লামায় ভূমি রক্ষা কমিটির নেতা রিংরং ম্রোকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
Published: 24th, February 2025 GMT
বান্দরবানের লামার সরইয়ে ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা রিংরং ম্রোকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বান্দরবান জেলা শহর ও চট্টগ্রামে বিক্ষোভ হয়েছে। একই সঙ্গে রিংরংসহ নিরীহ জুমচাষি ম্রোদের বিরুদ্ধে করা সব মিথ্যা মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়েছে।
জানা গেছে, গত শনিবার রাতে পুলিশ লামা উপজেলা সদর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে সরই ইউনিয়নের লাংকমপাড়া থেকে রিংরং ম্রোকে গ্রেপ্তার করে। থানায় নিয়ে যাওয়ার পর তাঁকে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেডের দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
বেলা দুইটায় বান্দরবান প্রেসক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএসএ) সমাবেশটি আয়োজন করে। এতে বক্তব্য দেন মানবাধিকারকর্মী জন ত্রিপুরা, মারমা স্টুডেন্ট কাউন্সিলের সভাপতি উক্যসিং মারমা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা এডিশন চাকমা, বিএমএসএ সাধারণ সম্পাদক রেংলং ম্রো। সভাপতিত্ব করেন বিএমএসএ সভাপতি তনয়া ম্রো।
চট্টগ্রামেও প্রতিবাদএদিকে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের করা মামলায় ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা রিংরং ম্রোকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে চট্টগ্রামেও বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে তিন সংগঠন। গতকাল নগরের চেরাগী পাহাড় মোড়ে গণতান্ত্রিক যুব ফোরাম, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ যৌথভাবে এই কর্মসূচি পালন করে। সমাবেশে ম্রো ও ত্রিপুরাদের নামে করা সব মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, লামা সরইয়ে রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃক স্থানীয় ম্রো ও ত্রিপুরাদের ৪০০ একর ভূমি বেদখলের ষড়যন্ত্র চলছে কয়েক বছর ধরে। এরই অংশ হিসেবে মিথ্যা মামলা দিয়ে ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির নেতা রিংরং ম্রোকে ২২ ফেব্রুয়ারি গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
রাবার ইন্ডাস্ট্রিজের কর্তৃপক্ষ স্বৈরাচার শেখ হাসিনার আমলে ম্রো ও ত্রিপুরাদের জায়গা দখল করতে নির্বিচার জুম ভূমি-বাঁশঝাড় পুড়িয়ে দিয়ে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশ ধ্বংস করে দেয় বলে সমাবেশে অভিযোগ করেন বক্তারা।
পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের চট্টগ্রাম নগর শাখার নেতা অংচাহ্লা মার্মার সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অমল ত্রিপুরা, হিল উইমেন্স ফেডারেশনের চট্টগ্রাম নগর শাখার দপ্তর সম্পাদক জেসি চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নগরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শুভ চাক প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ব র ইন ড স ট র কম ট র ন ত
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি