরীক্ষার সময় ধৈর্য ধরা এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা করে, তিনি তার জন্য যথেষ্ট।’ (সুরা তালাক, আয়াত: ৩) দোয়ার মাধ্যমে আমরা আমাদের হৃদয়ের কথা আল্লাহর কাছে প্রকাশ করি এবং তাঁর রহমতের জন্য আশ্রয় প্রার্থনা করি।
ইবন কাইয়্যিম (রহ.) বলেছেন, ‘যদি দুনিয়ার কষ্ট তোমাকে ক্লান্ত করে, তবে সিজদায় তোমার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করো এবং জেনে রাখো, আল্লাহ কখনো ভোলেন না।’ (আল–ফাওয়ায়িদ, পৃষ্ঠা ১৩০, বৈরুত: দারুল কুতুব আল–ইলমিয়্যাহ, ১৯৯৬)
আমরা যদি আল্লাহকে আমাদের হৃদয়ের কেন্দ্রে রাখি, তবে কোনো পরীক্ষাই আমাদের ভেঙে দিতে পারবে না।জীবনের পরীক্ষাগুলো আমাদের আল্লাহর কাছাকাছি নিয়ে যায়, আমাদের হৃদয়কে বিশুদ্ধ করে এবং পরকালে জান্নাত লাভের পথ প্রশস্ত করে। দুনিয়ার কষ্ট ক্ষণস্থায়ী, কিন্তু আল্লাহর ভালোবাসা ও রহমত চিরস্থায়ী।
আমরা যদি আল্লাহকে আমাদের হৃদয়ের কেন্দ্রে রাখি, তবে কোনো পরীক্ষাই আমাদের ভেঙে দিতে পারবে না; বরং নবীজি (সা.)–এর শিক্ষা ও ধৈর্য, দোয়া এবং আল্লাহর ওপর ভরসার মাধ্যমে আমরা জীবনের প্রতিটি পরীক্ষায় বিজয়ী হতে পারব।
আরও পড়ুনত্যাগের পরীক্ষা, সফলতার উদ্যাপন০১ আগস্ট ২০২০